বারাসত, 16 নভেম্বর: প্রতীক্ষার অবসান ৷ আজ থেকে চালু হল বারাসত মেডিক্যাল কলেজের পঠনপাঠন (Barasat Medical College Academic Session Starts Today) ৷ চলতি শিক্ষাবর্ষে প্রায় 100 জন ছাত্র-ছাত্রীকে নিয়ে শুরু হতে চলেছে এই মেডিক্যাল কলেজের পঠনপাঠন ৷ তার অধিকাংশ আসন ইতিমধ্যে পূরণ হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷
100 জনের মধ্যে আবার স্থানীয় 12 জন পড়ুয়া বারাসত মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সুযোগ পাবেন ৷ একদিকে পঠনপাঠনের ব্যবস্থা ৷ অন্যদিকে, মেডিক্যাল কলেজের পরিকাঠামোর উন্নয়ন ৷ এর ফলে হাসপাতালের সামগ্রিক পরিষেবা আরও উন্নত হবে বলেই আশা করছেন রোগী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা ৷
উত্তর 24 পরগনার সদর শহর বারাসত হওয়ায় স্বভাবতই এই হাসপাতালে রোগীর চাপ বরাবর বেশি ৷ আউটডোর এবং ইনডোর মিলিয়ে প্রতিদিন কয়েক লক্ষ মানুষ পরিষেবার জন্য আসেন বারাসত হাসপাতালে ৷ উত্তর 24 পরগনা ছাড়াও আশপাশের বহু জেলা থেকেও সেখানে রোগীরা আসেন চিকিৎসা করাতে ৷ নিয়মিত রোগীর চাপ বাড়তে থাকায় হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৷ ঠিক হয়, হাসপাতালে তৈরি করা হবে একটি মেডিক্যাল কলেজ ৷
রাজ্য সরকারের তরফে সেই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় 2019 সালে ৷ সেই মতো শুরু হয় মেডিক্যাল কলেজ তৈরির পরিকাঠামোর কাজ ৷ করোনা আবহে প্রথম দিকে ঢিলেঢালা ভাবে কাজ চললেও, পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে গতি আসে কাজে ৷ এখন সেই মেডিক্যাল কলেজের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে ৷
মেডিক্যাল কলেজের জন্য হাসপাতাল চত্বরেই মোট সাতটি বহুতল তৈরি করা হয়েছে ৷ যেখানে অ্যাকাডেমিক ভবনের পাশাপাশি থাকছে ছাত্রছাত্রীদের জন্য হস্টেল ৷ তেমনই সেখানে থাকছে সাধারণ কর্মী এবং নার্সিং স্টাফদের জন্য কোয়াটার ও অত্যাধুনিক পরিকাঠামো-সহ আউটডোর কমপ্লেক্স ৷ পড়াশোনার পাশাপাশি পড়ুয়াদের জন্য ব্যবস্থা থাকছে সুবিশাল একটি লাইব্রেরি ৷
আরও পড়ুন: থ্যালাসেমিয়ার সঙ্গে লড়ে নিট উত্তীর্ণ মেদিনীপুরের ইন্দ্রাণী
এই বিষয়ে মেডিক্যাল কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার তথা চিকিৎসক সুব্রত মণ্ডল বলেন, "পড়ুয়াদের অ্যাকাডেমিক বিষয়টি তো থাকছেই ৷ সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও আমূল পরিবর্তন হতে চলেছে ৷ সিসিইউতে 12টি শয্যা বাড়িয়ে 50 করা হয়েছে ৷ এছাড়া নেফ্রলজি, কার্ডিয়োলজি, প্লাস্টিক সার্জারির মতো প্রতিটি বিভাগে পর্যাপ্ত চিকিৎসক থাকবে এবার থেকে ৷ 600 শয্যার এই মেডিক্যাল কলেজে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, চিকিৎসক এবং নার্স যেমন থাকছেন ৷ তেমনই এমএনসি-র গাইডলাইন মেনে যা করণীয়, তা সবই করা হবে বারাসত হাসপাতালে ৷ প্রতি শিক্ষাবর্ষে 100 জন করে পড়ুয়া ভরতির সুযোগ পাবেন মেডিক্যাল কলেজে ৷ এর ফলে কয়েক কোটি মানুষ উপকৃত হবেন, বলে আশাবাদী অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার ৷
মেডিক্যাল কলেজের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ খতিয়ে দেখতে এসে সম্প্রতি, হাসপাতালের ভূয়সী প্রশংসা করতে শোনা গিয়েছিল রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন তথা তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে ৷ তাঁর মতে, "চিকিৎসক, নার্স, কর্মী সবকিছু ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছে ৷ শুধু বাকি পঠনপাঠন শুরু হওয়ার ৷ এর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশেষভাবে ধন্যবাদ বারাসতবাসীর তরফে ৷"