ব্যারাকপুর, 24 মে : ব্যারাকপুরে বিরিয়ানির দোকানে গুলিকাণ্ডে পুলিশের জালে আরও এক দুষ্কৃতী । ধৃতের নাম রাহুল বর্মা । গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার গভীর রাতে কাঁকিনাড়া থেকে পাকড়াও করা হয় ওই দুষ্কৃতীকে (Barrackpore Shooting Incident) । এই ঘটনায় আগেই অভিষেক ঝাঁ নামে এক দুষ্কৃতী ধরা পড়েছিল পুলিশের হাতে । এবার আরও এক দুষ্কৃতী ধরা পড়ায় ব্যারাকপুর গুলিকাণ্ডে গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল দুই । তবে গুলি চালানোর ঘটনায় মূল অভিযুক্তরা এখনও অধরা বলেই জানা গিয়েছে ।
তদন্তকারীদের সন্দেহ, মূল অভিযুক্তরা ভিনরাজ্যে আত্মগোপন করে থাকতে পারে । সেজন্য পুলিশের একটি দলও তৈরি রাখা হয়েছে ভিনরাজ্যে পাড়ি দেওয়ার জন্য । তার আগে অবশ্য মোবাইলের টাওয়ার লোকেশনের সূত্র ধরে বিষয়টি নিশ্চিত হতে চাইছে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ । যদিও তদন্তের স্বার্থে এই বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ পুলিশ কর্তারা ।
আরও পড়ুন : Barrackpore Shooting Incident : ব্যারাকপুরে বিরিয়ানির দোকানে চলল গুলি, আহত 2
বিরিয়ানির দোকানে গুলি চালানোর ঘটনার পর থেকেই শুটারদের সন্ধানে হন্যে হয়ে খোঁজ চালাচ্ছেন ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দারা । এজন্য পুলিশের টিম বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে ব্যারাকপুর, বারাসত, মধ্যমগ্রাম-সহ একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযানে নেমেছিল । সেই তল্লাশিতেই আপাতত দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয় তদন্তকারী অফিসারেরা । গুলিকাণ্ডের পর দুষ্কৃতীরা বাইকে চেপে ব্যারাকপুরের দিক থেকে বারাসতের দিকে পালিয়েছিল বলে জানতে পারে পুলিশ । বিরিয়ানির দোকান এবং তার আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে সেই বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল । সেই কারণে শুটারদের হদিশ পেতে প্রথম থেকেই তদন্ত প্রক্রিয়ায় কোনও খামতি রাখা হচ্ছিল না পুলিশের তরফ থেকে ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন অর্থাৎ 16 মে যে তিনজন শুটার বাইকে এসে বিরিয়ানির দোকান লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় তাদের মধ্যে রয়েছে অনীশ ঝাঁ নামে এক দুষ্কৃতীও । যিনি আবার ধৃত অভিষেকের ভাই । ঘটনার দিন অভিষেক বিরিয়ানির দোকানের তথ্য সরবরাহ করেছিল বলে তাকে জেরা করে ইতিমধ্যে জানতে পেরেছে তদন্তকারীরা । অনীশ সেই তথ্য পেয়েই বাকি দুই শুটারকে সঙ্গে নিয়ে বিরিয়ানির দোকান লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল বলে একপ্রকার নিশ্চিত ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দারা । বাকি দু'জন শুটারের নামও ইতিমধ্যে জানতে পারা গিয়েছে । তদন্তের স্বার্থে সেই দু'জনের নাম এখনও প্রকাশ্যে আনেননি তদন্তকারী অফিসারেরা ।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা তিনজন নয়, ঘটনার সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে । সেই কারণে সবদিক খতিয়ে দেখে তদন্তে জাল গোটানোর চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ কর্তারা ।
এদিকে গুলিকাণ্ডের ঘটনার পরপরই তোলা চেয়ে হুমকি ফোন ও মোবাইলে অশ্লীল মেসেজ আসার কথা জানিয়েছিল বিরিয়ানির দোকানের মালিক বাপি দাস । এমনকী হুমকি ফোন আসার আগে বাড়িতে হামলা এবং ভাঙচুরের অভিযোগও করা হয়েছিল ব্যবসায়ীর পরিবারের তরফে । তার সঙ্গে বিরিয়ানির দোকানে গুলিকাণ্ডের কোনও যোগসূত্র রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা । তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে ব্যবসায়ীর কোনও শত্রুতার জেরেই এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে ৷
অন্যদিকে, গুলি চালানোর ঘটনায় ধৃত রাহুলকে নিজেদের হেফাজতে নিতে মঙ্গলবার তাকে ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে পুলিশ ।