দত্তপুকুর, 11 অক্টোবর: কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের বংশধর শিবকুমার রায় সূচনা করেছিলেন এই দুর্গাপুজোর ৷ দত্তপুকুর শিবালয়ের বুড়ো মায়ের দালান 353 বছরে পদার্পণ করল ৷ তাই দত্তপুকুরের বুড়ো মায়ের পুজো শুরু হওয়ার পর এলাকার বাকি পুজো আরম্ভ হয় ৷ আবার বিসর্জনের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম ৷ বুড়ি মায়ের নিরঞ্জনের পর অন্য প্রতিমা বিসর্জন দেওয়াই রীতি ৷ এই পুজোর মাহাত্ম্যের জন্য দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা এখানে আসেন ৷
উত্তর 24 পরগনায় দত্তপুকুর শিবালয়ের বুড়ো মায়ের পুজোকে এক ডাকে সবাই চেনে ৷ কথিত আছে রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের বংশধর শিবকুমার রায় এই অঞ্চলে নৌকা বিহারে বেরিয়েছিলে ।
শোনা যায়, শিবকুমার রায় স্বপ্নাদেশ পান মাকে প্রতিষ্ঠা করার ৷ প্রথমে একটি তাল পাতা দিয়ে একটি মন্দির তৈরি হয় ৷ আজ থেকে প্রায় 353 বছর আগের কথা ৷ বর্তমানে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের বংশধর রায় বাড়ির চার শরিক এই পুজো করছেন ৷ এই দীর্ঘ সময়ে মাঝেমধ্যে সংসারে অভাব-অনটন এসেছে ৷ তাও আজ পর্যন্ত কখনও পুজো বন্ধ হয়নি ৷ এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য, দু'বেলা অন্ন ভোগ ৷
তবে দশমীর দিনই নিরঞ্জন করা হয় প্রতিমা ৷ বৃহস্পতিবার হোক বা শনিবার, দশমীর দিনই বিসর্জন হয় বুড়ি মায়ের প্রতিমা ৷ বুড়ো মায়ের আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয়, অন্য দুর্গা প্রতিমায় মায়ের দশ হাত বাইরে থাকে ৷ এদিকে বুড়ো মায়ের দু'টি হাতই বাইরে থেকে দেখা যায় ৷ বাকি আটটি হাত চুল দিয়ে ঢাকা থাকে ৷
এই সিংহবাহিনীর দেহের অংশ সিংহ ও ঘোড়ার মিলিত রূপ থাকে ৷ থাবা সিংহের মতো হলেও, দেহ ঘোড়ার মতো ৷ চণ্ডী রূপে পূজিত হন মা ৷ দালানে বসেই মূর্তি তৈরি করেন শিল্পীরা ৷ মায়ের পুজোর সঙ্গে জড়িত শিল্পীরা, পুরোহিতরা বংশপরম্পরায় এই কাজ করে আসছে ৷ মহালয়ার আগে কৃষ্ণপক্ষের নবমীর দিন থেকে শুক্লপক্ষের দশমী পর্যন্ত মোট 17 দিন ধরে পুজো হয় ৷
আরও পড়ুন: একদিকে চিত্রশিল্পী অন্যদিকে ভাস্কর, শিল্পের দুই ধারাতেই সাবলীল মালদার এই মৃৎশিল্পী