ব্যারাকপুর, 21 নভেম্বর: রেশন দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী ও বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক । ধৃত মন্ত্রীকে জেরা করে রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় যখন একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য ইডির তদন্তকারীদের হাতে উঠে আসছে, ঠিক তখনই আবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এল উত্তর 24 পরগনার সোদপুরের ঘোলা থেকে ।
অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই রেশন দোকান থেকে সামগ্রী পাচ্ছেন না গ্রাহকরা । শুধু তাই নয়, রাতের অন্ধকারে সেই রেশন সামগ্রী অন্যত্র পাচার হয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ । অর্থাৎ একই রেশন দোকানে দু'রকম ছবি । সকালে এক রকম । রাতে অন্যরকম । একদিকে সকালে গ্রাহকরা রেশন পাচ্ছেন না । অন্যদিকে অন্ধকার নামতেই পাচার হয়ে যাচ্ছে রেশন সামগ্রী ৷ পাচারের সেই ভিডিয়োও সামনে এসেছে ইতিমধ্যে । তবে, পাচারের অভিযোগ এড়িয়ে গেলেও রেশন সামগ্রী নিয়ে যে গ্রাহকরা সমস্যায় পড়েছেন, তা মেনে নিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর ।
সোদপুরের ঘোলা সি ব্লক এলাকার 398 নম্বর রেশন দোকান । অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই ওই এলাকায় রেশন সামগ্রী পাচ্ছেন না স্থানীয় মানুষজন । এলাকার গ্রাহকেরা রেশন নেওয়ার জন্য লাইন দেন ঠিকই । এন্ট্রিও করেন কার্ডের । অথচ নিয়মিত রেশনের সামগ্রী পান না । এমনই অভিযোগ অধিকাংশ গ্রাহকের । শুধু তাই নয়, অধিকাংশ সময় দোকান বন্ধ থাকায় রেশন না পেয়ে খালি হাতেই ফিরতে হয় এলাকার লোকজনকে । রেশন ডিলার রাহুল সাহার বিরুদ্ধে এমনই ভুরিভুরি অভিযোগ ওঠায় মঙ্গলবার সকালে ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রাহকরা । চলে বিক্ষোভও । খবর পেয়ে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর শম্ভু চন্দ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন । এরপর, বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ।
এদিকে, ঘটনা ঘিরে সাময়িক উত্তেজনা তৈরি হলে পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে দোকান থেকে পালিয়ে যান রেশন ডিলার রাহুল সাহা, এমনটাই দাবি স্থানীয়দের । দোকানের ভিতর রেশনের মালপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকলেও তাঁর কোনও দেখা মেলেনি সেখানে । আর তাতেই দুয়ে দুয়ে চার করতে শুরু করেছেন বিক্ষোভকারী গ্রাহকদের একাংশ । এই বিষয়ে শিপ্রা সরকার নামে এক গ্রাহক বলেন, "প্রতি মাসের রেশন ঠিকমতো মেলে না । একমাসের রেশন ডিউ রেখে আগের মাসের রেশন দেওয়া হয় । আমারই তো দু'মাসের রেশন বকেয়া হয়ে রয়েছে । কী আর বলব !"
দেবব্রত আচার্য নামে অপর এক গ্রাহক বলেন, "রেশন দোকানে এসে আগে নাম নথিভুক্ত করে ডিউ স্লিপ দিয়ে জানানো হয় পরে রেশন দেওয়া হবে । বহুবার ঘুরে তারপরই মেলে রেশন সামগ্রী । আজকেই তো রেশন নিতে এসে দেখছি দোকানে কেউ নেই । ভুক্তভোগী হতে হয় গ্রাহকদের ৷"
অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর শম্ভু চন্দ বলেন, "প্রায়শই রেশন নিতে এসে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের । অনিয়মিতভাবে রেশন পাচ্ছেন তাঁরা । বিষয়টি এ দিন গ্রাহকেরা জানান আমার কাছে । তাঁদের গণস্বাক্ষর করে অভিযোগ করতে বলেছি । সেই অভিযোগ খাদ্য দফতরে জানানো হবে ৷"
আরও পড়ুন: