দত্তপুকুর, 19 জানুয়ারি: রাস্তা সারাইয়ের জন্য গত শনিবার বিক্ষোভ দেখিয়ে ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা (Saibna Temple) ৷ ঘটনায় 'দিদির দূত' হিসাবে উপস্থিত তৃণমূল নেতা সপাটে চড় মারেন স্থানীয় বিজেপি নেতা সাগর বিশ্বাসকে ৷ এরপরেই ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে তড়িঘড়ি মন্দির সংলগ্ম রাস্তা সারাইয়ের উদ্যোগ প্রাশাসনের ৷ প্রাথমিক পর্যায়ের রাস্তার সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে উত্তর 24 পরগনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৷
গত তিন বছরে বারবার বলেও হয়নি মন্দির চত্বরের বেহাল 50 মিটার রাস্তার সংস্কার ! অথচ বেহাল সেই রাস্তায় এবার সংস্কার হতে চলেছে ৷ রীতিমতো চাপে পড়ে বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি শেষে পূরণ করতে চলছে উত্তর 24 পরগনা জেলা প্রশাসন । শুধু তাই নয়, ঐতিহ্যবাহী সাইবনা নন্দদুলাল মন্দিরকে ঘিরে আগামিদিনে ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে । সেই বিষয়ে প্রশাসনের তরফে শীঘ্রই প্রস্তাবও যেতে পারে রাজ্য সরকারের কাছে (administration is active in repairing the dilapidated road of saibna templ) । জেলা প্রশাসন যেমন তৎপর হয়েছে । প্রাথমিক পর্যায়ে বিডিও, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান-সহ পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা সাইবনা এলাকায় গিয়ে মন্দিরের সামনের রাস্তার মাপজোপ ও করে গিয়েছেন । মন্দিরের উন্নয়নের দিকটাও খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছেন । যার ফলে খুশির ছোঁয়া স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ।
এই বিষয়ে নন্দদুলাল মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য সন্তোষ বন্দোপাধ্যায় বলেন, "মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন মন্দিরের সামনের রাস্তার সংস্কার হবে । সেই আশ্বাস পূরণ হচ্ছে শুনে ভালো লাগছে । তবে, স্থানীয় পঞ্চায়েত আগে উদ্যোগ নিলে ভালো হত । দেরি হলেও দীর্ঘদিনের দাবি মিটতে চলেছে । এর চেয়ে ভালো আর কিছু হতে পারে না।"
এদিকে, যাঁকে চড় মারার পর প্রশাসনের এই তৎপরতা সেই বিজেপি নেতা সাগর বিশ্বাস বলেন, "আমাকে চড় মারার পর প্রশাসনের যদি বোধগম্য হয়, তাতে আমি খুশি । যে রাস্তা তিন বছর আগে হওয়া উচিত ছিল, সেই রাস্তায় এখন তিনদিনের মধ্যে মাপজোক করে তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে । ফলে বোঝাই যাচ্ছে, আমার প্রতিবাদের জায়গা ঠিক ছিল । আর ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র হলে তো সবার খুশি হওয়াটা স্বাভাবিক । তবে, সেটা যেন কথায় থেকে না-যায়, বাস্তবায়িত হয় । ভোটের বৈতরণী পার হওয়ার জন্য শুধু যেন মানুষকে বোকা বানানো না-হয় । সেটা যদি আবার হয় তাহলে আমার প্রতিবাদ চলবে । মানুষকেও এগিয়ে আসতে বলব ।"
আরও পড়ুন: 'সুরক্ষা কবচ' চাইতে গিয়ে 'দিদির দূতে'র হাতে চড় খেলেন যুবক !
অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী সবসময় চেয়ে এসেছেন ধর্মীয় স্থানগুলিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হোক। সেই মতো আমডাঙা এবং সাইবনা এই দুটি প্রাচীন মন্দিরকে ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যাতে মানুষ ধর্মীয় স্থানগুলোকে বেশি করে চিনতে পারেন। এর সঙ্গে চড়কাণ্ডের কোনও যোগ নেই ।"
প্রসঙ্গত, শনিবার সাইবনা এলাকাতেই 'দিদির দূত'-হয়ে এসেছিলেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী ও মধ্যমগ্রামের বিধায়ক রথীন ঘোষ । সেখানেই মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে নিজেদের দাবিদাওয়া এবং অভাব-অভিযোগের কথা শোনান স্থানীয় কয়েকজন মহিলা । তারই মধ্যে এলাকার অনুন্নয়ন ও মন্দিরের সামনের রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে মন্ত্রী রথীন ঘোষের কাছে অভিযোগ জানাতে গিয়ে দিদির দূতেদের হাতে আক্রান্ত হন স্থানীয় যুবক তথা বিজেপি নেতা সাগর বিশ্বাস । অভিযোগ, কর্মসূচি চলাকালীন আচমকাই সাগরের গালে সপাটে চড় কষিয়ে দেন তৃণমূল কর্মী শিবম রায় । সেই দৃশ্য ছড়িয়ে পড়তেই বিতর্ক দানা বাঁধে । বিতর্কের রেশ গড়িয়েছে থানা পর্যন্ত । এমনকী এই বিষয়ে জলঘোলাও কম হয়নি রাজনীতির অন্দরে ।