বারাসত, 3 মে : মঞ্চে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যুব তৃণমূল সভাপতি। কিন্তু তাঁর সভাতেও দর্শকাসন ফাঁকা। সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়েও যা ভরানো গেল না। ছবিটা উত্তর 24 পরগনার বারাসতের।
গতকাল বারাসত শতদল সংঘের মাঠে কাকলি ঘোষ দস্তিদারের সমর্থনে সভা ছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। টাকি রোডের পাশে শতদল সংঘের মাঠে অভিষেকের জনসভা ভরিয়ে দিতে হোর্ডিং পোস্টারে ছয়লাপ করে দেওয়া হয়েছিল। দুপুর দুটো নাগাদ অভিষেকের জনসভা শুরু হওয়ার কথা ছিল। সেসময় মাঠে লোক মেরে-কেটে 100-150 । তারমধ্যে পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ারই বেশি । আড়াইটে নাগাদ একদল মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার ঢুকল মাঠে । এর মধ্যে অনেকেই সাধারণ পোশাক পরে । তাঁরা বসে পড়লেন মহিলা দর্শকাসনে ।
পৌনে তিনটে নাগাদ অভিষেকের হেলিকপ্টার নামে বারাসত বিদ্যাসাগর ক্রীড়াঙ্গনে। উদ্যোক্তারা তখন রাস্তার পাশে দাঁড়ানো কর্মীদের উদ্দেশে মাইকে ঘোষণা করছেন, আপনারা মাঠে বসুন। সবাই মাঠে বসলেন। তাতেও দু'হাজারি মাঠের পুরুষ দর্শক আসনের চার আনাও ভরল না। চুপিসাড়ে নেতারা বলে দিলেন, ফাঁকা ফাঁকা বসতে। কিছুটা ভরাট দেখায় যাতে। অভিষেক সভাস্থলে পৌঁছালেও মঞ্চে উঠলেন না। মাঠ যে ফাঁকা ! প্রায় ২৫ মিনিট পরে তিনি মঞ্চে উঠলেন। তাঁকে সংবর্ধনার সময়ও নাম ডেকে সব কর্মীদের পাওয়া যায়নি। অন্য কর্মীরা গিয়ে স্টেজ মেক আপ দিয়েছেন।
বক্তব্যের সময় অভিষেকের মধ্যে সেই জোশ দেখা যায়নি।
অভিষেকের সভায় কত দর্শক ছিল ? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার প্রথম সারির এক তৃণমূল নেতা বলেন, "মাঠে 2000 লোক ধরে। অর্ধেক ভরেছিল। আর কী বলব ?" পাশে দাঁড়ানো দলের এক যুবকর্মী বললেন, "দাদা মিডিয়ার সামনে এসব বলছেন কেন?"
জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক বললেন, "200 বর্গফুটের ব্লক ধরে আমরা হিসেব করি। সেই হিসেবে উপস্থিতি হাজার খানেক হতে পারে।"
দর্শক আসনে তো বহু সিভিক ভলান্টিয়ারও রয়েছেন? প্রশ্ন শুনে ওই পুলিশকর্তা কেবল মুচকি হাসলেন। উত্তর দিলেন না।
বারাসত পৌরসভায় ৩৫টি ওয়ার্ড। বুথ সংখ্যা ২৫৫। প্রত্যেক বুথে ভোট পরিচালনার জন্য গড়ে ১৫ জনের একটি করে কমিটি গঠিত হয়েছে। সেই হিসেব ধরলে সাধারণ কর্মী বাদ দিয়ে শুধু বুথ কমিটির সদস্যরা মাঠে এলে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার কর্মী মাঠে থাকার কথা। তাহলে দু'হাজারি মাঠ ভরল না কেন ? রাজনৈতিক মহলের মতে, হেলিকপ্টার ভাড়া করে আসা অভিষেকের ফাঁকা সভা তৃণমূলের ভোট ম্যানেজারদের রক্তচাপ এবার বাড়িয়ে তুলবে।