বারাসত, 16 মে : আমডাঙার জোড়া খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশকর্মী অবশেষে আত্মসমর্পণ করল । আজ তার কর্মস্থল বিধাননগর কমিশনারেটে গিয়েই সে আত্মসমর্পণ করে । স্ত্রীর শ্লীলতাহানির বদলা নিতেই নাকি দুই ভাইকে গুলি করে খুন করেছে বলে জেরায় সে জানিয়েছে । এদিন বিকেলে বারাসতের পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা জানান ।
গতরাতে আমডাঙার তেঁতুলবেড়িয়া ঠাকুরতলায় অরূপ মণ্ডল ও সুমন্ত মণ্ডল নামে দুই ভাইকে গুলি করে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল পুলিশ কনস্টেবল সন্তোষ পাত্রের বিরুদ্ধে । গুলিতে আরও এক যুবক জখম হয়েছে । সন্তোষ বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক পদস্থ অফিসারের দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করে । ঘটনার পরই সে গা ঢাকা দেয় । আজ দুপুরে কর্মস্থল বিধাননগর কমিশনারেটে গিয়ে সে আত্মসমর্পণ করে । পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় ।
খুনের প্রত্যক্ষ কারণ এখনও জানা যায়নি । তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, অরূপের স্ত্রীকে সন্তোষ উত্ত্যক্ত করত । তা নিয়ে বচসা হয় । তারপরই সার্ভিস রিভলবার থেকে সন্তোষ গুলি চালিয়ে অরূপ ও তার ভাই সমন্তকে খুন করে । তবে, পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে অভিযুক্ত সন্তোষের গ্রেপ্তারের খবর জানানোর সময় বলেন, "সন্তোষ জেরায় জানিয়েছে, তার স্ত্রীর শ্লীলতাহানির বদলা নিতেই দুই ভাইকে খুন করেছে । আদৌ সে সত্যি বলছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।"
আমডাঙার জোড়া খুনে অভিযুক্ত সন্তোষ কে? স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, তেঁতুলবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সন্তোষ চিরকালই এলাকায় দাপট দেখাত । বাবা কার্তিক পাত্র আগে ভ্যান চালাতেন । এখন অবশ্য তিনি মাঠে চাষবাস করেন । বাড়িতে বৃদ্ধা মাও রয়েছেন । বিয়ের পর থেকে সন্তোষ স্ত্রী ও শিশুপুত্রকে নিয়ে আলাদা হয়ে যায় । বছর সাতেক আগে সে পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি পায় । তারপর থেকে পাড়ায় তার দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে যায় । প্রায়ই সার্ভিস রিভলবার সে বাড়িতে নিয়ে আসত । কোমরে সেই রিভলবার নিয়েই ঘুরত । কথায় কথায় কোমর থেকে রিভলবার বের করে হুমকি দিত । গতকাল রাতেও সে সেই রিভলবার হাতে নিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল । তারপর সেই সার্ভিস রিভলবার থেকে পরপর গুলি । তাতে দু'জনের মৃত্যু । প্রশ্ন উঠেছে, একজন কনস্টেবল দিনের পর দিন সার্ভিস রিভলবার নিয়ে বাড়ি চলে আসে কী করে?