বারাসত,6 ডিসেম্বর : প্রেমিকার মৃত্যুর 8 মাসের মাথায় আত্মঘাতী হলেন যুবক । কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি প্রেমিকার মৃত্যু । মনের কষ্ট আর চেপে রাখতে না পেরে দিন যত যাচ্ছিল ততই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছিলেন তিনি । শেষে প্রেমিকার মৃত্যুর 8 মাসের মাথায় সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করলেন যুবকও । পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম অরিৎ দাস (27) । মর্মান্তিক ঘটনাটি বারাসত পৌরসভার 10 নম্বর ওয়ার্ডের অরবিন্দ পল্লি এলাকার ।
আজ দুপুরে নিজের ঘর থেকেই অরিতের নিথর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ । পরে, দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বারাসত হাসপাতালে পাঠানো হয় । প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি । তাঁর ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়েছে । তাতে অরিৎ লিখেছেন, ও একা আছে । খুব কষ্ট হচ্ছে । মিঠুর জন্যই আমি চলে যাচ্ছি । মা ও বোন তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো । বারাসতেই বাড়ি অরিৎ ও তাঁর প্রেমিকা শ্রাবণী পালের ৷ দু'জনের প্রেম ছিল সেই স্কুল জীবন থেকে । পরবর্তীতে তাঁরা স্নাতক হন । 2018 সালেই একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের রিলেসেনশিপ ম্যানেজারের চাকরিও পেয়েছিলেন অরিৎ । দুই পরিবারের লোকজনই জানত তাঁদের প্রেমের কথা । তাতে অমত ছিল না কারও । সামনের বছরের তাঁদের বিয়েও ঠিক হয়ে গিয়েছিল ।
অরিতের পরিবারের তরফে জানা গেছে, শ্রাবণীর মৃত্যুর পর অরিতের জীবন হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল । একা একা থাকত । বেশি কথা বলত না । অরিতের এই মানসিক অবস্থা বুঝতে পেরেই পরিবারের সদস্যরা তাঁকে সঙ্গ দিত । তাতে একটু কাজও হয়েছিল । অরিতের বোন রিমি দাস বলেন, "অফিস থেকে ফিরে একা একা বসে দাদা শুধু কাঁদত । আর বলত ওকে ছাড়া আমার খুব কষ্ট হয় । স্বপ্নে মিঠুকে দেখতে পাই । আমি আর মা ওকে বোঝাতাম । কিন্তু তাতে একটু ঠিক হয়েছিল বোধ হয় । হতাশাটা পুরোপুরি কাটিয়ে ফেলতে পারেনি অরিৎ ।
অরিত দাসের মা স্বপ্না দাস বলেন, "শ্রাবণীর মৃত্যুর পরেও আমার ছেলে ওদের বাড়িতে আসা যাওয়া করত । কিন্তু পরে তাঁরাও খুব একটা পছন্দ করতেন না বলে অরিৎও যেত না । কিন্তু ছেলে হতাশা থেকেই নিজেকে শেষ করে দিল ।"
শ্রাবণীর মামা অসীম পাল বলেন, "খুব দুঃখজনক ঘটনা । ওদের সাথে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল । সম্ভবত চোখের সামনে প্রেমিকার মর্মান্তিক মৃত্যু অরিৎকে বিচলিত করে দিয়েছে । এটা কারও পক্ষেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয় ।" আমরাও শুনে খুব দুঃখ পেয়েছি । মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বারাসত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ।