পুরুলিয়া, 22 অক্টোবর: 'কালো রূপে দিগম্বরী, হৃদিপদ্ম করে মোর আলো রে ।' আর মাত্র একদিনের অপেক্ষা । তারপরেই 'কালো মেয়ে'র বন্দনায় মাতবে রাজ্যবাসী । পুরানমতে কালী অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রতীক, এই বিশ্বাসেই বন্দিত হন শ্যামা । কিন্তু বাস্তব এবং বিশ্বাসে যে আসমান জমিন ফারাক ।
সেই 'ফারাক'-এরই ছবি দেখল পুরুলিয়া, কালীপুজোর ঠিক 24 ঘণ্টা আগে । স্রেফ গায়ের রং কালো বলে একটি মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হল । তার আগেই ছেলের বিয়ে দিয়ে নতুন বউ ঘরে নিয়ে এসেছে বাড়ির লোকেরা (Husband married another girl) । অমানবিক এই ঘটনার সাক্ষী রইলেন পুরুলিয়ার ঘাঘরজুড়ির বাসিন্দারা (Husband allegedly banished wife for her skin tone) ।
বছর তিনেক আগে পুরুলিয়ার আড়ষা থানা এলাকার বছর একুশের আর্য্যার (নাম পরিবর্তিত) সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল পুরুলিয়া মফঃস্বল থানা এলাকার ঘাঘরজুড়ির বাসিন্দা রাজু মাহাতোর । বিয়ের সময় বর পণ বাবদ 85 হাজার টাকা ছাড়াও, সোনা-রুপোর গয়নাও নিয়েছিল রাজু ও তার পরিবার । কিছুদিন যেতে না যেতেই অন্য মেয়েকে বিয়ে করে রাজু । আর্য্যাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয় ওই যুবকের বাবা-মা ।
শ্বশুরবাড়ির 6 সদস্যের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন আর্য্যা । তিনি বলেন, "স্বামী বলেছে, তোকে আমার চয়েস নাই, তাই আমি রাখব না । শ্বশুর ও শাশুড়ী বলছেন, আমরা তোমার দায়িত্ব নিতে পারব না । তুমি এখান থেকে চলে যাও । আমার বাবা নেই, বাড়িতে প্রচণ্ড অভাব । আমার স্বামী বাইরে কাজ করেন । বিয়ের পর থেকেই আমার ওপরে টাকার দাবি করে অত্যাচার চলত । আমার ভাইয়ের কাছ থেকেও কাজে যাওয়ার নাম করে এর আগে আমার স্বামী টাকা নিয়েছে । কিন্তু এখন আমার কি হবে ? তাই বাধ্য হয়ে আইনের দ্বারস্থ হয়েছি ।"
আরও পড়ুন: পরপর কন্যাসন্তান, 'কালো' বধূকে খুন করে পালাল শ্বশুরবাড়ির লোকজন
যদিও অভিযুক্ত রাজু মাহাতোকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি তা এড়িয়ে গিয়েছেন । পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন বলেন, "বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে ।"