পুরুলিয়া, 3 ডিসেম্বর: স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ির হাতে প্রতি মুহূর্তে নিগৃহীত হতে হয় ! কিন্তু, সেখানেই শেষ নয় ৷ অত্য়াচারের সীমা চরমে ওঠে, যখন শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ি এসে তাঁর গায়ে হাত তোলেন বিবাহিতা তিন ননদ ! মারের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে শেষমেশ পুলিশ দ্বারস্থ হলেন মহিলা ৷ তাঁর দাবি, বিয়ের পর থেকেই গার্হ্যস্থ হিংসার (Domestic Violence) শিকার হয়েছেন তিনি ৷ ঘটনার জেরে পুরুলিয়ার (Purulia) রঘুনাথপুর মহিলা থানায় (Raghunathpur Women Police Station) লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই বধূ ৷
অভিযোগকারিণীর নাম পুনম কউর ৷ তিনি পুরুলিয়ারই সাঁওতালডি থানা এলাকার বাসিন্দা ৷ বছর চারেক আগে আদ্রা থানা এলাকার বাসিন্দা সৎপ্রীত সিংয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর ৷ পুনমের দাবি, বিয়েতে সাধ্য মতোই খরচ করেছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা ৷ বর পক্ষের দাবি মতো পণও দেওয়া হয়েছিল ৷ সেই তালিকায় ছিল নগদ 3 লক্ষ টাকা এবং 2 লক্ষ টাকা মূল্যের সোনার গয়না ৷ সেইসঙ্গে, নতুন আসবাবও দেওয়া হয়েছিল বেশ কিছু ৷ পুনমের অভিযোগ, বিয়ের পর আরও টাকা দাবি করেন তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা ৷ বিশেষ করে, সৎপ্রীত তাঁর শ্বশুরের কাছে ব্যবসার জন্য আরও 10 হাজার টাকা চেয়েছিলেন ৷ কিন্তু, পুনমের বাড়ির সদস্যদের পক্ষে এই টাকা দেওয়া সম্ভব ছিল না ৷
আরও পড়ুন: বিয়ের চার মাসের মাথায় অস্বাভাবিক মৃত্যু বধূর, গ্রেফতার স্বামী ও শাশুড়ি
পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে পুনম জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর থেকেই তাঁর উপর অত্য়াচারের বহর বাড়তে শুরু করে ৷ প্রতিদিনই নানাভাবে তাঁকে নিগ্রহ করেন শ্বশুর ও শাশুড়ি ৷ তার উপর, মাঝেমধ্য়েই বাপের বাড়ি আসেন পুনমের তিন ননদ নিশা কউর, কাঞ্চন কউর, ও বিজেন্দর কউর ৷ এই তিন বোন বাপের বাড়ি এলেই তাঁর উপর অকথ্য অত্যাচার করতেন বলে দাবি করেছেন ওই বধূ ৷
পুনমের একটি ছেলে রয়েছে ৷ তার বয়স সাড়ে তিনবছর ৷ অভিযোগ, ছেলের সামনেই পুনমকে নানাভাবে হেনস্থা করা হত ৷ এরপর একদিন পুনমকে শ্বশুরবাড়ি থেকে মেরে বের করে দেন তাঁর স্বামী ৷ কিন্তু, পরে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া হয় এবং পুনমকে শ্বশুরবাড়ি ফিরিয়ে আনা হয় ৷ কিন্তু, এর কিছুদিন পর ফের মারধর শুরু হয় ৷ এমনকী, পুনমের স্বামী সৎপ্রীত তাঁকে খুনের হুমকিও দেন বলে অভিযোগ ৷ এই অবস্থায় অবশেষে রঘুনাথপুর মহিলা থানায় শ্বশুরবাড়ি ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন পুনম ৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ৷