পুরুলিয়া,9 সেপ্টেম্বর : পুরুলিয় জয়পুর রাজবাড়ীর পুজো আর পাঁচটা পুজোর থেকে আলাদা (Golden Durga) ৷ কারণ এখানে দেবী দুর্গা সোনার। উচ্চতা আড়াই ফুট। একসের সোনা দিয়ে মূর্তিটি তৈরি হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে দেড়মন রূপোর দৃষ্টিনন্দন সিংহাসন। মঙ্গলঘটের উপর রাখা থাকে দেবী মূর্তি। পাশে একই মাপের দু'টি বেল। এই মূর্তি সারা বছর রাখা থাকে ব্যাংকের লকারে ৷ পুজোর ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত মুর্তিটি মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করে পুজো হয় ৷ পুজোর পর আবারও লকারে রেখে আসা হয় মূর্তিটিকে ৷
জমিদারি প্রথা না থাকলেও এখনও সাড়ম্বরে পুজো হয় রাজবাড়ির ৷ এইবছর নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে জয়পুর রাজপরিবারের দুর্গা মন্দির। রাজপরিবারের সদস্য শংকরনারায়ণ সিংহ দেও জানান, মন্দিরের প্রবেশদ্বার খুব ছোট ছিল । ভক্তদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে মন্দিরের পুর্ণনির্মান হয় ৷ প্রবেশদ্বারটিও বড় করে তৈরি করা হয়েছে নতুন মন্দিরের ৷
জয়পুরের ইতিহাসে মহারাজা কাশীনাথ সিং-এর দান এই সোনার দুর্গা। রাজপরিবারের তথ্য অনুয়ায়ী, 1830-1835-এর মধ্যে জয়পুরের রাজবাড়ির দুর্গামন্দিরের খড়ের চালায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পুজোর প্রদীপ থেকে অগ্নিকাণ্ড হয় ৷ যদিও সেই সময় জয়পুর রাজবাড়ির দুর্গোৎসবে মূর্তি পূজা হত না। নবপত্রিকা এবং জয়পুরের প্রতিষ্ঠাতা জয়সিং-এর কিংবদন্তীতে মোড়া খড়্গের পুজো হত। চিন্তিত রাজা কাশীনাথ সপরিবারে ধর্ণা দিলেন মন্দিরে। কথিত আছে তিনি এসময় দেবীর স্বপ্নাদেশ পান। সেই আদেশ অনুযায়ী বারাণসী থেকে দেবীর দ্বিভূজা স্বর্ণমূর্তি গড়িয়ে আনা হয় ।
আরও পড়ুন: রায়গঞ্জে পুজোর চমক, সুদর্শনপুর দুর্গোৎসব কমিটির ভাবনায় এবার একটুকরো ‘রাজস্থান’
সোনার মূর্তিটি রাজবাড়িতে রাখা থাকলেও, 1970 সালে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘটে রাজবাড়িতে। দেবীর বহু অলঙ্কার আরও নানা জিনিস চুরি যায়। যদিও ডাকাতদল লাল শালুতে মোড়া দেবীমূর্তি দেখতে পায়নি। সেই থেকে পুজোর কটা দিন বাদ দিয়ে ব্যাংকের লকারে সারাবছর থাকে দেবীমূর্তি। কেবলমাত্র দুর্গাপুজোর সময় ছড়া ৷