পুরুলিয়া, 19 জানুয়ারি : চরিত্রের সঙ্গে মানানসই সাজগোজ । সেই সঙ্গে মুখে ভারী ভারী মুখোশ । ধামসা-মাদলের তালে নাচের মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে পৌরাণিক কাহিনী । তবে, এসব কিছুর পিছনে রয়েছে শুধুই পুরুষ । এটাই এতদিন ছিল ছৌ নাচের চেনা ছবি । সেই ছবিই বদলাচ্ছেন পুরুলিয়ার মৌসুমি চৌধুরি ।
দাদু ছিলেন জাত মঙ্গলের শিল্পী । বাবা জগন্নাথ চৌধুরিও ছৌ শিল্পী । সেই থেকেই ছৌ শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন । কিন্তু জ্ঞান হওয়ার পর থেকে পুরুষদেরই ছৌ করতে দেখে আসছেন । তাহলে কীভাবে পূরণ হবে ছৌ শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন ? সেই স্বপ্ন পূরণের শুরুটা হয়েছিল একপ্রকার জোর করেই ।
একটি সংস্থার তরফে বাচ্চাদের জন্য ছৌ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল । সেখানেই জোর করে ঢুকে গিয়েছিলেন মৌসুমি ও কয়েকজন মহিলা । প্রশিক্ষকদের জানান, নিজেদের ছৌ শেখার ইচ্ছের কথা । সেই থেকেই ছৌ-এর যাত্রা শুরু মৌসুমি ও তাঁর মতো কিছু মেয়েদের ।
15 জন মহিলাকে নিয়ে একটি ছৌ-এর দলও তৈরি করেছেন মৌসুমি । দলের নাম মিতালি । একইসঙ্গে সিধো কানহো বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছৌ শিখতে উৎসাহী মেয়েদের প্রশিক্ষণও দিচ্ছেন । শুধু তাই নয়, নরওয়ে গিয়ে সেখানে একটি স্কুলের পড়ুয়াদেরও ছৌ নাচ শিখিয়ে এসেছেন । সরকারি সহায়তা বলতে মিলেছে শুধু শিল্পী ভাতা । আক্ষেপ একটাই অনুষ্ঠান করার সুযোগ কম ।
ছৌ শিল্পী হিসেবে এখনও অনেকখানি পথ চলা বাকি মৌসুমির । এই পথচলায় একটাই আশা তাঁর - আগামী দিনের ছৌ নাচে পুরুষদের সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দেবে মহিলা ছৌ দলগুলিও ।