কাঁথি, 30 জুন : কাঁথিতে যুবতির অস্বাভাবিক মৃত্যু । মৃতার নাম রিনা গিরি (27) । শ্বশুরবাড়ির লোকদের দাবি, গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করছেন ওই যুবতি । এদিকে যুবতির বাবার বাড়ির সদস্যদের অভিযোগ, পণের টাকা না মেলায় মেয়েকে খুন করেছে শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা । ঘটনায় মৃতের শ্বশুরবাড়ির চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ । পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এগরা থানার ছোটো নলগেড়িয়ার বাসিন্দা বাসুদেব গিরির মেয়ে রিনা গিরি (27)-এর সঙ্গে সাত বছর আগে বিয়ে হয় কাঁথি পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রঞ্জন জানার সঙ্গে । চার বছরের এক সন্তানও রয়েছে । বিয়েতে যৌতুক হিসেবে মেয়ের বাড়ির তরফে গয়না, টাকা ও আসবাবপত্র দেওয়া হয়েছিল । অভিযোগ, বিয়ের যৌতুক পছন্দ না হওয়ায় ফের মোটা টাকা দাবি করা হয়েছিল রিনার শ্বশুরবাড়ির তরফে । রিনার বাড়ির পক্ষ থেকে সেই টাকা দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি । আর এর জেরেই শুরু হয় রিনার উপর অত্যাচার । স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকরা রিনার উপর নিত্য শারীরিক নির্যাতন চালাত বলে অভিযোগ । আজ সকালে রিনার মৃত্যুর খবর পান স্থানীয়রা । খবর দেওয়া হয় তাঁর বাবার বাড়িতে । বাবার বাড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থানে এলে তাঁদের জানানো হয় রিনা গলায় ফাঁস লাগিয়ে গতরাতে আত্মহত্যা করেছে । কিন্তু বিষয়টি মানতে রাজি হননি মৃতার পরিবারের সদস্যরা । তাঁদের অভিযোগ, মেয়েকে খুন করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকরা । তারপর তাঁকে ফ্যানে ঝুলিয়ে দিয়েছে । বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বচসা বেধে যায় । হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায় । ঘটনাস্থানে আসে কাঁথি থানার পুলিশ । রিনার স্বামী, শ্বশর, শাশুড়ি ও দেওরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ । মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ।
মৃতার কাকু মিন্টু গিরি বলেন,"ভাইজিকে খুন করে দড়িতে ঝুলিয়ে দিয়েছে জামাইসহ তার পরিবারের লোকেরা । স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, "রিনার মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের লোকদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হচ্ছিল । কিন্তু এইভাবে দুই পরিবারের সদস্যদের মারামারিতে জড়িয়ে পড়া ঠিক নয় ।" আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বাবলু মাইতি বলেন, "আমরা ঘটনার সঠিক তদন্ত চাই। দোষীদের ফাঁসি চাই ।" কাঁথি থানার IC সুনয়ন বসু বলেন, "ঘটনায় শ্বশুরবাড়ির চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।"