ভগবানপুর (পূর্ব মেদিনীপুর), 13 অক্টোবর : ফের কাঁথির অধিকারী পরিবারের বিরুদ্ধে সরব হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) ৷ তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের শহিদদের রক্তের বিনিময়ে অধিকারী পরিবার (Adhikari Family) প্রতিষ্ঠা পেয়েছে ৷ সেই কারণে তিনি শিশির-শুভেন্দুর পরিবারকে ‘গদ্দার পরিবার’ বলেও কটাক্ষ করেছেন ৷
বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে বিজয়া সম্মিলনী আয়োজন করা হয়েছিল ৷ সেখানেই হাজির হয়েছিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ৷ ওই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে তিনি শিশির অধিকারী (Sisir Adhikari), শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) ও সৌমেন্দু অধিকারীর (Soumendu Adhikari) বিরুদ্ধে তোপ দাগেন ৷
এদিন ভগবানপুর-1 ব্লকের ভীমেশ্বরী হাইস্কুলের মাঠ আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেন, সিবিআই থেকে বাঁচতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহরে (Amit Shah) পা ধরেছেন শুভেন্দু অধিকারী । ক্যামেরার সামনে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে শুভেন্দুকে ৷
পরে মঞ্চ থেকে নেমে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েও শুভেন্দুর সমালোচনায় সরব হন কুণাল ঘোষ ৷ তাঁর দাবি, 2020 সাল পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলে ছিলেন বলে বিজেপি (BJP) ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) সমালোচনা করতেন ৷ এখন বিজেপিতে গিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে উগ্র হিন্দুত্ববাদী হয়ে গিয়েছেন ৷
অন্যদিকে মঞ্চ থেকে কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন কুণাল ৷ তাঁর দাবি, 2009 সালে তৃণমূল কংগ্রেসের দয়া একবার মাত্র কেন্দ্রের মন্ত্রী হতে পেরেছিলেন শিশির অধিকারী ৷ একই সঙ্গে শিশির অধিকারীর ছোট ছেলে সৌমেন্দুর বিরুদ্ধেও সরব হন কুণাল ৷ সৌমেন্দুর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তাঁর অভিযোগ, কাঁথি পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন পৌরসভা থেকে সারদার ফাইল চুরি করে এখন আদালতে রক্ষাকবচ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে । এদের জেলে ভরা দরকার ।
প্রসঙ্গত, কাঁথির অধিকারী পরিবারে শুভেন্দু ও সৌমেন্দু সরাসরি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ৷ শিশির অধিকারীর অবস্থান স্পষ্ট নয় ৷ তিনি 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার চলাকালীন নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহের মঞ্চে হাজির হয়েছিলেন ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে নন্দীগ্রাম থেকে শুভেন্দুকে জেতানোর ডাক দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু প্রকাশ্যে তাঁকে বিজেপিতে যোগ দিতে দেখা যায়নি ৷ অন্যদিকে তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী এখনও তৃণমূলেই আছেন ৷ তাই শিশির-শুভেন্দু-সৌম্যেন্দুদের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেও দিব্যেন্দুর নাম একবারও শোনা যায়নি কুণাল ঘোষের মুখে ৷
অন্যদিকে মঙ্গলবার থেকেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনী । 11 অক্টোবর থেকে 22 অক্টোবর রাজ্যের প্রতিটি জেলার সব ব্লকে অন্তত একটি করে সভা হবে । পাঁচশোর বেশি সভা হবে রাজ্যজুড়ে । পুজোর আগেই দলীয় নেতৃত্বকে এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) নির্দেশ দিয়েছেন বলে তৃণমূল সূত্রে খবর । ওই সূত্রের দাবি, বিজয়া সম্মিলনীর আবহে এই সভায় কোন কোন বিষয়গুলি তুলে ধরতে হবে, সেই সংক্রান্ত গাইডলাইনও দিয়েছেন অভিষেক ।
এদিন ভগবানপুরের সভাও হয়েছে সেই গাইডলাইন মেনে ৷ সেখানে কুণাল ঘোষ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক, চণ্ডীপুরের বিধায়ক তথা অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী, জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অভিজিৎ দাস প্রমুখ ।
আরও পড়ুন : ফের শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক কুণাল ঘোষ