Aluachak Junior High School: এক ছাত্র ও তিন শিক্ষক, জুনিয়র হাইস্কুলে ব্রাত্য দেশ ও বাণী বন্দনা

রয়েছেন 3 জন শিক্ষক ৷ অথচ একটি মাত্র ছাত্র ৷ তাও প্রতিদিন আসে না ৷ এলেও সাড়ে বারোটায় ছুটি দিয়ে দিতে হয় তাকে ৷ সে যেদিন স্কুলে আসে কেবল সেদিনই মিড ডে-মিল রান্না হয় ৷ এহেন অদ্ভুত স্কুল রয়েছে এ রাজ্য়েই (Wonder School in Purba Medinipur)৷ জানুন সেই স্কুলের কথা ৷

আলুয়াচক (পূর্ব মেদিনীপুর), 26 জানুয়ারি: কখনও শুনেছেন একটা স্কুলে একজনই ছাত্র ৷ আর শিক্ষক রয়েছেন 3 জন ৷ অবিশ্বাস্য হলেও এটাই সত্যি ৷ পূর্ব মেদিনীপুরের আলুয়াচক জুনিয়র হাইস্কুলে তাই 26 জানুয়ারি নেই জাতীয় পতাকা তোলার অনুষ্ঠান ৷ স্বাভাবিকভাবেই ব্রাত্য সরস্বতী পুজোও ৷

সেখ রোহিত ৷ আলুয়াচক জুনিয়র হাইস্কুলের একমাত্র পড়ুয়া ৷ ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে সে ৷ স্কুলে প্রজাতন্ত্র দিবস ও সরস্বতী পুজোর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তার উত্তর, "আমাকে আজ স্কুল যাওয়ার কথা বলেনি বলে যাইনি ৷" সপ্তাহে বড় জোর 2 থেকে 3 দিন স্কুলে আসে রোহিত । তাও সাড়ে বারোটা বাজলেই তাকে ছেড়ে দিতে হয় । কারণ, ষষ্ঠ শ্রেণির এই পড়ুয়া বাড়িতে গেলে তবে তার মা বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করতে বেরোবেন ৷ যেদিন ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রটি আসবে সেদিনই মিড ডে-মিলের রান্না বসে । আর 3 জন শিক্ষক স্কুলে প্রতিদিনই হাজিরা দিতে আসেন (Purba Medinipur News)৷

শিক্ষকদের বক্তব্য, গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্কুলে ভর্তি করার জন্য অনুরোধ করা হলেও অবিভাবকেরা তাতে কর্ণপাতই করেননি ৷ এলাকার ছাত্র-ছাত্রীরা কিছুটা দূরের হাইস্কুলেই ভর্তি হচ্ছে । স্কুলে এসেও তাই বসেই থাকতে হয় ৷ কারণ পড়ানোর তো কোনও সুযোগ নেই ৷ এই অবস্থায় শিক্ষকদের দাবি, "এভাবে মানসিক কষ্ট নিয়ে বসে থাকা আর সম্ভব হচ্ছে না । আসি যাই মাইনে পাই-য়ের মতো ব্য়াপার আর কি ৷ আমরা চাই আমাদের বাড়ির অন্যত্র ট্রান্সফার করে দেওয়া হোক যাতে আমরা সেখানকার স্কুলে শিক্ষাদান করতে পারি ৷"

তবে স্থানীয় বিজেপি নেতা বামদেব গুছাইতের বক্তব্য, "রাস্তা ও মাঠের ধারে স্কুলটি হওয়ায় বিকেলের পর অসামাজিক কাজকর্ম চলে সেখানে ৷ সন্ধ্যা হলেই বসে মদ ও গাঁজার আসর ৷ স্কুলের সামনে পড়ে থাকে মদের বোতল । তাই সকল অভিভাবকরা এই স্কুল এড়িয়ে চলেন ৷"

এই ঘটনার কথা অবশ্য স্বীকার করেছেন স্কুলের ভূগোল শিক্ষক সন্তু মাইতি ৷ তিনি বলেন, "কী করব স্কুল এসে মদের বোতল সামনে পড়ে থাকতে দেখে চক্ষুলজ্জায় তা আমরাই সরিয়ে দি অন্যত্র ৷ আর যাদের জন্য এই স্কুল সেই ছাত্র-ছাত্রীই যদি না-থাকে তাহলে আর কীসের সরস্বতী পুজো ৷" যদিও আলুয়াচক জুনিয়র হাইস্কুলের এই পরিস্থিতির কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে ৷ শীঘ্রই এই বিষয়ে ব্য়বস্থা নেওয়া হবে বলে জানান শহিদ মাতঙ্গিনী হাজরা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাজেশ হাজরা ৷