পটাশপুর , 15 এপ্রিল : বার্ধক্য ও বিধবা ভাতার টাকা পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠল পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে ৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ স্থানীয় বাসিন্দারা পোস্টমাস্টারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে ৷ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর থানার দুই নম্বর ব্লকের চন্দনপুর পোস্ট অফিসের ঘটনা ৷
বার্ধক্য ও বিধবা ভাতার প্রাপকেরা এতদিন পর্যন্ত 600 টাকা করে পেতেন । কিন্তু সেই টাকা বর্তমানে সরকার বাড়িয়ে 1 হাজার টাকা করেছে । আর এই বাড়তি টাকা পাওয়ার জন্য নতুন করে তালিকা পাঠাতে হবে । এমনই অজুহাত দেখিয়ে পোস্টমাস্টার নিজে বাড়ি বাড়ি ঘুরে নাম তোলার জন্য টাকা নিতে শুরু করেন বলে অভিযোগ । আর এই খবর জানাজানি হতেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ আজ পোস্ট অফিস খুলতেই পোস্ট অফিসের সামনে স্থানীয় বাসিন্দারা জমায়েত করতে শুরু করে । তারপর পোস্টমাস্টার পোস্ট অফিসে এলেই তাকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয় । এমনকী , গ্রামবাসীরা পোস্টমাস্টারকে ভিতরে রেখেই পোস্ট অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয় । এই বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে আসে পটাশপুর থানার পুলিশ । গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই পোস্টমাস্টার ভিগুরাম পাত্রকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় ।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ভাতা প্রাপক কাজল পাহাড়ি বলেন , "আগে আমরা 600 টাকা করে পেতাম । কিন্তু প্রতি মাসে টাকা পেতাম না । দুই মাস থেকে তিন মাস অন্তর এই টাকা পেতাম । আর এখন সরকার টাকা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা প্রতি মাসে করেছে । তাই হঠাৎ পোস্টমাস্টার ভিগুরাম পাত্র আমার বাড়িতে এসে বলে, একটি লিস্ট করে পাঠাতে হবে ৷ তবেই আপনার ওই টাকা আসবে । আর এক হাজার টাকা করে দিতে হবে । পরেরদিন আসবে বলে চলে যায় । পরের দিন দুপুরে আমার বাড়িতে আসে ৷ এক হাজার টাকা নিতে ও কিছু কাগজে সই করতে । তখন আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ৷ এই টাকা তো সরকার দিচ্ছে , তাহলে তোমাকে টাকা দেব কেন ? তখন পোস্টমাস্টার ভিগুরাম পাত্র আমার বাড়ি থেকে চলে যায় ।"
আরেক গ্রামবাসী গুরুপদ পাহাড়ি বলেন , "এই পোস্টমাস্টার ভিগুরাম পাত্র গ্রামের বহু লোকের কাজ থেকে সরকারি টাকা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছে । "
গ্রামবাসীরা পোস্ট অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করলে , পুলিশ এসে ওই পোস্টমাস্টারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় । অপরদিকে , অভিযুক্ত পোস্টমাস্টার ভিগুরাম পাত্র সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন , "আমি কারও কাছ থেকে কোনও টাকা নিইনি । সব অভিযোগ মিথ্যে ।" পটাশপুর থানার OC চন্দ্রকান্ত শাসমল বলেন , "ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে । ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে ।"