পাঁশকুড়া,10 জুলাই : পাঁশকুড়ায় কবরস্থান থেকে উদ্ধার অর্ধনগ্ন দগ্ধ মৃত মহিলার পরিচয় জানতে তদন্তে পুলিশ । মৃতের নাম সাইনাজ বিবি(42) । পাঁশকুড়া স্টেশন লাগোয়া পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের বাহারগ্রাম এলাকার বাসিন্দা তিনি । সাইনাজের মেয়ে সেলিমা খাতুনের অভিযোগ, তাঁর মাকে খুন করা হয়েছে । তবে কী কারণে খুন তা এখনও পরিষ্কার নয় । আত্মহত্যার সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না । খুন না আত্মহত্যা তা জানতে তদন্ত শুরু করছে পুলিশ ।
সাইনাজের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে । দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় তন্ত্র-মন্ত্র করতেন । গভীর রাতে কবরস্থানে দেখা যেত তাঁকে । বছর খানেক আগে বাড়ি ছেড়ে আজমেঢ় শরিফে চলে গেছিলেন সাধনার জন্য । প্রায় ছয় মাস পর সাধনা শেষে বাড়ি ফিরে আসেন । আজমেঢ়ে যাওয়া নিয়ে তাঁর পরিবারের আপত্তি ছিল । আজমেঢ়ে পুনরায় যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও যেতে পারেননি । তবে প্রতিদিনই গভীর রাতে সুরানানকার এলাকার জানাদিঘির পাড়ের ওই কবরস্থানে যেতেন বলে জানা গেছে । সেখানেই সারারাত সাধনা করতেন । আলো ফোটার আগে ফিরে আসতেন বাড়ি । পরিবার সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহে সোমবার রাতে বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে চলে গেছিলেন সাইনাজ । গতকাল সকালে সেই কবরস্থান থেকেই তাঁর অর্ধনগ্ন দগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার হয় । আজ সকালে তাঁর হাতের চুড়ি ও শাড়ির পোড়া অংশ দেখে দেহ শনাক্ত করেন তাঁর মেয়ে ।
তবে বিষয়টি খুন না আত্মহত্যা তা এখনও জানতে পারেনি পুলিশ । সাইনাজকে খুনও করা হয়ে থাকতে পারে । সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না মৃতের আত্মীয় আনোয়ার বিবি । অপরদিকে একই দাবি করেছে সেলিমাও । তাঁর কথায়, "আমার মা আত্মহত্যা করার মানুষ নয় । অনেক সাংসারিক কষ্টের মধ্যেও মা বারবার বলতেন কোনও দিন আত্মহত্যা করব না । আমরা নিশ্চিত মা আত্মহত্যা করেনি । কয়েকজন প্রতিবেশী আমাদের উন্নতিকে ভালো চোখে দেখত না । সেই জন্যই হয়তো মাকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে । তবে তন্ত্র সাধনা আমার মা করত না । অন্য কেউ করে থাকতে পারে । যেহেতু এখনও কিছু প্রমাণ হয়নি, তাই আমি নাম নিতে পারব না । ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই খুনের অভিযোগ দায়ের করব ।"
পাঁশকুড়া থানার এক আধিকারিক বলেন, "মহিলার মৃত্যুর পিছনে বেশ কিছু রহস্য রয়েছে । ঘটনাস্থান থেকে উদ্ধার হওয়া সামগ্রী, জুতো, দেশলাই বাক্স ইত্যাদি জিনিসের অবস্থান আমাদের বারবার ভাবাচ্ছে । ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে । তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পেলে কিছুই বলা সম্ভব নয় ।"