তমলুক, 7 ফেব্রুয়ারি : কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আধিকারিককে মারধরের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হল তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতাকে । গতকাল গভীর রাতে তমলুক ও কোলাঘাট থানার পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ডিমারি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে । আজ তাঁকে তমলুক জেলা আদালতে তোলা হয় ৷ বিচারক 14 দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ৷
শুক্রবার দুপুরে শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানা এবং শান্তিপুর 1 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সেলিম আলিসহ অন্য তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা অস্থায়ী কর্মীদের সঙ্গে মিটিং করার জন্য প্লান্টের ভিতরে ঢোকে । সে সময় নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের গাড়ি চেক করতে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে ৷ বচসা থামানোর জন্য অফিস থেকে ছুটে আসেন প্লান্টের হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ ঘোষ । অভিযোগ, সে সময় তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন তৃণমূল নেতারা ।
আরও পড়ুন : কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে তৃণমূল নেতার গাড়ি চেকিং, আধিকারিককে মারধর
এই ঘটনায় গতকালই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানা ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় ৷ অভিযোগ দায়ের করেন প্লান্টের জেনেরাল ম্যানেজার কৃষ্ণেন্দু চক্রবর্তী । সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গতরাতে তৃণমূল নেতা গৌর মাজিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । গৌর মাজি শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ ৷ তাঁর বিরুদ্ধে কোলাঘাট থানায় সরকারি কাজে বাধা, কর্তব্যরত সরকারি কর্মীকে মারধর, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরসহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে । ধৃতকে আজ তমলুক জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁর জামিন নাকচ করেন ৷ 14 দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দেন ।
এই ঘটনায় গতকালই জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শিশির অধিকারী দিবাকর জানা এবং সেলিম আলিকে দল থেকে শোকজ় ও সাসপেন্ড করেন ৷ এবং এক সপ্তাহের মধ্যে শোকজ়ের উত্তর চেয়ে পাঠান । অপরদিকে প্রশাসন সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিবাকর জানা যে লাইসেন্স প্রাপ্ত বন্দুক ব্যবহার করতেন ইতিমধ্যেই সেই লাইসেন্স বাতিল করেছেন জেলাশাসক । সেইসঙ্গে তমলুক থানায় বন্দুক জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । যদিও ঘটনার পর থেকেই পলাতক দিবাকর জানাসহ তাঁর অন্য সঙ্গীরা ৷ তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ।
এই বিষয়ে সরকারি পক্ষের আইনজীবী শফিউল আলি খান বলেন, "কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সরকারি আধিকারিককে মারধর করার ঘটনায় গৌর মাজিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁর জামিন নাকচ করেন ৷ 14 দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দেন । সেইসঙ্গে বিচারক ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সোমবার তমলুক উপ সংশোধনাগারে TI প্যারেড করানোর নির্দেশ দিয়েছেন । "
যদিও আদালতে যাওয়ার পথে গৌর মাজি দাবি করেন, সরকারি আধিকারিককে মারধরের ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন ৷