ETV Bharat / state

ছেলেকে অপহরণ করেছে প্রধান শিক্ষক, থানায় অভিযোগ সহকারী শিক্ষকের বাবার - প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সহকারি শিক্ষককে অপহরণের অভিযোগ

16 নভেম্বর পাঁশকুড়ার সাহড়দার বাসিন্দা ও স্থানীয় পুলশিটা ভোলানাথ বিদ্যানিকেতনের অঙ্কের শিক্ষক হিমাদ্রি শেখর সাস্মিগ্রাহী বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান । নিখোঁজ হওয়ার পর 6 দিন কেটে গেলেও এখনও খোঁজ পাওয়া যায়নি তাঁর । পরিবারের অভিযোগ, স্কুলের প্রধান শিক্ষক চঞ্চল কুমার মাইতি হিমাদ্রিবাবুর নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার মূল কারণ । তাঁদের দাবি, চঞ্চলবাবুই নিজের প্রয়োজনে হিমাদ্রীর কাছ থেকে বেশ কয়েক লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন । সেই টাকা বারবার প্রধান শিক্ষকের কাছে ফেরত চাওয়ায় তিনি মামলা করার হুমকি দিয়েছিলেন হিমাদ্রিবাবুকে । আর তারপরই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি ।

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সহকারি শিক্ষককে অপহরণের অভিযোগ
author img

By

Published : Nov 23, 2019, 12:50 PM IST

পাঁশকুড়া, 23 নভেম্বর : পাঁশকুড়ার সাহড়দার বাসিন্দা হিমাদ্রি শেখর সাস্মিগ্রাহী 16 নভেম্বর বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান । তিনি স্থানীয় পুলশিটা ভোলানাথ বিদ্যানিকেতনের অঙ্কের শিক্ষক । নিখোঁজ হওয়ার পর 6 দিন কেটে গেলেও এখনও খোঁজ পাওয়া যায়নি তাঁর । পরিবারের অভিযোগ, স্কুলের প্রধান শিক্ষক চঞ্চল কুমার মাইতি, হিমাদ্রিবাবুর নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার মূল কারণ । তাঁদের দাবি, চঞ্চলবাবুই নিজের প্রয়োজনে হিমাদ্রির কাছ থেকে বেশ কয়েক লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন । সেই টাকা বারবার প্রধান শিক্ষকের কাছে ফেরত চাওয়ায় তিনি মামলা করার হুমকি দিয়েছিলেন হিমাদ্রিবাবুকে । আর তারপরই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি । যে কারণে নিখোঁজ সহকারী শিক্ষকের বাবা পাঁশকুড়া থানায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক চঞ্চলবাবুর বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা রুজু করেন । যদিও অপহরণের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ।


স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, 2007 সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা দিয়ে হিমাদ্রিবাবু পুলশিটা স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসাবে কাজে যোগদান করেন । তারপর থেকেই তিনি ওই স্কুলের গণিতের শিক্ষক হিসেবে কাজ করে চলেছেন । জানা গেছে, প্রধান শিক্ষকের সাথে হিমাদ্রিবাবুর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক । তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পর্কও খুবই ভালো ছিল । যে কারণে অতীতে বেশ কয়েকবার নিজেদের মধ্যে অর্থনৈতিক লেনদেন হয়েছে । চঞ্চলবাবু জানিয়েছেন, 2013 সালে হিমাদ্রিবাবুর কাছ থেকে নিজের ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে আট লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন । তা ইতিমধ্যেই শোধ হয়ে গেছে । পুনরায় 2018 সালে হিমাদ্রিবাবুকে অনুরোধ করে নিজের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে পাঁচ লাখ টাকা তিনি ঋণ নেন । সেই টাকারও ইতিমধ্যেই প্রায় 2 লাখ টাকা শোধ করা হয়ে গেছে ৷ বাকি রয়েছে আরও 3 লাখ টাকা । আর সেই বাকি টাকা নিয়েই নাকি দুই শিক্ষকের মধ্যে সমস্যার সূত্রপাত । এরপরই গত শনিবার সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান হিমাদ্রিবাবু । ওই দিনই রাত দশটা নাগাদ পাঁশকুড়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয় পরিবারের তরফে । পরের দিন অর্থাৎ সোমবার সকালে তাঁর ঘর থেকে উদ্ধার হয় একটি সুইসাইড নোট । যাতে লেখা রয়েছে, "আমার মৃত্যুর জন্য আমার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহাশয় চঞ্চল কুমার মাইতি দায়ি । চঞ্চল কুমার মাইতির জন্যই আমাকে মৃত্যুর পথ বেছে নিতে হয়েছে ।" সেকথা পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানোর পর গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ ।

কী বললেন নিখোঁজ শিক্ষকের বাবা ? দেখুন ভিডিয়ো...

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক চঞ্চলবাবু টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন । তবে হিমাদ্রিবাবু কোথায় রয়েছেন সে বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি । হিমাদ্রিবাবুর বাবা নারায়ণচন্দ্র সাস্মিগ্রাহী বলেন, "শনিবার সকালে স্কুলে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছিল হিমাদ্রি । আটটা পর্যন্ত তাঁকে ফোনে পাওয়া গেলেও তাঁর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি । সোমবার হিমাদ্রির লেখা একটি সুইসাইড নোট আমরা খুঁজে পাই । যেটাতে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে ছেলের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সেই টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন না স্কুলের প্রধান শিক্ষক । টাকা চাইতে গেলে প্রধান শিক্ষক ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিচ্ছিলেন । তারপরই নিখোঁজ হয়ে যায় সে । আমাদের ধারণা প্রধান শিক্ষকই আমার ছেলেকে কিডন্যাপ করে লুকিয়ে রেখেছে । পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে । আমরা চাই পুলিশ অভিযুক্তকে কঠোর শাস্তি দিয়ে আমার ছেলেকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিক ।"

যদিও প্রধান শিক্ষক চঞ্চল কুমার মাইতি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অপহরণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন । তিনি জানিয়েছেন, "আমি ওনার কাছ থেকে টাকা নিয়েছি এটা ঠিক । সেই টাকার অধিকাংশ টাকায় শোধ করে দিয়েছি । বাকি টাকাও কয়েক মাসের মধ্যেই শোধ করে দেওয়ার কথা ছিল । আমার জন্য যদি ও কোনও সমস্যায় পড়ত তাহলে আমাকে বা স্কুলের অন্য সহকারী শিক্ষকদের বিষয়টি একবার হলেও জানাত । কিন্তু হিমাদ্রিবাবু একবারও কারও সাথেই বিষয়টি নিয়ে স্কুলে আলোচনা করেননি । আমরা কোনওভাবে বিষয়টি জানতে পারলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যেত । ও বাড়ি না ফেরায় আমি ও আমার পরিবার যথেষ্ট চিন্তায় রয়েছি । আমরা চাই হিমাদ্রিবাবু দ্রুত বাড়ি ফিরে আসুন । তাহলেই সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে ।"


এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার ভি সোলেমন নেশাকুমার জানিয়েছেন, নিখোঁজ শিক্ষকের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে । তদন্ত শুরু হয়েছে । শিক্ষকের খোঁজে চলছে ।

পাঁশকুড়া, 23 নভেম্বর : পাঁশকুড়ার সাহড়দার বাসিন্দা হিমাদ্রি শেখর সাস্মিগ্রাহী 16 নভেম্বর বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান । তিনি স্থানীয় পুলশিটা ভোলানাথ বিদ্যানিকেতনের অঙ্কের শিক্ষক । নিখোঁজ হওয়ার পর 6 দিন কেটে গেলেও এখনও খোঁজ পাওয়া যায়নি তাঁর । পরিবারের অভিযোগ, স্কুলের প্রধান শিক্ষক চঞ্চল কুমার মাইতি, হিমাদ্রিবাবুর নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার মূল কারণ । তাঁদের দাবি, চঞ্চলবাবুই নিজের প্রয়োজনে হিমাদ্রির কাছ থেকে বেশ কয়েক লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন । সেই টাকা বারবার প্রধান শিক্ষকের কাছে ফেরত চাওয়ায় তিনি মামলা করার হুমকি দিয়েছিলেন হিমাদ্রিবাবুকে । আর তারপরই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি । যে কারণে নিখোঁজ সহকারী শিক্ষকের বাবা পাঁশকুড়া থানায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক চঞ্চলবাবুর বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা রুজু করেন । যদিও অপহরণের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ।


স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, 2007 সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা দিয়ে হিমাদ্রিবাবু পুলশিটা স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসাবে কাজে যোগদান করেন । তারপর থেকেই তিনি ওই স্কুলের গণিতের শিক্ষক হিসেবে কাজ করে চলেছেন । জানা গেছে, প্রধান শিক্ষকের সাথে হিমাদ্রিবাবুর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক । তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পর্কও খুবই ভালো ছিল । যে কারণে অতীতে বেশ কয়েকবার নিজেদের মধ্যে অর্থনৈতিক লেনদেন হয়েছে । চঞ্চলবাবু জানিয়েছেন, 2013 সালে হিমাদ্রিবাবুর কাছ থেকে নিজের ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে আট লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন । তা ইতিমধ্যেই শোধ হয়ে গেছে । পুনরায় 2018 সালে হিমাদ্রিবাবুকে অনুরোধ করে নিজের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে পাঁচ লাখ টাকা তিনি ঋণ নেন । সেই টাকারও ইতিমধ্যেই প্রায় 2 লাখ টাকা শোধ করা হয়ে গেছে ৷ বাকি রয়েছে আরও 3 লাখ টাকা । আর সেই বাকি টাকা নিয়েই নাকি দুই শিক্ষকের মধ্যে সমস্যার সূত্রপাত । এরপরই গত শনিবার সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান হিমাদ্রিবাবু । ওই দিনই রাত দশটা নাগাদ পাঁশকুড়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয় পরিবারের তরফে । পরের দিন অর্থাৎ সোমবার সকালে তাঁর ঘর থেকে উদ্ধার হয় একটি সুইসাইড নোট । যাতে লেখা রয়েছে, "আমার মৃত্যুর জন্য আমার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহাশয় চঞ্চল কুমার মাইতি দায়ি । চঞ্চল কুমার মাইতির জন্যই আমাকে মৃত্যুর পথ বেছে নিতে হয়েছে ।" সেকথা পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানোর পর গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ ।

কী বললেন নিখোঁজ শিক্ষকের বাবা ? দেখুন ভিডিয়ো...

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক চঞ্চলবাবু টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন । তবে হিমাদ্রিবাবু কোথায় রয়েছেন সে বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি । হিমাদ্রিবাবুর বাবা নারায়ণচন্দ্র সাস্মিগ্রাহী বলেন, "শনিবার সকালে স্কুলে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছিল হিমাদ্রি । আটটা পর্যন্ত তাঁকে ফোনে পাওয়া গেলেও তাঁর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি । সোমবার হিমাদ্রির লেখা একটি সুইসাইড নোট আমরা খুঁজে পাই । যেটাতে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে ছেলের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সেই টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন না স্কুলের প্রধান শিক্ষক । টাকা চাইতে গেলে প্রধান শিক্ষক ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিচ্ছিলেন । তারপরই নিখোঁজ হয়ে যায় সে । আমাদের ধারণা প্রধান শিক্ষকই আমার ছেলেকে কিডন্যাপ করে লুকিয়ে রেখেছে । পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে । আমরা চাই পুলিশ অভিযুক্তকে কঠোর শাস্তি দিয়ে আমার ছেলেকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিক ।"

যদিও প্রধান শিক্ষক চঞ্চল কুমার মাইতি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অপহরণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন । তিনি জানিয়েছেন, "আমি ওনার কাছ থেকে টাকা নিয়েছি এটা ঠিক । সেই টাকার অধিকাংশ টাকায় শোধ করে দিয়েছি । বাকি টাকাও কয়েক মাসের মধ্যেই শোধ করে দেওয়ার কথা ছিল । আমার জন্য যদি ও কোনও সমস্যায় পড়ত তাহলে আমাকে বা স্কুলের অন্য সহকারী শিক্ষকদের বিষয়টি একবার হলেও জানাত । কিন্তু হিমাদ্রিবাবু একবারও কারও সাথেই বিষয়টি নিয়ে স্কুলে আলোচনা করেননি । আমরা কোনওভাবে বিষয়টি জানতে পারলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যেত । ও বাড়ি না ফেরায় আমি ও আমার পরিবার যথেষ্ট চিন্তায় রয়েছি । আমরা চাই হিমাদ্রিবাবু দ্রুত বাড়ি ফিরে আসুন । তাহলেই সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে ।"


এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার ভি সোলেমন নেশাকুমার জানিয়েছেন, নিখোঁজ শিক্ষকের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে । তদন্ত শুরু হয়েছে । শিক্ষকের খোঁজে চলছে ।

Intro:পাঁশকুড়া,২২ নভেম্বর: গত ১৬ ই নভেম্বর পাঁশকুড়ার সাহড়দার বাসিন্দা সহকারি স্কুল শিক্ষক হিমাদ্রি শেখর সাস্মিগ্ৰহী বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান । তিনি স্থানীয় পুলশিটা ভোলানাথ বিদ্যানিকেতনের অংকের শিক্ষক। নিখোঁজ হওয়ার পর ছয় দিন কেটে গেলেও এখনো খোঁজ পাওয়া যায়নি তাঁর। পরিবারের অভিযোগ স্কুলের প্রধান শিক্ষক চঞ্চল কুমার মাইতিই হিমাদ্রী বাবুর নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার মূল কারণ। তাদের দাবি চঞ্চল বাবুই নিজের প্রয়োজনে হিমাদ্রির কাছ থেকে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। সেই টাকা বারবার প্রধান শিক্ষককে ফেরত চাওয়ায় তিনি মামলা করার হুমকি দিয়েছিলেন হিমাদ্রীকে। আর তারপরই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। যে কারণেই নিখোঁজ সহকারী শিক্ষকের বাবা আজ দুপুরে পাঁশকুড়া থানায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক চঞ্চল বাবুর বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা রুজু করেন। যদিও অপহরণের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক।Body:স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৭ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা দিয়ে হিমাদ্রি বাবু পুলশিটা স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসাবে কাজে যোগদান। তারপর থেকেই তিনি ওই স্কুলের গণিতের শিক্ষক হিসেবে কাজ করে চলেছেন। জানা গেছে প্রধান শিক্ষকের সাথে হিমাদ্রি বাবুর দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুব ভালোই ছিল। যে কারণে অতীতে বেশ কয়েকবার নিজেদের মধ্যে অর্থনৈতিক লেনদেন হয়েছে। চঞ্চল বাবু জানিয়েছেন ২০১৩ সালে হিমাদ্রি বাবুর কাছ থেকে নিজের ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে আট লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। তা ইতিমধ্যেই শোধ হয়ে গিয়েছে। পুনরায় ২০১৮ সালে হিমাদ্রি বাবুকে অনুরোধ করে নিজের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে পাঁচ লক্ষ টাকা তিনি ঋণ নেন সেই টাকার ইতিমধ্যেই প্রায় দু'লক্ষ টাকা শোধ করা হয়ে গিয়েছে বাকি রয়েছে তিন লক্ষ টাকা। আর যে টাকা নেই নাকি তৈরি হয়েছে দুই শিক্ষকের মধ্যে সমস্যা। এর পরেই গত শনিবার সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান হিমাদ্রি বাবু। ওই দিনই রাত দশটা নাগাদ পাঁশকুড়া থানায় নিখোঁজ দায়ের করা হয় পরিবারের তরফ থেকে। তার পরের দিন অর্থাৎ সোমবার সকালে তাঁর ঘর থেকে উদ্ধার হয় একটি সুইসাইড নোট। যাতে লেখা রয়েছে ,'আমার মৃত্যুর জন্য আমার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহাশয় চঞ্চল কুমার মাইতি দায়ী ।চঞ্চল কুমার মাইতি জন্যই আমাকে মৃত্যুর পথ বেছে নিতে হয়েছে।' সে কথা পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানোর পরে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেন পাঁশকুড়া থানার পুলিশ। সহকারী শিক্ষক নিখোঁজের ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। আর তারপরই স্কুলের প্রধান শিক্ষক চঞ্চল বাবুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় পরপর দুবার ডেকে পাঠানো হয় । পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে তিনি টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে নিলেও । কোথায় রয়েছেন হিমাদ্রি বাবু সে বিষয়ে কিছুই জানা যায়নি।Conclusion:ঘটনার পর ছয় দিন কেটে গেলেও ছেলেকে ফিরে না পেয়ে আজ পাঁশকুড়া থানায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা রুজু করেন হিমাদ্রীর বাবা নারায়ণ চন্দ্র সাস্মিগ্ৰাহী। তিনি বলেন, শনিবার সকাল নাগাদ স্কুলে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল হিমাদ্রি । আটটা পর্যন্ত তাকে ফোনে পাওয়া গেলেও তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি । সোমবার হিমাদ্রি লেখা একটি আমরা খুঁজে পাই । যেটাতে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে ছেলের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সেই টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন না স্কুলের প্রধান শিক্ষক। টাকা চাইতে গেলে প্রধান শিক্ষক ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিচ্ছিলেন। তারপরেই নিখোঁজ হয়ে যায় সে। আমাদের ধারণা প্রধান শিক্ষকই আমার ছেলেকে কিডন্যাপ করে লুকিয়ে রেখেছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। আমরা চাই পুলিশ অভিযুক্তকে কঠোর শাস্তি দিয়ে আমার ছেলেকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিক।


যদিও প্রধান শিক্ষক চঞ্চল কুমার মাইতি তার বিরুদ্ধে ওঠা অপহরণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আমি ওনার কাছ থেকে টাকা নিয়েছি এটা ঠিক। সেই টাকার অধিকাংশ টাকায় শোধ করে দিয়েছি। বাকি টাকা ও কয়েক মাসের মধ্যেই শোধ করে দেওয়ার কথা ছিল। আমার জন্য যদিও কোন সমস্যায় পড়তো তাহলে আমাকে বা স্কুলের অন্যান্য সহকারি শিক্ষকদের বিষয়টি একবার হলেও জানাতো। কিন্তু হিমাদ্রি বাবু একবারও কারো সাথেই বিষয়টি নিয়ে স্কুলে আলোচনা করেননি। আমরা কোনোভাবে বিষয়টি জানতে পারলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। ও বাড়ি না ফেরায় আমি ও আমার পরিবার যথেষ্ট চিন্তায় রয়েছি। আমরা চাই হিমাদ্রী বাবু দ্রুত বাড়ি ফিরে আসুক। তাহলেই সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার ভি সোলেমন নেশাকুমার জানিয়েছেন, নিখোঁজ শিক্ষকের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। শিক্ষকের খোঁজে চলছে।

For All Latest Updates

TAGGED:

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.