পাঁশকুড়া, 30 মে: "শুভেন্দু অধিকারীকে আমি দাদা হিসেবে এখনও সম্মান করি । ওনাকে অনুরোধ করতে চাই জনগণকে নিয়ে আন্দোলন করুন । তাহলে রাজনীতিতে টিকে থাকবেন, না হলে কোথাও আবর্জনাতে নিক্ষিপ্ত হয়ে যাবেন । আমি চাই আপনি রাজনীতিতে থাকুন । রাজনৈতিকভাবে লড়াই হোক । মিথ্যা কেস দিয়ে মানুষকে বেশি দিন আটকে রাখা যায় না ।" জেল থেকে বেরিয়েই শুভেন্দু অধিকারীকে আজ এভাবে কটাক্ষ করলেন পাঁশকুড়ার BJP নেতা আনিসুর রহমান ।
কখনও ধর্ষণ আবার কখনও গোলমাল পাকানোর অভিযোগে লাগাতার জেলে যেতে হয়েছে আনিসুরকে । তাঁকে জেলে আটকে রাখাটাই যেন টার্গেট হয়ে উঠেছিল তৃণমূলের । BJP-তে যোগদানের পর থেকেই জেলে কেটেছে বেশিরভাগ সময় । বুধবার একটি মামলায় জামিন পেয়ে মেদিনীপুর জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন তিনি । আজ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির দ্বিতীয় শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে পাঁশকুড়ায় বিজয় মিছিল করে BJP । আর সেই মিছিলের সামনে এদিন ছিলেন আনিসুর । মিছিল শেষে নিজের বাড়িতে এসে মুখোমুখি হন সাংবাদিকদের । তৃণমূলের ভবিষ্যৎ সঙ্কটজনক বলে দাবি করেন । আনিসুর বলেন, "জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ভালো লাগছে । কিন্তু এখনও অনেক BJP কর্মী, প্রায় 700 থেকে 800 জন মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলে আছে । তাদের ছেড়ে এসে আমার খুব একটা আনন্দ লাগছে না । তাদের বের করে আনতে হবে । শুধুমাত্র BJP করার অপরাধে মিথ্যে কেস দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে তাদের। পশ্চিমবঙ্গে গাঁজা ও রেপ কেস দেওয়া এখন শিল্পে পরিণত হয়ে গেছে । তৃণমূল কংগ্রেস এখন গুন্ডা চোর এবং ডাকাতদের দল হয়ে গেছে।"
তিনি আরও বলেন, "2017 সালের 13 ডিসেম্বর হাইকোর্টের মহামান্য বিচারপতি রায় দিয়েছিলেন পাঁশকুড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানকে তাড়ানো অসাংবিধানিক। পাঁশকুড়াই প্রথম পরিবর্তনের সূচনা করেছিল । আর পাঁশকুড়া আজ অবহেলিত। 70 কিলোমিটার দূর থেকে পাঁশকুড়া বনমালি কলেজের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী । পাঁশকুড়ার বিধায়ক হয়েছেন ফিরোজা বিবি । কেন পাঁশকুড়াতে কি উপযুক্ত লোক নেই? এর প্রতিবাদ আমি করেছিলাম। আজ মানুষ রায় দিয়েছে পাঁশকুড়ার জনগণ কার সঙ্গে আছে । শুভেন্দু অধিকারী অমিত শাহর সভার পরে সভা করে অহংকার করে বলেছিলেন কাঁথি লোকসভায় আড়াই লাখ ভোটের একটি ভোট কম হলে উনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন । আজ জেল থেকে বেরিয়ে এসে আপনাদের মাধ্যমে জানতে চাইছি উনি কি পদত্যাগ করেছেন ? রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছেন?"
আনিসুর বলেন, "আমি দিলীপ ঘোষ ও মুকুল রায়ের কাছে অনুরোধ করব BJP কর্মী হিসেবে দায়িত্ব নয়, শুধু আমাকে একটু ঘোরার সুযোগ করে দিন । শুভেন্দু অধিকারীর কত বড় ক্ষমতা আমি একটু দেখতে চাই । কারণ শুভেন্দু অধিকারীর মত এত অহংকারী জননেতা পশ্চিমবাংলা কেন, সারা পৃথিবীতে নেই । তমলুক, হলদিয়া লোকসভা কেন্দ্রে কীভাবে ভোট হয়েছে তা আমার জানা আছে । এই পাঁশকুড়ায় শুভেন্দু বলে গিয়েছিলেন BJP-কে ধুয়ে মুছে সাফ করে দেবেন । এখান থেকে 30 হাজারের বেশি লিড নেবেন । অথচ বাস্তবে জেলের ভেতরে থেকেও আনিসুর রহমান কী ক্ষমতা রাখে, মানুষ কার সঙ্গে আছে তা আজ প্রমাণিত । পুলিশকে নিয়ে যিনিই রাজনৈতিক লড়াই করতে গেছেন তারই পতন হয়েছে। হিটলার, CPI(M), লক্ষ্মণ শেঠের পতন হয়েছে । "