দিঘা, 15 জুন : খোলা হবে দিঘার মৎস্য নিলাম কেন্দ্র । 1 জুলাই থেকে খুলবে এই বাজার । প্রথমে 15 জুন থেকে খোলার কথা থাকলেও, কোরোনার আতঙ্কে কয়েকজন মৎস্যজীবী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের আপত্তি থাকার কারণে সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দেওয়া হয় ।
দিঘা মোহনা পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় সামুদ্রিক মাছের মৎস্য নিলাম কেন্দ্র । প্রতিদিন এই রাজ্য ও ভিন রাজ্যে থেকে বহু মানুষ এখানে আসেন । শংকরপুর, পেটুয়াঘাট, শৌলা এই চার মৎস্য বন্দরে প্রায় 4 থেকে সাড়ে 4 হাজারের বেশি ট্রলার রয়েছে । এই ট্রলারগুলিতে কমপক্ষে 10 থেকে 12 জন মৎস্যজীবী মৎস্য শিকারে যান । মাছ নামানো থেকে বিক্রি করা পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষের রুজি-রুটি চলে এই ব্যবসায় । সেই কারণে স্থানীয় বাসিন্দা ও মৎস্যজীবীদের একাংশের অভিযোগ, এই সকল এলাকায় হাজার হাজার মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে । যার কারণে ছড়াতে পারে কোরোনা । তাই তাঁরা আরও কিছুদিন পর মৎস্য শিকার শুরু হোক এটাই চান । আবার আর এক শ্রেণির মৎস্যজীবীরা 15 জুন থেকে মৎস্য শিকারে যেতে অনড় । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সব পক্ষকে নিয়ে কয়েকদিন আগে মহাকুমা শাসক ,মৎস্য দপ্তর ও স্বাস্থ্য দপ্তর, পুলিশ প্রশাসন কাঁথি মহকুমা শাসকের সভা কক্ষে একটি বৈঠক হয় । কিন্তু বৈঠকে সম্পূর্ণ সমাধানের সূত্র না মেলায়, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব মৎস্যজীবী সংগঠকদের বলা হয়, স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করে মৎস্য শিকারের যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে । একই সঙ্গে শনিবার পেটুয়াঘাটে প্রায় চার হাজার স্থানীয় বাসিন্দারা বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেন যে সরকারি নির্দেশ মেনে 15 জুন থেকেই মৎস্য শিকারে যাওয়া হবে । এই বিষয়ে পেটুয়াঘাট মৎস বন্দর আধিকারিক বলেন, “ আমরা এখানে মৎস্য নিলাম কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছি । যে কোনও মুহূর্তের এখানে নিলাম করা যাবে । কিন্তু দিঘা ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে একটি বৈঠক করা হয় । সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তারা 15 জুনের বদলে 1 জুলাই থেকে মৎস্য নিলাম কেন্দ্র খুলবে ।
দিঘা ফিশারম্যান অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রণব কর বলেন, “ সবার সঙ্গে আলোচনা করে ও স্থানীয় বাসিন্দাদের আপত্তিকে গুরুত্ব দিয়ে 1জুলাই থেকে পাইকারি মাছের বাজার খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । তা ছাড়া অনেক ট্রালার ও ফিসিং বোটের মালিক এখন সমুদ্র যাত্রার প্রস্তুতি নিতে পারেনি । তবে যদি কেউ 15 তারিখ থেকে নিজের ইচ্ছায় মাছ ধরতে যান কেউ আপত্তি করবে না । তবে সেই মাছ কোথায় কাকে বিক্রি করবেন তা তাঁদের নিজেদের দায়িত্ব । কারণ 1 জুলাইয়ের আগে দিঘা মোহনায় পাইকারি মাছের বাজার খুলবে না ।" সহ মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগ বলেন, “দিঘা মোহনায় মৎস্যজীবীদের মিটিং হয়েছিল বলে শুনেছি । মৎস্য দপ্তর থেকে 15 জুন মাছ ধরার সরকারি নির্দেশ রয়েছে । তবে মৎস্যজীবীরা কবে থেকে মাছ ধরতে যাবেন ও বাজার খুলবে তা তারা নিজেরাই ঠিক করবেন । তবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্যে সকলকে বলা হয়েছে । মাছ ধরতে যাওয়া কিংবা বাজার খোলার আগে বোট ও বাজারগুলি স্যানিটাইজ় করতে হবে । সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক ব্যবহার করার জন্যে বলা হয়েছে সকলকে ।"