পাঁশকুড়া, 31 মার্চ : ভোটের উত্তাপ ছড়াতেই রাজ্যের কোথাও নকুলদানা, কোথাও মিহিদানা, কোথাও বা চিনিজল বা লেবুজলের কথা বার বার উঠে আসছে রাজনৈতিক নেতাদের মুখে। এই ক্ষেত্রে সবাইকে টপকে সবথেকে বেশি প্রচার কেড়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর নকুলদানা দেওয়ার নির্দেশকে কেন্দ্র করে কমিশনকে মাঠে নামতে হয়েছে। এই বিষয়ে নাম না করে নিজের অসন্তোষের কথা জানালেন ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী দেব। নকুলদানা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম।"
গতকাল বিকেলে পাঁশকুড়ায় কর্মিসভা করে তৃণমূল। তাতে দেব ছাড়াও হাজির ছিলেন সৌমেন মহাপাত্র, বিধায়ক ফিরোজ়া বিবি, পাঁশকুড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান নন্দ মিশ্র সহ অন্যরা। কর্মিসভা শেষে নকুলদানা, গুড় বাতাসা সংক্রান্ত প্রশ্নে দেব বলেন, "এই বিষয়ে আমার বিশেষ কিছু বলার নেই। একটি কথা আছে, চ্যারিটি বিগিনস এট হোম। আমি যদি নিজেকে না পরিবর্তন করি তাহলে পৃথিবীকে পরিবর্তন করতে পারব না। নিজেকে প্রথম বদলাতে হবে। মানুষ দেখুক, শিখুক। কারোর ভালো লাগতে পারে। না লাগতে পারে। আমার কিছু করার নেই।"
কর্মিসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, "গত সাত বছর হল আমাদের সরকার এই রাজ্য চালাচ্ছে। ২০১১ সালের আগে বছরে কৃষক পরিবারের আয় ছিল ৯১ হাজার টাকা। এটা আমি বলছি না, এটা তথ্য বলছে। আপনারা নিজেদের ফোনে গুগল সার্চ করলে জানতে পারবেন। সাত বছর পর এই রাজ্যে কৃষক পরিবারের আয় বেড়ে হয়েছে বার্ষিক ৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ দিদির সময়ে কৃষক পরিবারের আয় তিনগুণ বেড়েছে। ২০১৪ সালের আগে ভারতবর্ষে কৃষক পরিবারের বছরে আয় ছিল বার্ষিক ৭১ হাজার টাকা। কেন্দ্রের সরকার বলেছিল এই আয় দ্বিগুণ হবে। কিন্তু আজ ২০১৯ সালে আয় একই আছে।"
সাংসদ হিসেবে নিজের এলাকায় দেব পাঁচবারও যাননি বলে তোপ দেগেছিলেন ভারতী। জবাবে দেব সাংবাদিকদের বলেন, "আপনারা ওঁর চেয়ে বেশি জানেন। উনি যখন প্রশ্ন করবেন আপনারা বলে দিন না দিদি ও এসেছিল। আমি কাউকে ছোটো করে ভোট চাইতে আসিনি। ভোটে দাঁড়িয়েছি বলে অন্য প্রার্থীরা খারাপ, অন্য দল খুব বাজে, আমি এই কথা বলতে পারব না। কারণ, আমি এই রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। এখন সকলের হাতে ভালো ফোন রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, সকলে জানে কোনটা ঠিক, আর কোনটা ভুল। আমি চাই ২০১৯ সালের নির্বাচন উন্নয়ন নিয়ে হোক। মানুষের কাছে কে ছিল, কে রয়েছে সেটা নিয়ে হোক। কোন দলের কর্মীরা মানুষের পাশে ছিল তা নিয়ে হোক। মানুষকে বোকা বানানো যাবে না। ভোটারদের বোকা বানানো যাবে না। আপনি কী করবেন সেটা বলুন। যে দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন সেই দল কী কী করেছে সেটা নিয়ে বলুন। সংসদে আমার উপস্থিতি কম। কিন্তু মন প্রাণ দিয়ে ঘাটাল লোকসভার মানুষের পাশে ১০০ শতাংশ উপস্থিত থাকার চেষ্টা করেছি। ঘাটালে যখন বন্যা হয়েছিল তখন আমি আমার বন্ধুদের থেকে টাকা সংগ্রহ করে ট্রাক ট্রাক সামগ্রী নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে আমি সংসদে বাংলায় বলেছি। আগামী দিনে যদি জিতি আবারও বাংলায় এই কথা তুলে ধরব। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান পাশ হলেও টাকা বরাদ্দ হয়নি। আগামী দিনে ওই প্রকল্পে টাকা আনবই। আমি চাই এবারের ভোট উন্নয়নের নিরিখে হোক।"