মেদিনীপুর, 18 এপ্রিল : ফলন ভালো হয়েছে । কিন্তু, লকডাউনে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের আমদানি-রপ্তানিতে ছাড় মিললেও সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি পানের ক্ষেত্রে । ফলে বরজেই পচছে পান । অথবা ফেলে দেওয়া হচ্ছে রাস্তায় । যার জেরে ক্ষতির মুখে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার 40 হাজারেরও বেশি পান চাষি ।
পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর, এগরা, কাঁথি, ভগবানপুর, পটাশপুর, খেজুরিসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় বিঘার পর বিঘা জমিতে পান চাষ করা হয় । এর সঙ্গে যুক্ত 40 হাজারেরও বেশি চাষি । এখান থেকে পান দিল্লি, লখনউ, বেনারস-সহ বিভিন্ন রাজ্যে রপ্তানি হয় । এখান থেকে বিদেশেও পান রপ্তানি করা হয় । কিন্তু লকডাউনে বন্ধ সবই ।
অন্যদিকে এবছর পানের ফলন ভালো হয়েছে । কিন্তু রপ্তানি বন্ধ থাকায় ও চাহিদা সেরকম না থাকায় বরজেই পান পচে যাচ্ছে । কিছু ক্ষেত্রে পান ফেলে দেওয়া হচ্ছে । ফলে আশঙ্কায় রয়েছে পান চাষিরা । কারণ তাঁদের মতে, যে হারে পানের ক্ষতি হচ্ছে তাতে যদি সরকার কোনও উদ্যোগ নেয় তবেই চাষিদের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে ।

এবিষয়ে রামনগরের এক পান চাষি ত্রিলোচন সামান্ত বলেন, "এই এলাকায় কলকারখানা নেই । নেই কোনও রেল স্টেশন । এই পানের উপরই এখানকার মানুষের জীবিকা নির্ভর করে । আমি রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কাছে অনুরোধ করছি । পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে আমরা ভিন রাজ্যে পান পাঠাতে পারছি না । তাই খুব অসুবিধায় পড়তে হয়েছে । আর যদি বেশিদিন এইরকমভাবে চলে তাহলে খেতে পাব না । অনাহারে দিন কাটাতে হবে ।"
রামনগর 1 নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি নিতাইচরণ বলেন, "40 হাজারের মতো পরিবার এই চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত । চারিদিকে লকডাউনের জন্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যাপক হারে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে তারা । অধিকাংশ চাষি সমবায় সমিতি থেকে লোন করে এই চাষ করেন । তাই আমরা ব্লক প্রশাসনের তরফে জেলা প্রশাসনকে সমস্ত বিষয় জানিয়েছি । সমবায় সমিতির লোন মকুবের আবেদন জানিয়েছি । একইসঙ্গে উৎপাদিত পান বিক্রির ব্যবস্থা করারও আবেদন জানিয়েছি ।"
