ETV Bharat / state

পদ্মফুলে শিশিরবিন্দু, ভোটবাজারে তপ্ত মেদিনীপুর লোকাল

author img

By

Published : Mar 21, 2021, 4:53 PM IST

নন্দীগ্রাম-সহ গোটা মেদিনীপুরে অধিকারীদের দাপট বিলক্ষণ বোঝেন মমতা ৷ এটাও বোঝেন, দাদার অনুগামীরা ইভিএমে কতটা প্রভাব ফেলতে পারেন ৷ সেই কারণেই বার বার ছুটে যেতে হচ্ছে মমতাকে ৷

West Bengal Assembly Election 2021
ছবি

কলকাতা ও মেদিনীপুর, 21 মার্চ : তপ্ত হচ্ছে রাজনীতির ময়দান ৷ প্রথম দফার ভোট শুরু হতে বাকি আর মাত্র এক সপ্তাহ ৷ আর ভোটের মুখে সবুজ-গেরুয়া দুই শিবিরই এখন উঠে পড়েছে মেদিনীপুর লোকালে ৷ রবিবাসরীয় মেদিনীপুর আজ যেন দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে ৷ যেন জোড়াফুল আর পদ্মফুলের এক অদৃশ্য বেড়াজাল ৷ কেউ কাউকে এক বিন্দুও পায়ের তলার মাটি ছাড়তে নারাজ ৷

একদিকে এগরায় সভা করলেন শাহ ৷ পাল্টা সভা মমতারও ৷ একটি নয় ৷ একাধিক ৷ প্রথমটি দক্ষিণ কাঁথির কেওড়ানালায় ৷ দ্বিতীয়টি উত্তর কাঁথিতে ৷ আর সব শেষে নন্দকুমারে ৷ চলল আক্রমণ, প্রতি-আক্রমণের পালা ৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন, বর্তমান রাজ্য রাজনীতির যা বাতাবরণ তাতে নীলবাড়ির কুর্সি দখলের লড়াইয়ে দুই মেদিনীপুরই বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে ৷ আর অখণ্ড মেদিনীপুরের ভোট কোনদিকে পড়বে, তার অনেকটাই আবর্তিত হচ্ছে নন্দীগ্রামকে ঘিরে ৷

নিঃসন্দেহে এবারের ভোটে সব থেকে হাইভোল্টেজ কেন্দ্র নন্দীগ্রাম ৷ একদিকে মমতা ৷ আর উল্টো দিকে তাঁর একসময়ের বিশ্বস্ত সেনাপতি শুভেন্দু ৷ নন্দীগ্রামে প্রতি মুহূর্তে বদলাচ্ছে রাজনৈতিক সমীকরণ ৷ আজ যখন নেত্রী মেদিনীপুরকে গদ্দারমুক্ত করার ডাক দিচ্ছেন, তখন অমিত শাহর পদ্মমঞ্চে দেখা মিলল শিশিরের ৷ জল্পনা ছিল অনেকদিন ধরেই ৷ অবশেষে বিজেপির সভায় দেখা মিলল তাঁর ৷ বিজেপির হয়ে দু'চারটে কথাও বললেন ৷ প্রকাশ্যে জানিয়ে দিলেন, অধিকারী পরিবার দিলীপ-কৈলাসদের পাশেই থাকবে ৷

শেষ পর্যন্ত কোন দিকে মোড় নেবে মেদিনীপুর ?

আরও পড়ুন : দু-আড়াই মাস ধরে মানসিক নির্যাতন চলছে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক শিশির

নন্দীগ্রাম মানেই অধিকারী গড় ৷ শুধু নন্দীগ্রাম নয়, গোটা জেলাটাই শুভেন্দুদের মুক্তাঙ্গন ৷ বাংলার সবথেকে হেভিওয়েট রাজনৈতিক পরিবার হিসেবে মমতা-অভিষেকের সঙ্গে সঙ্গেই অধিকারী পরিবারেরও নামডাক রয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে নন্দীগ্রামে মমতা বনাম শুভেন্দু ৷ একদিকে নেত্রী আর একদিকে পুরানো সেনাপতি ৷ স্বাভাবিকভাবেই স্নায়ুর চাপে রয়েছে উভয় পক্ষই ৷

তাই আজ অধিকারী গড়ে ঢুকেই নাম না করে তাঁদের নিশানা করলেন নেত্রী ৷ আনলেন একের পর এক অভিযোগ ৷ একটা সময় নাকি মমতাকেও কাঁথি, এগরা, পটাশপুরে সভা করতে দেওয়া হত না ৷ কারণ, সেখানে নাকি একটি পরিবারেরই জমিদারি চলত ৷ তাদের যাঁকে পছন্দ হত না, তাঁদের এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হত না ৷ নির্বেদ রায়ের হারের পিছনেও নাম না করা সেই জমিদারি পরিবারের হাত ছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি ৷

আসলে নন্দীগ্রাম-সহ গোটা মেদিনীপুরে অধিকারীদের দাপট বিলক্ষণ বোঝেন মমতা ৷ আর এটাও বোঝেন, দাদার অনুগামীরা ইভিএমে কতটা প্রভাব ফেলতে পারেন ৷ সেই কারণেই বার বার ছুটে যেতে হচ্ছে মমতাকে ৷ কাছে টানার চেষ্টা করছেন মেদিনীপুরবাসীকে ৷

আর এদিকে তখন এগরার শাহি সভায় বিজেপির শক্তি বাড়াচ্ছেন শিশির ৷ মেদিনীপুরে তৃণমূলের কথা উঠলেই সবার আগে নাম আসে শিশির অধিকারীর ৷ দীর্ঘদিন মেদিনীপুরকে অভিভাবকের মতো আগলে রেখেছিলেন বর্ষীয়ান নেতা ৷ মেদিনীপুরে তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি শক্ত করার পিছনেও অনেকটাই অবদান ছিল তাঁর ৷

আরও পড়ুন : শুভেন্দুকে শেষ করতেই নন্দীগ্রামে মমতা, বিস্ফোরক শিশির

শুভেন্দু দলত্যাগী হওয়ার পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছিল ৷ তৃণমূলের কোনও সভাতে দেখাও মিলত না শিশিরের ৷ বিগত কয়েকমাস ধরে তাঁর উপর মানসিক নির্যাতন চলত বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন ৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই বলছেন, এতকিছুর পরেও বর্ষীয়ান নেতা হিসেবে নব্য তৃণমূলীরাও যথেষ্ট সমীহ করে চলতেন শিশিরকে ৷

আর আজ বিজেপির মঞ্চে দাঁড়িয়ে সেই শিশিরই স্পষ্ট করে দিলেন, "এই জেলার রাজনীতিতে সর্বত্রই আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, এখনও আছি ৷ অনেক যুক্তি, তর্ক, বিতণ্ডা হয়েছে ৷ অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে বলছি, ব্যথিত হৃদয়ে বলছি, আমাকে যে ভাবে তাড়ানো হয়েছে, যে ভাবে আমাদের পরিবারকে নিগৃহীত করার চেষ্টা করা হয়েছে, তা ইতিহাসে লেখা থাকবে ৷"

নন্দীগ্রামে যখন প্রতি মুহূর্তে রাজনৈতিক সমীকরণ বদল হচ্ছে, তখন পদ্মফুলে শিশিরবিন্দু কতটা প্রভাব ফেলবে, সেই নিয়েই নতুন করে শুরু হয়েছে জল্পনা ৷

কলকাতা ও মেদিনীপুর, 21 মার্চ : তপ্ত হচ্ছে রাজনীতির ময়দান ৷ প্রথম দফার ভোট শুরু হতে বাকি আর মাত্র এক সপ্তাহ ৷ আর ভোটের মুখে সবুজ-গেরুয়া দুই শিবিরই এখন উঠে পড়েছে মেদিনীপুর লোকালে ৷ রবিবাসরীয় মেদিনীপুর আজ যেন দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে ৷ যেন জোড়াফুল আর পদ্মফুলের এক অদৃশ্য বেড়াজাল ৷ কেউ কাউকে এক বিন্দুও পায়ের তলার মাটি ছাড়তে নারাজ ৷

একদিকে এগরায় সভা করলেন শাহ ৷ পাল্টা সভা মমতারও ৷ একটি নয় ৷ একাধিক ৷ প্রথমটি দক্ষিণ কাঁথির কেওড়ানালায় ৷ দ্বিতীয়টি উত্তর কাঁথিতে ৷ আর সব শেষে নন্দকুমারে ৷ চলল আক্রমণ, প্রতি-আক্রমণের পালা ৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন, বর্তমান রাজ্য রাজনীতির যা বাতাবরণ তাতে নীলবাড়ির কুর্সি দখলের লড়াইয়ে দুই মেদিনীপুরই বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে ৷ আর অখণ্ড মেদিনীপুরের ভোট কোনদিকে পড়বে, তার অনেকটাই আবর্তিত হচ্ছে নন্দীগ্রামকে ঘিরে ৷

নিঃসন্দেহে এবারের ভোটে সব থেকে হাইভোল্টেজ কেন্দ্র নন্দীগ্রাম ৷ একদিকে মমতা ৷ আর উল্টো দিকে তাঁর একসময়ের বিশ্বস্ত সেনাপতি শুভেন্দু ৷ নন্দীগ্রামে প্রতি মুহূর্তে বদলাচ্ছে রাজনৈতিক সমীকরণ ৷ আজ যখন নেত্রী মেদিনীপুরকে গদ্দারমুক্ত করার ডাক দিচ্ছেন, তখন অমিত শাহর পদ্মমঞ্চে দেখা মিলল শিশিরের ৷ জল্পনা ছিল অনেকদিন ধরেই ৷ অবশেষে বিজেপির সভায় দেখা মিলল তাঁর ৷ বিজেপির হয়ে দু'চারটে কথাও বললেন ৷ প্রকাশ্যে জানিয়ে দিলেন, অধিকারী পরিবার দিলীপ-কৈলাসদের পাশেই থাকবে ৷

শেষ পর্যন্ত কোন দিকে মোড় নেবে মেদিনীপুর ?

আরও পড়ুন : দু-আড়াই মাস ধরে মানসিক নির্যাতন চলছে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক শিশির

নন্দীগ্রাম মানেই অধিকারী গড় ৷ শুধু নন্দীগ্রাম নয়, গোটা জেলাটাই শুভেন্দুদের মুক্তাঙ্গন ৷ বাংলার সবথেকে হেভিওয়েট রাজনৈতিক পরিবার হিসেবে মমতা-অভিষেকের সঙ্গে সঙ্গেই অধিকারী পরিবারেরও নামডাক রয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে নন্দীগ্রামে মমতা বনাম শুভেন্দু ৷ একদিকে নেত্রী আর একদিকে পুরানো সেনাপতি ৷ স্বাভাবিকভাবেই স্নায়ুর চাপে রয়েছে উভয় পক্ষই ৷

তাই আজ অধিকারী গড়ে ঢুকেই নাম না করে তাঁদের নিশানা করলেন নেত্রী ৷ আনলেন একের পর এক অভিযোগ ৷ একটা সময় নাকি মমতাকেও কাঁথি, এগরা, পটাশপুরে সভা করতে দেওয়া হত না ৷ কারণ, সেখানে নাকি একটি পরিবারেরই জমিদারি চলত ৷ তাদের যাঁকে পছন্দ হত না, তাঁদের এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হত না ৷ নির্বেদ রায়ের হারের পিছনেও নাম না করা সেই জমিদারি পরিবারের হাত ছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি ৷

আসলে নন্দীগ্রাম-সহ গোটা মেদিনীপুরে অধিকারীদের দাপট বিলক্ষণ বোঝেন মমতা ৷ আর এটাও বোঝেন, দাদার অনুগামীরা ইভিএমে কতটা প্রভাব ফেলতে পারেন ৷ সেই কারণেই বার বার ছুটে যেতে হচ্ছে মমতাকে ৷ কাছে টানার চেষ্টা করছেন মেদিনীপুরবাসীকে ৷

আর এদিকে তখন এগরার শাহি সভায় বিজেপির শক্তি বাড়াচ্ছেন শিশির ৷ মেদিনীপুরে তৃণমূলের কথা উঠলেই সবার আগে নাম আসে শিশির অধিকারীর ৷ দীর্ঘদিন মেদিনীপুরকে অভিভাবকের মতো আগলে রেখেছিলেন বর্ষীয়ান নেতা ৷ মেদিনীপুরে তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি শক্ত করার পিছনেও অনেকটাই অবদান ছিল তাঁর ৷

আরও পড়ুন : শুভেন্দুকে শেষ করতেই নন্দীগ্রামে মমতা, বিস্ফোরক শিশির

শুভেন্দু দলত্যাগী হওয়ার পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছিল ৷ তৃণমূলের কোনও সভাতে দেখাও মিলত না শিশিরের ৷ বিগত কয়েকমাস ধরে তাঁর উপর মানসিক নির্যাতন চলত বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন ৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই বলছেন, এতকিছুর পরেও বর্ষীয়ান নেতা হিসেবে নব্য তৃণমূলীরাও যথেষ্ট সমীহ করে চলতেন শিশিরকে ৷

আর আজ বিজেপির মঞ্চে দাঁড়িয়ে সেই শিশিরই স্পষ্ট করে দিলেন, "এই জেলার রাজনীতিতে সর্বত্রই আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, এখনও আছি ৷ অনেক যুক্তি, তর্ক, বিতণ্ডা হয়েছে ৷ অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে বলছি, ব্যথিত হৃদয়ে বলছি, আমাকে যে ভাবে তাড়ানো হয়েছে, যে ভাবে আমাদের পরিবারকে নিগৃহীত করার চেষ্টা করা হয়েছে, তা ইতিহাসে লেখা থাকবে ৷"

নন্দীগ্রামে যখন প্রতি মুহূর্তে রাজনৈতিক সমীকরণ বদল হচ্ছে, তখন পদ্মফুলে শিশিরবিন্দু কতটা প্রভাব ফেলবে, সেই নিয়েই নতুন করে শুরু হয়েছে জল্পনা ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.