কোলাঘাট, 17 অগাস্ট : বৃষ্টির জেরে নদীর বাঁধ ভাঙার আশঙ্কায় আজ রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের রূপনারায়ণ নদীপাড় এলাকার ঘটনা ৷
গতরাত থেকে বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা । জেলা সদর তমলুক থেকে শুরু করে পাঁশকুড়া কোলাঘাট সহ বিভিন্ন ব্লকে রাস্তা ও বাড়ি জলমগ্ন হয়েছে । এর জেরে বিপর্যস্ত জনজীবন । টানা বৃষ্টির জেরে কোলাঘাট ব্লকের দেনান গ্রামে রূপনারায়ণ নদীর পাড়ে প্রায় কুড়ি ফুট এলাকা ফাটল দেখা যায় । সকাল থেকে থেকে অতি বৃষ্টির কারণে বাড়তে শুরু করে ফাটলের গভীরতা ৷ যে কোন মুহূর্তে নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হতে পারে একের পর এক গ্রাম । তাই আজ সেখানের স্থানীয় বাসিন্দারা বৃষ্টির মধ্যেই কোলাঘাট নদীপাড়ের রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে । খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে আসে কোলাঘাট থানার পুলিশ । তারা দ্রুত রাস্তা সারাইয়ের আশ্বাস দেওয়ার পর ঘণ্টা দুয়েক পরে বিক্ষোভ উঠ যায় ৷ কিন্তু আপাতত ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোলাঘাটের দেনান গ্রামে রূপনারায়ণ নদীপাড়ের রাস্তাটি বেশকিছুদিন ধরে বেহাল অবস্থায় রয়েছে । প্রশাসনকে এবিষয়ে বারবার জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি । ভারী বর্ষণে জন্য গতরাতে নদীপাড়ের প্রায় 20 ফুট এলাকার রাস্তায় ফাটল দেখা যায় । সকাল থেকে থেকে ব্যাপক বৃষ্টির জেরে ফাটলের গভীরতা আরও বেড়ে যায় । বৃষ্টির ফলে নদীর জল স্তর বাড়লে যে কোনও সময় নদীবাঁধ ভেঙে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে । ঘটনাস্থান থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র । বাঁধ ভাঙন রোধ করা না হলে ক্ষতি হতে পারে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের । বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি । তাই আজ সকাল থেকে তারা রাস্তা বন্ধ করে অবরোধ দেখা শুরু করে ৷
স্থানীয় বাসিন্দা সমীর হোসেন বলেন, "মাস দেড়েক আগেই নদী বাঁধের ভাঙনের কথা মহাকুমা অধিকারিককে জানিয়েছিলাম । কথা দিয়েছিলেন এক মাসের মধ্যেই সমস্যার সমাধান করবেন । কিন্তু তা আজও হয়নি । তাই আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তা অবরোধ করেছি । প্রশাসনকে 15 দিন সময় দিলাম । যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয় পরে আমরা রাস্তা কেটে বৃহত্তর আন্দোলনে যাব ।"
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, "বিষয়টি নজরে রয়েছে । ঘটনাস্থান পরিদর্শনের জন্য সেচ দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । দ্রুততার সঙ্গে নদীবাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হবে । স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধের জন্য ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা গ্রহণ করা শুরু হয়েছে ।"