চণ্ডীপুর, ৬ অগাস্ট : একটি অনলাইন মার্কেটিং সংস্থার বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ । ওই সংস্থার প্রধান কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ কয়েকশো আমানতকারীর । পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের ঘটনা । আজ সকালে চণ্ডীপুরের বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া সংস্থার কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখান আমানতকারীরা । তাঁদের অভিযোগ, ছয় মাস ধরে সংস্থার কাছ থেকে কমিশনের কোনও টাকা পাননি তাঁরা । কখনও অডিট, আবার কখনও সিস্টেম আপগ্রেডেশনের নামে টাকা না দেওয়ার টালবাহানা চলছে । ঘটনায় সংস্থার প্রধান বিকাশ দলপতি ও মধুমিতা দলপতিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন আমানতকারীরা ।
জানা গেছে, রোজ 1 ঘণ্টা মোবাইল ফোনে বিজ্ঞাপন দেখলেই মাসের শেষে টাকা রোজগারের দিশা দেখিয়েছিল ওই সংস্থা । সঙ্গে ছিল গাড়ি, বিদেশ ভ্রমণের মতো লোভনীয় প্রলোভন । আর এই সুযোগ পাওয়ার জন্য আগে থেকে জমা করতে হচ্ছিল মোটা অঙ্কের টাকা । আরও 4 জনকে কাজে যুক্ত করতে পারলে নিজের টাকা সম্পূর্ণ ফেরত দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল সংস্থার পক্ষ থেকে । সেই নিয়মেই নতুন সদস্যদের কাজে যুক্ত করতেন আমানতকারীরা । কিন্তু সংস্থার তরফে কমিশনের টাকা না পাওয়ায় বিপদে পড়েন তাঁরা । তাই টাকার দাবিতে আজ বিক্ষোভ দেখান আমানতকারীরা ।
এই সংস্থার কায়দা-কৌশল সবই চিটফান্ড সংস্থার মতো । কিন্তু এই চিটফান্ডের সীমাবদ্ধতা পুরোপুরি ভার্চুয়াল দুনিয়ায় । এজেন্সি নেওয়ার জন্য 6 হাজার, 12 হাজার ও 29 হাজার টাকার তিনটি প্যাকেজ ছিল । এই সংস্থার নামে আগেও একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে । খুব অল্প দিনেই বাংলা ছাড়িয়ে প্রতিবেশী রাজ্যেও ব্যবসা শুরু করেছিল এই সংস্থা । বাংলাতে সংস্থার সদস্য সংখ্যা 8 লাখ । আর এই সদস্যদের কাছ থেকে 960 কোটি টাকা লুট করেছে তারা । কিছুদিন আগেই সংস্থার এক পান্ডা সহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছিল খড়গপুর থানার পুলিশ । অন্যদিকে, বিকাশ কুমার দলপতি ও মধুমিতা দলপতির নামে আগে থেকেই রয়েছে কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ । তাই অমিত কুমার ভুঁইঞা নামে এক ব্যক্তির নামে খোলা হয়েছিল ওই সংস্থা । কয়েকজনকে কো-ফাউন্ডার বানিয়ে শুরু করেছিল জালিয়াতির ব্যবসা ।
আমানতকারী অনুপ কুমার দাস বলেন, "সংস্থার প্রধানের কথা মতো মার্কেট থেকে টাকা তুলে আমরা পুরো ফেঁসে গেছি । প্রায় এক কোটি টাকা আটকে রয়েছে আমার । ফেব্রুয়ারি, মার্চ মাসে নতুন সদস্যদের জয়েন করানো হয়েছে । অথচ সেই টাকা আমরা এখনও পাইনি । চণ্ডীপুর থানায় বিকাশ দলপতি ও মধুমিতা দলপতি সহ অন্য আধিকারিকদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ জানিয়েছি । আমরা চাই সরকার অবিলম্বে টাকাগুলিকে উদ্ধার করে ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারী ও সাধারণ মানুষকে ফিরিয়ে দিক ।"
চণ্ডীপুর থানার OC ইমরান মোল্লা বলেন, "ইতিমধ্যেই এই আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়েছে । বিষয়টি নিয়ে আমরাও খোঁজ খবর চালাচ্ছি ।"