বর্ধমান, 26 অগস্ট : পূর্ব বর্ধমানে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী অশোক মাঝি খুনের ঘটনায় স্পষ্ট গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছাপ ৷ তৃণমূল কর্মীকে খুনের অভিযোগে দলেরই এক নেতা শিবশঙ্কর ঘোষকে গ্রেফতার করল বর্ধমান থানার পুলিশ ৷ তৃণমূল নেতা গ্রেফতার হওয়ায় নতুন করে শহরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেল নাগাদ বর্ধমান পৌরসভার 6 নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলর সৈয়দ মহম্মদ সেলিমের উপর হামলা চালায় দলেরই অন্য এক গোষ্ঠীর সদস্যরা ৷ লাঠি, রড নিয়ে তাঁর উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ ৷ তাঁর মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করা হয়। সেই সময় সৈয়দ মহম্মদ সেলিমকে বাঁচানোর জন্য ছুটে যান তৃণমূলকর্মী অশোক মাঝি এবং তাঁর স্ত্রী চন্দনা মাঝি । তাঁদেরও মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতা শিবশঙ্কর ঘোষের অনুগামীদের বিরুদ্ধে ।
ওই ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় অশোক মাঝিকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৷ কিন্তু, মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালেই অশোক মাঝির মৃত্যু হয় । এর পরেই সৈয়দ মহম্মদ সেলিম গোষ্ঠীর কর্মীরা অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে ৷ এই ঘটনায় মৃতের স্ত্রী চন্দনা মাঝি জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল রব, আইএনটিটিইউসি’র প্রাক্তন জেলা সভাপতি ইফতিকার আহমেদ, প্রাক্তন জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা তৃণমূল নেতা শিবশঙ্কর ঘোষ সহ মোট এগারো জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ।
আরও পড়ুন : Bomb Blast : বারাবনিতে বিস্ফোরণে উড়ল বিজেপি কর্মীর বাড়ি
পুলিশ ওই ঘটনায় মোট চারজনকে গ্রেফতার করেছিল । এর পর গতকাল রাতে তৃণমূল নেতা শিবশঙ্কর ঘোষকেও গ্রেফতার করে পুলিশ । শিবশঙ্কর ঘোষ বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক খোকন দাসের অনুগামী হিসেবে পরিচিত ৷ যদিও বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূল বিধায়ক ৷ এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশের অভিযোগ, বিধায়ক অনুগামীদের মিথ্যে খুনের মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে ৷ তাদের অভিযোগ, বর্ধমান পৌরসভার উপপ্রশাসক পদে বসার পরেই আইনুল হক সহ বেশ কিছু তৃণমূল নেতা কর্মী বিধায়ককে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছেন । তাই এখন তাঁদের ফাঁসানোর চক্রান্ত করা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন :Dilip Ghosh : বিরোধীদের কোনও সরকারি পদে রাখতে চায় না, তৃণমূলকে আক্রমণ দিলীপের
যদিও এই ঘটনায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ মানতে নারাজ পূর্ব বর্ধমানে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস ৷ তিনি বলেন, ‘‘এখানে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ব্যাপার নেই । পাড়ার একটা গন্ডগোলে এক তৃণমূলকর্মী খুন হয়েছেন । তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে । সেখানে যদি পুলিশ মনে করে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে ৷ তাহলে পুলিশ সেটা করবে । কারণ রাজ্যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত আছে । এখানে দোষী হলে নেতা, মন্ত্রী, বিধায়ক কেউ ছাড়া পায় না ৷’’