বর্ধমান, 13 নভেম্বর : ডাকাতিয়া কালি নামে সুপরিচিত দুর্লভা কালী । বর্ধমান শহরের লাকুরডি এলাকায় 2 নম্বর জাতীয় সড়কের পাশেই প্রায় সাড়ে তিনশো বছরের প্রাচীন দুর্লভা কালীর মন্দির । আগে এলাকাটি ছিল বন-জঙ্গলে ভরতি । প্রচলিত আছে ডাকাতেরা নাকি ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে মায়ের মন্দিরে পুজো দিয়ে যেতেন । এখানে তিনিই কালী, তিনিই দুর্গা, তিনিই বিপত্তারিণী আবার তিনিই চণ্ডী । একই মুর্তি নানাভাবে পূজিত হয় দুর্লভ কালী মন্দিরে ।পরবর্তীকালে বর্ধমান মহারাজা বিজয় চাঁদের সহযোগিতায় মন্দির গড়ে তোলা হয় । পাশে তৈরি করা হয় একাধিক শিব মন্দির ।
কথিত আছে সাধক গোকুলানন্দ ব্রহ্মচারী একদিন পঞ্চমুন্ডির আসনে বসে সাধনা করতে করতে মায়ের আদেশ পেয়েছিলেন । তিনি জানতে পেরেছিলেন মা তাঁকে আদেশ দিচ্ছেন আমি এই পাশের ডোবায় রয়েছি আমায় ওই ডোবা থেকে তুলে প্রতিষ্ঠা কর ৷ আমার পূজা কর । মায়ের আদেশ মতো সাধক তাঁকে ডোবা থেকে তুলে প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন । দুর্লভ কথার অর্থ হল যাকে সহজে পাওয়া যায় না । অনেকদিন ধরে সাধনা করে ওই সাধক মাকে পেয়েছিলেন বলেই নাম হয়েছে দুর্লভা মা । তবে মায়ের আসল মূর্তি শিলা পাথরের । প্রতিদিন পুজোর সময় মূর্তি নামিয়ে পুজো করা হয় ।
মন্দিরের উত্তর-পূর্ব কোণে পঞ্চমুন্ডির আসন আছে । পাশে সাধক গোকুলানন্দ ব্রহ্মচারীর সমাধি আছে । তাঁর উপর একটি বেলগাছ আছে । পাশেই ভোগ দেওয়ার জন্য একটা জায়গা বাঁধিয়ে রাখা আছে । আগে প্রতিদিন পুজো শেষে আগে সেই বেদীতে ভোগ প্রসাদ রাখা হত । এলাকার শেয়ালরা সেই ভোগ প্রসাদ খেয়ে যেত ।
তবে এই মন্দিরে প্রথম থেকেই কালী পূজার সময় ঘট আনা হয় না । এছাড়া পুজোর সময় এখানে গঙ্গা জলের প্রয়োজন হয় না । পাশে সেই সময় যে কুয়ো খনন করা হয়েছিল ৷ সেই কুয়োর জল ব্যবহার করা হয় । সেই জলেই মাকে ভোগ নিবেদন করা হয় । আগে এখানে পশুবলি হলেও বর্তমানে বলি নিষিদ্ধ হয়ে গেছে ।