কাটোয়া, 14 মে : বিরিয়ানি শুনলেই বাঙালির জিভে জল চলে আসে ৷ নামী-দামী সবরকমের বিরিয়ানিতে মজে বাঙালি ৷ দামে 'কুছ পরওয়া নেহি' ! কিন্তু তা বলে 3 লক্ষ টাকার বিরিয়ানি বিল ৷ ভাবা যায়?
হ্যাঁ কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে এরকই ঘটনা ঘটেছে ৷ হাসপাতালের বিরিয়ানির বিল নাকি এসেছে প্রায় তিন লক্ষ টাকা (Rs 3 lakh Biryani bill at Katwa Hospital)। সেই সঙ্গে ফার্মেসি থেকে আসবাব কেনাকাটা, হাসপাতালের তরফে বিল প্রায় কোটি টাকার বেশি ছাড়িয়েছে । যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ হাসপাতাল সুপারের ৷ এই ধরনের প্রায় 81টি ভুয়ো বিল সামনে আসতেই স্বভাবতই হুলুস্থুলু কাণ্ড কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে সুপার হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সৌভিক আলম । দিন তিনেক আগে তাঁর কাছে কিছু বিল জমা পড়ে । তাঁকে জানানো হয় যে এইসব বিলের টাকা বেশ কিছুদিন ধরে আটকে আছে । তাই সেই বিলগুলি মিটিয়ে দিতে হবে । বিল পরীক্ষা করতে গিয়ে তো চমকে উঠেন তিনি । সুপার দেখতে পান হাসপাতালে বিরিয়ানি বাবদ যা খরচ হয়েছে তার বিল হয়েছে প্রায় তিন লক্ষ টাকা । এরপর আছে ফার্মেসি থেকে আসবাবপত্র কেনা, গাড়ির খরচ-সহ অন্যান্য একাধিক খরচ ।
বিভিন্ন বিল ঘাঁটতে গিয়ে তিনি 81 ধরনের ভুতুড়ে বিলেন সন্ধান পান । হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কিংশুক ঘোষ নামে এক ঠিকাদার হাসপাতালের বিভিন্ন জিনিস সরবরাহ করে থাকেন । তিনি বিরিয়ানি থেকে আসবাবপত্র, গাছের চারা সবই সরবরাহ করেছেন । তারই 81 টি এই ধরনের বিল বাকি পড়ে আছে । ওই বিল দেখতে গিয়েই গরমিল খুঁজে পাওয়া যায় । হাসপাতাল সুপার সঙ্গে সঙ্গে তিনি রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক ডাকেন । সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় ।
এরপর স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ অনুসারে তদন্তে নেমে প্রাথমিকভাবে ভুতুড়ে বিলের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর । জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে বলা হয়েছে, ভুতুড়ে বিল পেশ করে মোটা টাকা আত্মসাৎ করার যে অভিযোগ উঠেছে কিছুটা হলেও তা সত্যি । সেই বিল অনুমোদন করার জন্য স্বাস্থ্যকর্মী থেকে যেসব কর্তারা স্বাক্ষর করেছেন তাদের প্রত্যেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং দোষী প্রমাণ হলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
আরও পড়ুন : Bardhaman Fraud Case : টাওয়ার বসানোর নামে 20 লক্ষ টাকা প্রতারণা, তদন্তে নেমে টাকা-সহ গ্রেফতার 1
জেলার অতিরিক্ত স্বাস্থ্য কর্তা সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, "ভুতুড়ে বিল নিয়ে এরকম একটা অভিযোগ আমরা পেয়েছি । বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি । বিষয়টা কিছুটা হলেও সত্যতা রয়েছে । রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে তদন্ত চলছে । তাদের কাছে রিপোর্ট জমা পড়বে । তারপর স্বাস্থ্য দফতর যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবে । তবে দোষীরা কেউ ছাড়া পাবে না ।"