কালনা, 23 সেপ্টেম্বর: রাজ্যের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমানের কালনা মহকুমা এলাকায় বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। এ মরশুমে এখনও পর্যন্ত কালনা মহকুমা এলাকায় 350 জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এখন চিকিৎসা চলছে 19 জনের। কেন এত বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা তা খতিয়ে দেখলেন পূর্ব বর্ধমানের সিএমওএইচ জয়রাম হেমব্রম। তাঁর সঙ্গে হাসপাতাল পরিদর্শনে ছিলেন ডেপুটি সিএমওএইচ সুবর্ণ গোস্বামী প্রমুখ। পাশাপাশি নার্সদের কাজকর্ম নিয়েও সতর্ক করেন তিনি।
কালনা মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার রোগী ছাড়াও হুগলি ও নদিয়া জেলার চাপ থাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ৷ তবে যাতে ডেঙ্গির প্রকোপ কমানো যায় সেইজন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এদিন নার্সদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ ওঠে। অন্যদিকে রোগীর পরিবারের তরফের অভিযোগ, নার্সরা ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীদের সঠিক সময়ে জ্বর মাপছেন না এমনকী আক্রান্ত রোগীদের সঠিক সময়ে মশারিও দেওয়া হচ্ছে না ৷
সিএমওএইচ এ নিয়ে বলেন, "আমরা রুটিন ভিজিট করে থাকি। সেইমতো জেলার বিভিন্ন হাসপাতালের অবস্থা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিভিন্ন ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির কী অবস্থায় রয়েছে তা দেখা হচ্ছে। ডেঙ্গি নিয়ে খুব একটা ভয়ের কিছু নেই। দুই থেকে একটা জায়গায় কিছুটা অবস্থা খারাপ আছে। সেগুলো খতিয়ে দেখা হল।" তবে এদিন তাঁর কাছে সিস্টারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। তিনি জানতে পারেন জ্বরের ক্ষেত্রে ঘণ্টায় ঘণ্টায় যে তাপমাত্রা মাপার কথা আছে সেটা নার্সরা করছেন না। আবার বেশ কিছু জায়গায় ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীদের মশারি দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে ৷
সিএমওএইচ এ নিয়ে বলেন, "মশারি দেওয়া নিয়ে কোনও সমস্যা নেই তবে দুই থেকে এক জায়গায় নার্সদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খাবারের মান নিয়ে কোনও সমস্যা নেই ৷ তবে হাসপাতাল সুপারদের বিষয়টি নজরে রাখতে বলা হয়েছে। এমনিতে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ডেঙ্গি পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। কিন্তু যেহেতু হুগলি ও নদিয়া জেলা থেকে অনেক ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী আসছে সেই কারণে কালনা মহকুমার কালনা 1, কালনা 2, পূর্বস্থলী 1 ও পূর্বস্থলী 2 নম্বর ব্লকে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। আমরা নজরে রেখেছি। উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।
পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, "হয়তো বেশ কিছু জায়গায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে কিন্তু সেই সংখ্যা যাতে না-বাড়ে সেইজন্য মানুষকে সচেতন করতে আমরা মাঠে নেমেছি। জেলার প্রশাসনিক আধিকারিক থেকে জনপ্রতিনিধিরা নিজের নিজের এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন। তবে কালনা যেহেতু দু'টো জেলা লাগোয়া এলাকা ফলে হুগলি ও নদিয়া জেলা থেকে অনেক ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীরা এখানে আসছেন। তবে পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ফের ডেঙ্গিতে বলি এক, স্বাস্থ্যভবনের পরিসংখ্যানে চাঞ্চল্য