ETV Bharat / state

আস্ত লরিই রেস্তরাঁ; ঘুরতে ঘুরতে চলছে আড্ডা-খাওয়া-দাওয়া

চলমান রেস্তরাঁ বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিলেন বর্ধমানের বাসিন্দা পার্থ মণ্ডল ৷ একটি লরিকে দোতলা গাড়ির রূপ দিয়ে তিনি তৈরি করেছেন এই অভিনব রেস্তরাঁ ৷

moving-restaurant-at-burdwan-is-centre-of-attraction
moving-restaurant-at-burdwan-is-centre-of-attraction
author img

By

Published : Jun 29, 2021, 7:35 PM IST

বর্ধমান, 29 জুন : বাঙালির তো পায়ের তলায় সর্ষে ৷ সুযোগ পেলেই সবান্ধবে ঢুঁ মারে পার্কে বা রেস্তরাঁয় ৷ করোনাকালে এ সবে কিছুটা ভাঁটা পড়লেও ইচ্ছে রয়েছে একেবারে ষোলআনা ৷ ভ্রমণপিপাসুদের জন্যই অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন বর্ধমানের বাসিন্দা পার্থ মণ্ডল ৷ তিনি একটি রেস্তরাঁ বানিয়েছেন ৷ না, আর পাঁচটা রেস্তরাঁর মতো নয় ৷ এই রেস্তরাঁয় রকমারি খাবারের স্বাদ নিতে নিতেই ঘুরে বেড়াতে পারবেন এ দিক সে দিক ৷ কারণ গোটা রেস্তরাঁটাই তো ভ্রাম্যমাণ ৷

ছিল আস্ত একটা ট্রাক, সেটাই এখন চলমান রেস্তরাঁ । দোতলা ভ্রাম্যমাণ রেস্তরাঁয় আড্ডা দিতে দিতেই অনায়াসে খাওয়া দাওয়া করতে পারেন জনা পঞ্চাশেক মানুষ । অভিনব এই রেস্তরাঁ বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বর্ধমানের মেমারির পাহাড়হাটি এলাকার বাসিন্দা পার্থ মণ্ডল ।

কেমন এই ভ্রাম্যমাণ রেস্তরাঁ ?

একটি ট্রাককে দোতলা বাসের রূপ দেওয়া হয়েছে । সিঁড়ি দিয়ে বাসে উঠলেই মিলবে কিচেন । যেখানে চলছে রকমারি রান্না । কেউ ব্যস্ত সবজি কাটতে, আবার কেউ কড়াইয়ে খুন্তি নাড়ছেন ৷ রান্নাঘরের উপরেই রয়েছে খোলা ছাদ । যার চারদিকে রেলিং দিয়ে ঘেরা । সাজিয়ে রাখা আছে খাওয়ার টেবিল ও বসার জন্য টুল । হাইড্রোলিকের সাহায্যে ছাউনি দিয়ে খাওয়ানোর ব্যবস্থাও রয়েছে ৷ যেমন অর্ডার হবে, সে রকমই খাবার চলে আসবে রান্নাঘর থেকে ৷ ঘুরে ঘুরে খাওয়া দাওয়ার সঙ্গেই চলবে জমিয়ে আড্ডা ৷

আরও পড়ুন: দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে আইএনটিটিইউসি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে

হঠাৎ কেন এই ভাবনা ?

করোনা পরিস্থিতির জেরে বন্ধ হোটেল-রেস্তরাঁর ব্যবসায় মন্দা চলছে ৷ বর্ধমানের পার্থ মণ্ডল 2013 সালে হোটেল ম্যানেজমেন্ট পাশ করার পরে দুবাইতে হোটেলে কর্মরত ছিলেন । কিন্তু 2020 সালে করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের জেরে তিনি কাজ হারান । কোনওভাবে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন । ফের করোনার জেরে আংশিক লকডাউন চলছে । ফলে সমস্যা আরও বাড়ে পার্থ মণ্ডলের ৷ এমনিতেই তাঁর পরিকল্পনা ছিল অভিনব একটা রেস্তরাঁ বানানোর ৷ উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তিনি সেই দিকেই জোর দেন ৷ ঠিক করেন যে, ভ্রাম্যমাণ রেস্তরাঁ তৈরি করবেন ।

আস্ত লরিই ভ্রাম্যমাণ রেস্তরাঁ

আরবে তিনি দেখেছেন, গাড়িতে খাবার তৈরি করে তা পথচলতি মানুষকে বিক্রি করা হয় । সেখান থেকেই তাঁর মাথায় ভাবনা আসে, গাড়ির মাথায় রেস্তরাঁর মতো বসার জায়গা করা হলে, মানুষকে বসিয়ে খাওয়ানো যাবে ৷ পার্থ বলেছেন, 'দেশের বাইরে চাকরি করেছি । রেস্তরাঁ করার চিন্তাভাবনা অনেকদিন ধরেই ছিল । দুবাই থেকে ফিরে আসার পরে ভাবি রেস্তরাঁ করব, তবে সেটা হবে সবকিছুর থেকে আলাদা ৷ ট্রাক কিনে সেটাকে বিভিন্ন ভাবে সাজানো হয়েছে । আপাতত ছোটখাটো সামাজিক অনুষ্ঠানে কেউ যদি খাবারের জন্য অর্ডার দেন সেই ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে । এ ছাড়া ফুড ডেলিভারির ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে ।'

আরও পড়ুন: "বেআইনি আবাসন প্রকল্পের সুবিধে নিয়েছেন, এটা কি সাংবিধানিক আঙ্কেলজি ?" রাজ্যপালকে তোপ মহুয়ার

গাড়ির হাইড্রোলিকের কাজ করেছেন তারক কর্মকার । তিনি বলেন, একটা লরিকে দোতলা বাসের আদলে গড়ে তোলা হয়েছে । বাসের ছাদে ব্যবহার করা হয়েছে হাইড্রোলিক । গাড়িটি যখন চলবে, তখন হাইড্রোলিক নামিয়ে দেওয়া হবে । ফলে গাড়ির ছাদ সমতল হয়ে যাবে । যেখানে গাড়ি দাঁড়াবে সেখানে ফের হাইড্রোলিকের সাহায্যে দোতলা গাড়ির রূপ দেওয়া হবে ।

এই রেস্তরাঁয় এসে বেশ অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে অতিথিদের ৷ ঘুরে ঘুরে খাওয়া আর আড্ডা দেওয়ার মজাই যেন আলাদা ৷ মহম্মদ মোস্তফা বললেন, "এই ধরনের চলন্ত রেস্তরাঁ এখানে কোথাও নেই । এটা একটা অভিনব ব্যাপার । মানুষজন এখানে শুধু খাওয়াই নয়, রীতিমতো জমিয়ে আড্ডাও উপভোগ করবেন ।" প্রথম এ রকম রেস্তরাঁ দেখলেন সিমরণ বিশ্বকর্মা নামে এক যুবতী ৷ আধুনিক প্রজন্ম এই ভাবনাকে বেশ পছন্দ করবে বলে জানান তিনি ৷

বর্ধমান, 29 জুন : বাঙালির তো পায়ের তলায় সর্ষে ৷ সুযোগ পেলেই সবান্ধবে ঢুঁ মারে পার্কে বা রেস্তরাঁয় ৷ করোনাকালে এ সবে কিছুটা ভাঁটা পড়লেও ইচ্ছে রয়েছে একেবারে ষোলআনা ৷ ভ্রমণপিপাসুদের জন্যই অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন বর্ধমানের বাসিন্দা পার্থ মণ্ডল ৷ তিনি একটি রেস্তরাঁ বানিয়েছেন ৷ না, আর পাঁচটা রেস্তরাঁর মতো নয় ৷ এই রেস্তরাঁয় রকমারি খাবারের স্বাদ নিতে নিতেই ঘুরে বেড়াতে পারবেন এ দিক সে দিক ৷ কারণ গোটা রেস্তরাঁটাই তো ভ্রাম্যমাণ ৷

ছিল আস্ত একটা ট্রাক, সেটাই এখন চলমান রেস্তরাঁ । দোতলা ভ্রাম্যমাণ রেস্তরাঁয় আড্ডা দিতে দিতেই অনায়াসে খাওয়া দাওয়া করতে পারেন জনা পঞ্চাশেক মানুষ । অভিনব এই রেস্তরাঁ বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বর্ধমানের মেমারির পাহাড়হাটি এলাকার বাসিন্দা পার্থ মণ্ডল ।

কেমন এই ভ্রাম্যমাণ রেস্তরাঁ ?

একটি ট্রাককে দোতলা বাসের রূপ দেওয়া হয়েছে । সিঁড়ি দিয়ে বাসে উঠলেই মিলবে কিচেন । যেখানে চলছে রকমারি রান্না । কেউ ব্যস্ত সবজি কাটতে, আবার কেউ কড়াইয়ে খুন্তি নাড়ছেন ৷ রান্নাঘরের উপরেই রয়েছে খোলা ছাদ । যার চারদিকে রেলিং দিয়ে ঘেরা । সাজিয়ে রাখা আছে খাওয়ার টেবিল ও বসার জন্য টুল । হাইড্রোলিকের সাহায্যে ছাউনি দিয়ে খাওয়ানোর ব্যবস্থাও রয়েছে ৷ যেমন অর্ডার হবে, সে রকমই খাবার চলে আসবে রান্নাঘর থেকে ৷ ঘুরে ঘুরে খাওয়া দাওয়ার সঙ্গেই চলবে জমিয়ে আড্ডা ৷

আরও পড়ুন: দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে আইএনটিটিইউসি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে

হঠাৎ কেন এই ভাবনা ?

করোনা পরিস্থিতির জেরে বন্ধ হোটেল-রেস্তরাঁর ব্যবসায় মন্দা চলছে ৷ বর্ধমানের পার্থ মণ্ডল 2013 সালে হোটেল ম্যানেজমেন্ট পাশ করার পরে দুবাইতে হোটেলে কর্মরত ছিলেন । কিন্তু 2020 সালে করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের জেরে তিনি কাজ হারান । কোনওভাবে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন । ফের করোনার জেরে আংশিক লকডাউন চলছে । ফলে সমস্যা আরও বাড়ে পার্থ মণ্ডলের ৷ এমনিতেই তাঁর পরিকল্পনা ছিল অভিনব একটা রেস্তরাঁ বানানোর ৷ উদ্ভুত পরিস্থিতিতে তিনি সেই দিকেই জোর দেন ৷ ঠিক করেন যে, ভ্রাম্যমাণ রেস্তরাঁ তৈরি করবেন ।

আস্ত লরিই ভ্রাম্যমাণ রেস্তরাঁ

আরবে তিনি দেখেছেন, গাড়িতে খাবার তৈরি করে তা পথচলতি মানুষকে বিক্রি করা হয় । সেখান থেকেই তাঁর মাথায় ভাবনা আসে, গাড়ির মাথায় রেস্তরাঁর মতো বসার জায়গা করা হলে, মানুষকে বসিয়ে খাওয়ানো যাবে ৷ পার্থ বলেছেন, 'দেশের বাইরে চাকরি করেছি । রেস্তরাঁ করার চিন্তাভাবনা অনেকদিন ধরেই ছিল । দুবাই থেকে ফিরে আসার পরে ভাবি রেস্তরাঁ করব, তবে সেটা হবে সবকিছুর থেকে আলাদা ৷ ট্রাক কিনে সেটাকে বিভিন্ন ভাবে সাজানো হয়েছে । আপাতত ছোটখাটো সামাজিক অনুষ্ঠানে কেউ যদি খাবারের জন্য অর্ডার দেন সেই ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে । এ ছাড়া ফুড ডেলিভারির ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে ।'

আরও পড়ুন: "বেআইনি আবাসন প্রকল্পের সুবিধে নিয়েছেন, এটা কি সাংবিধানিক আঙ্কেলজি ?" রাজ্যপালকে তোপ মহুয়ার

গাড়ির হাইড্রোলিকের কাজ করেছেন তারক কর্মকার । তিনি বলেন, একটা লরিকে দোতলা বাসের আদলে গড়ে তোলা হয়েছে । বাসের ছাদে ব্যবহার করা হয়েছে হাইড্রোলিক । গাড়িটি যখন চলবে, তখন হাইড্রোলিক নামিয়ে দেওয়া হবে । ফলে গাড়ির ছাদ সমতল হয়ে যাবে । যেখানে গাড়ি দাঁড়াবে সেখানে ফের হাইড্রোলিকের সাহায্যে দোতলা গাড়ির রূপ দেওয়া হবে ।

এই রেস্তরাঁয় এসে বেশ অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে অতিথিদের ৷ ঘুরে ঘুরে খাওয়া আর আড্ডা দেওয়ার মজাই যেন আলাদা ৷ মহম্মদ মোস্তফা বললেন, "এই ধরনের চলন্ত রেস্তরাঁ এখানে কোথাও নেই । এটা একটা অভিনব ব্যাপার । মানুষজন এখানে শুধু খাওয়াই নয়, রীতিমতো জমিয়ে আড্ডাও উপভোগ করবেন ।" প্রথম এ রকম রেস্তরাঁ দেখলেন সিমরণ বিশ্বকর্মা নামে এক যুবতী ৷ আধুনিক প্রজন্ম এই ভাবনাকে বেশ পছন্দ করবে বলে জানান তিনি ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.