গলসি, 6মে: কয়েকদিনের কালবৈশাখী ঝড় আর শিলাবৃষ্টির জেরে ঝরে গিয়েছে ধানের শিস । বেশ কিছু জমিতে এখনও জল দাঁড়িয়ে রয়েছে । ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছেন গলসির কৃষকরা । অথচ চলতি বছরের বোরো মরশুমে ধানের ভালোই ফলন হয়েছে । বেশ কিছু জায়গায় ধান কাটা শুরু হলেও বেশিরভাগ জমির ধান প্রায় আশি শতাংশ পেকে গিয়েছে । তারই মধ্যে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে কৃষকদের ।
কালবৈশাখী আর শিলাবৃষ্টির জেরে গলসির হরিপুর, রামপুর, গলিগ্রাম, ইরকোনা, বীরপুর, চান্ডুল-সহ বেশ কিছু মৌজার কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন । পরিস্থিতি এমনই যে এখন জমিতে যে ধান পড়ে আছে সেই ধানও কাটতে সাহস পাচ্ছেন না কৃষকরা । তাদের মতে ধান কাটার একটা নির্দিষ্ট খরচ আছে । পরে সেই টাকা উঠবে কীভাবে সেটাই বোঝার চেষ্টা করছেন তাঁরা ।
কৃষকদের জমিতে পড়ে থাকা ধান কাটতে যা খরচ হবে, সেই ধান বিক্রি করে ধান কাটারই খরচ উঠবে না । এই পরিস্থিতিতে ধান চাষে লাভের কোনও আশাই দেখা যাচ্ছে না । কৃষকদের অভিযোগ, সরকার পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিলেও গত মরশুমের চাষে ক্ষতির পরেও সরকারি সহায়তা মেলেনি । ব্যাংক কিংবা মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়েই তাঁদের ফের চাষের কাজে নামতে হয়েছে । এই অবস্থায় যে ভাবে চাষে ক্ষতি হচ্ছে সরকার সহযোগিতার হাত না বাড়ালে তাদের কী অবস্থা হবে সেটা তাঁরা ভাবতেও পারছেন না ।
স্থানীয় কৃষক শেখ ইউসুফ বলেন, "বিঘা দশেক জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছি । গত দু-একদিনের কালবৈশাখী ঝড়ে ধানচাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে । এমনিতেই গত মরশুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে অনেক ক্ষতি হয়েছে । সরকার কোনও সহায়তা করেনি । সরকার যদি পাশে না দাঁড়ায় তাহলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে । কৃষি ঋণ মকুব না করলে আমরা বাঁচতে পারব না।"
প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে তেরো বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন আর এক কৃষক মহম্মদ হাসমার হোসেন । তিনি জানান, চলতি মরশুমের ঝড়- জল আর শিলাবৃষ্টিতেও সমস্যায় পড়েছেন কৃষকরা । ব্যাপক ক্ষতির সন্মুখীন হয়েছেন কৃষকরা ৷ ফসলের ব্যপক ক্ষতি হওয়ায় ঋণ কীভাবে তা ভেবে কূল পাচ্ছেন না কৃষকরা ৷
আরও পড়ুন: Cyclone Mocha: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়, ধান কেটে নেওয়ার পরামর্শ কৃষি দফতরের
এই এলাকারই বাসিন্দ পেশায় কৃষক আসমান হোসেন ৷ তিনি প্রায় 1 একর জমিতে ধান চাষ করেছেন ৷ ঝড়বৃষ্টির জেরে ধান নষ্টের পাশাপাশি জমিতে জল জমে গিয়েছে । পরিস্থিতি এমনই যে জমিতে পড়ে থাকা বাকি ধান কাটার খরচ করেও তাঁর লাভ নেই । কারণ সেই ধান বিক্রি করার পরে ধান কাটার খরচও মিলবে না। ফলে তার সমস্ত চাষেই লোকসান দেখা দিয়েছে বলে জানালেন।