বর্ধমান, 18 জুন : এখন বিয়ের মরশুম ৷ বৈশাখ থেকে শ্রাবণ, অঘ্রাণ ও মাঘ-ফাল্গুন ব্যবসায়ীদের কাছে বিয়ের মরশুম ৷ প্রতি বছর এই সময়ে দম ফেলার সময় থাকে না ৷ কিন্তু, এবছর ছবিটা একদমই আলাদা ৷ কোরোনা যেন কেড়ে নিয়েছে সব কাজ ৷ সব কিছু স্বাভাবিক হওয়ার আশায় রয়েছেন ভাড়া বিয়েবাড়ির মালিক থেকে শুরু করে ফুল, লাইট ব্যবসায়ীরা ৷
পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান শহর, কালনা, কাটোয়া-সহ জেলাজুড়ে ছবিটা একই রকম ৷ বন্ধ সব বিয়ে বাড়ি ৷ বাড়িগুলির ভিতরে তাকালে দেখা যায়, ব্যবহার না হওয়ায় সেখানে ধুলো পড়ছে ৷ জায়গায় জায়গায় স্তূপাকার করে রাখা বাসনপত্র ৷ যে সমস্ত স্টলের মাধ্যমে ফুচকা, পানীয়, পান সরবরাহ করা হত, সেই স্টলগুলি সেজে ওঠে, সেগুলিতেই এখন ধুলো পড়েছে ৷
লকডাউনের জেরে শুধু বিয়েবাড়ি নয় ৷ ক্যাটারিং, ডেকরেটর, লাইট, সাউন্ড, পুল সব ব্যবসায়ীরই খারাপ অবস্থা ৷ এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বহু কর্মীও বর্তমানে বেকার ৷ ক্ষতির মুখে সব ব্যবসাই ৷ বিয়ে, অন্নপ্রাশন, উপনয়ন-সহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সরকারের তরফে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে ৷ বলা হয়েছে, জমায়েত বা ভিড় এড়িয়ে চলার ৷ মার্চ মাস থেকে শুরু হয়েছিল লকডাউন ৷ তারপর থেকে বন্ধ সব কিছু ৷
লকডাউন কতদিন চলবে তা কেউ বুঝে উঠতে না পারায় বিয়ের তারিখ পর্যন্ত ঠিক করে উঠতে পারেননি ৷ অথচ বিয়েবাড়ি বুকিংয়ের জন্য ছয় মাস থেকে এক বছর আগে অ্যাডভান্স দেওয়া শুরু হয়ে যায় ৷ সেইমতো বুকিং হয় বিয়েবাড়ি, ক্যাটারিং-সহ ডেকরেটরও ৷ কিন্তু, লকডাউনের জেরে ভেস্তে যায় সব কিছু ৷ যাঁরা অনুষ্ঠানের জন্য টাকা অগ্রীম দিয়েছিলেন, তাঁরা সব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় টাকা ফেরত নিয়ে নেন ৷ ব্যবসায়ীরাও বাধ্য হন টাকা ফেরত দিতে ৷ বিয়েবাড়ির মালিক শংকর ঘোষাল বলেন, অনেকেই বিয়েবাড়ি বুকিংয়ের জন্য অ্যাডভান্স টাকা দিয়েছিলেন । সেই টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে । এর সঙ্গে বেড়েছে পৌরসভার কর ।" ফলে কীভাবে সেই কর দেওয়া হবে সেই চিন্তাতেও রয়েছেন তাঁরা ।
লাইট ব্যবসায়ী রমেন্দ্রনাথ সেন বলেন, "লকডাউনের জেরে বন্ধ বিয়েবাড়ি-সহ অন্যান্য অনুষ্ঠান । ফলে আমাদের লাইট ব্যবসার পাশাপাশি ক্যাটারিং, ফুল, সাউন্ড ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়েছেন । আমাদের ব্যবসার উপর কম করে 15-20টি পরিবার নির্ভরশীল । সারা বছর আমরা এই বিয়ের মরশুমের উপরই নির্ভর করে থাকি । জানি না কীভাবে সংসার চলবে ।"
বর্ধমান পৌরসভার এগজ়িকিউটিভ অফিসার অমিত গুহ বলেন, "পৌরসভার অধীনে চারটি অনুষ্ঠান বাড়ি আছে । লকডাউনের জেরে সব বন্ধ ৷"