ETV Bharat / state

Bardhaman Town Bus service: শহরের ভিতরে ঢুকছে না বাস, পুজোর মুখে ব্যবসা বন্ধের দুশ্চিন্তা ব্যবসায়ীদের

শহরের ভিতরে ঢুকছে না বাস ৷ ফলে গ্রাম থেকে মানুষজন আসতে পারছেন না বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্র কার্জন গেটে ৷ আর সেখানেই ছোট বড় প্রচুর দোকান ব্যবসায় মার খাচ্ছে ৷ সামনেই পুজো এমন চলতে থাকলে তো ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে ৷ চিন্তায় ব্য়বসায়ীরা ৷

Etv Bharat
কার্জন গেট
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 1, 2023, 9:28 PM IST

বর্ধমান, 1 সেপ্টেম্বর: পুজোর মরশুম চলছে । বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্র কার্জনগেট চত্বরের এখন পরিবেশ এমনই যে, বাইক চালিয়ে যে কেউ 40 স্পিডে বাইক চালাতে পারবে । অথচ আগে পুজোর মরশুমে এতই ভিড় হত যে 10 কিলোমিটার গতিতেই বাইক চালানো কঠিন হয়ে পড়ত ।

বর্ধমান শহরের দুই প্রান্তে দুটি বাসস্ট্যান্ড আছে । শহরের বাইরে থেকে সেই বাসস্ট্যান্ডগুলি থেকে মিনি বাসে 10-12 টাকার বিনিময়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছানো যায় । কিংবা টোটোয় চেপে 15-20 টাকায় গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যেত ।কিন্তু আগে দক্ষিণ দামোদর কিংবা বাঁকুড়া, কামারপুকুর, জয়রামবাটি কিংবা পশ্চিম মেদিনীপুরের বীরসিংহ প্রভৃতি এলাকা থেকে বাসগুলি শহরের ভিতর দিয়ে বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছাতে পারত । ফলে কোনও যাত্রী ওই বাসে যত টাকা ভাড়া দিতেন সেই টাকাতেই শহরে পৌঁছে যেতে পারতেন । তাদের বাড়তি ভাড়া গুনতে হত না । দূরপাল্লা কিংবা লোকাল বাস বন্ধ হওয়ায় তাদের শহরে পৌঁছতে যেমন বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে সেইসঙ্গে অনেক বেশি সময় লাগছে ।

বিসি রোডের দোকানগুলিতে কর্মচারীদের পুজোর মরশুমে নাওয়া খাওয়ার সময় থাকত না । অথচ এখন এমনও দিন যাচ্ছে যেদিন শূন্য হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে । টাউন সার্ভিস ছাড়া বর্ধমান শহরে বন্ধ হয়েছে অন্যান্য রুটের বাস চলাচল । ফলে কোনও গ্রাম থেকে শহরে আসতে গেলে নির্দিষ্ট বাস স্টপেজে নেমে টোটো ধরে শহরে আসতে হয় । ফলে তাদের বাড়তি অনেক টাকা গুনতে হচ্ছে । এর ফলে শহরের ব্যবসা মার খাচ্ছে । এদিকে বর্ধমান পৌরসভা হকারদের কাছ থেকে ট্যাক্স নেবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে । এই অবস্থায় চেম্বার অফ ট্রেডার্সের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তুলেছে যেভাবে শহরে বাস ঢোকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তাতে ছোট বড় সব ব্যবসা মার খাচ্ছে । এই অবস্থায় ট্যাক্স বসালে ব্যবসা টিকে থাকবে তো ?

এই বিষয়ে ব্যবসাদার উত্তম বালা বলেন, "ছোট ব্যবসা ৷ লোন নিয়ে করি । এতদিন তো এই অবস্থা ছিল না । একে বাসস্ট্যান্ড উঠে গিয়েছে । ফলে খদ্দের নেই বললেই চলে । আমাদের ব্যবসা গ্রামের খদ্দেরদের উপরেই নির্ভর করে চলে । শহরে লোকাল বাস বন্ধ করে দেওয়ায় গ্রামাঞ্চল থেকে খদ্দেররা আসতে পারছেন না । কীভাবে ব্যবসা টিকে থাকবে জানি না ।

ব্যবসায়ী মহেশ্বর চৌধুরীর কথায়, "পুজোর মরশুমে আমাদের নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকে না । অথচ লোকাল বাস বন্ধ করে দেওয়ায় বর্ধমান শহর লাগোয়া যে সব গ্রাম আছে সেখানকার মানুজন জিনিসপত্র কিনতে আসতে পারছেন না । যারা পাইকারি জিনিস কিনতে আসেন তাঁরাও নিয়মিত আসা কমিয়ে দিয়েছেন । ফলে ব্যবসা মার খাচ্ছে ।

পূর্ব বর্ধমান চেম্বার অফ ট্রেডার্সের চেয়ারম্যান বিশ্বেশ্বর চৌধুরী বলেন, "বর্ধমান পৌরসভার পক্ষ থেকে একটা বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে শুধু ট্যাক্স নয় যেসব রেস্টুরেন্ট আছে সেখানেও এটা প্রযোজ্য হবে । আমরা ট্যাক্সের বিরোধী নই । কারণ ব্যবসাদারেরাই বিভিন্ন ধরনের ট্যাক্স দিয়ে থাকে । তাই আমরা বর্ধমান পৌরসভার বিরোধীতা করছি না । আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে যেটা সিদ্ধান্ত হবে সেটা আমরা মেনে নেব । পাশাপাশি বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় শহর কার্যত ফাঁকা । আগে পুজোর মরশুমে শহরের ভিতর দিয়ে গাড়ি চালালে 10 কিলোমিটারের বেশি গতিতে গাড়ি চালানো যেত না অথচ এখন শহর এখন এমনই ফাঁকা যে 40 স্পিডে যে কেউ গাড়ি চালাতে পারছে । এটা থেকেই পরিষ্কার শহরে ব্যবসার কী হাল । ফলে প্রশ্ন একটাই বর্ধমান শহরে ব্যবসা আদৌ টিকে থাকবে তো ?"

তিনি আরও বলেন, "শুধু পরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য এই অবস্থা । কারণ একটা মানুষকে গ্রাম থেকে শহরে আসতে গেলে প্রায় 100 টাকা খরচ হয় । একজন সাধারণ মানুষের সেই অবস্থা নেই । এরপর পৌরসভা আবার হকারদের উপরে ট্যাক্স চাপাতে চলেছে । প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব আগে বর্ধমান শহরে বাস ঢোকার ব্যবস্থা করুন । তারপরে ট্যাক্স বসান । সবাই আলোচনা করে ট্যাক্স দেবে । নাহলে তো ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ট্যাক্স দিতে হবে ।"

বর্ধমান পৌরসভার চেয়ারম্যান পরেশ সরকার জানান, ছোট বড় ব্যবসাদার তো শহরে ব্যবসা করেন । তাই পৌরসভা ট্যাক্স দাবি করতেই পারেন । তাঁরা পৌরসভার রাস্তা, জল, ড্রেন ব্যবহার করেন । শুধু তাই নয় তাঁদের ব্যবসার জন্য যে বর্জ্য থাকে সেটা রাস্তাতেই ফেলে দেয় । সেটা পৌরসভা পরিষ্কার করে । তাই তাদের কর্তব্য পৌরসভাকে ট্যাক্স দেওয়া ।

বর্ধমান, 1 সেপ্টেম্বর: পুজোর মরশুম চলছে । বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্র কার্জনগেট চত্বরের এখন পরিবেশ এমনই যে, বাইক চালিয়ে যে কেউ 40 স্পিডে বাইক চালাতে পারবে । অথচ আগে পুজোর মরশুমে এতই ভিড় হত যে 10 কিলোমিটার গতিতেই বাইক চালানো কঠিন হয়ে পড়ত ।

বর্ধমান শহরের দুই প্রান্তে দুটি বাসস্ট্যান্ড আছে । শহরের বাইরে থেকে সেই বাসস্ট্যান্ডগুলি থেকে মিনি বাসে 10-12 টাকার বিনিময়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছানো যায় । কিংবা টোটোয় চেপে 15-20 টাকায় গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যেত ।কিন্তু আগে দক্ষিণ দামোদর কিংবা বাঁকুড়া, কামারপুকুর, জয়রামবাটি কিংবা পশ্চিম মেদিনীপুরের বীরসিংহ প্রভৃতি এলাকা থেকে বাসগুলি শহরের ভিতর দিয়ে বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছাতে পারত । ফলে কোনও যাত্রী ওই বাসে যত টাকা ভাড়া দিতেন সেই টাকাতেই শহরে পৌঁছে যেতে পারতেন । তাদের বাড়তি ভাড়া গুনতে হত না । দূরপাল্লা কিংবা লোকাল বাস বন্ধ হওয়ায় তাদের শহরে পৌঁছতে যেমন বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে সেইসঙ্গে অনেক বেশি সময় লাগছে ।

বিসি রোডের দোকানগুলিতে কর্মচারীদের পুজোর মরশুমে নাওয়া খাওয়ার সময় থাকত না । অথচ এখন এমনও দিন যাচ্ছে যেদিন শূন্য হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে । টাউন সার্ভিস ছাড়া বর্ধমান শহরে বন্ধ হয়েছে অন্যান্য রুটের বাস চলাচল । ফলে কোনও গ্রাম থেকে শহরে আসতে গেলে নির্দিষ্ট বাস স্টপেজে নেমে টোটো ধরে শহরে আসতে হয় । ফলে তাদের বাড়তি অনেক টাকা গুনতে হচ্ছে । এর ফলে শহরের ব্যবসা মার খাচ্ছে । এদিকে বর্ধমান পৌরসভা হকারদের কাছ থেকে ট্যাক্স নেবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে । এই অবস্থায় চেম্বার অফ ট্রেডার্সের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তুলেছে যেভাবে শহরে বাস ঢোকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তাতে ছোট বড় সব ব্যবসা মার খাচ্ছে । এই অবস্থায় ট্যাক্স বসালে ব্যবসা টিকে থাকবে তো ?

এই বিষয়ে ব্যবসাদার উত্তম বালা বলেন, "ছোট ব্যবসা ৷ লোন নিয়ে করি । এতদিন তো এই অবস্থা ছিল না । একে বাসস্ট্যান্ড উঠে গিয়েছে । ফলে খদ্দের নেই বললেই চলে । আমাদের ব্যবসা গ্রামের খদ্দেরদের উপরেই নির্ভর করে চলে । শহরে লোকাল বাস বন্ধ করে দেওয়ায় গ্রামাঞ্চল থেকে খদ্দেররা আসতে পারছেন না । কীভাবে ব্যবসা টিকে থাকবে জানি না ।

ব্যবসায়ী মহেশ্বর চৌধুরীর কথায়, "পুজোর মরশুমে আমাদের নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকে না । অথচ লোকাল বাস বন্ধ করে দেওয়ায় বর্ধমান শহর লাগোয়া যে সব গ্রাম আছে সেখানকার মানুজন জিনিসপত্র কিনতে আসতে পারছেন না । যারা পাইকারি জিনিস কিনতে আসেন তাঁরাও নিয়মিত আসা কমিয়ে দিয়েছেন । ফলে ব্যবসা মার খাচ্ছে ।

পূর্ব বর্ধমান চেম্বার অফ ট্রেডার্সের চেয়ারম্যান বিশ্বেশ্বর চৌধুরী বলেন, "বর্ধমান পৌরসভার পক্ষ থেকে একটা বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে শুধু ট্যাক্স নয় যেসব রেস্টুরেন্ট আছে সেখানেও এটা প্রযোজ্য হবে । আমরা ট্যাক্সের বিরোধী নই । কারণ ব্যবসাদারেরাই বিভিন্ন ধরনের ট্যাক্স দিয়ে থাকে । তাই আমরা বর্ধমান পৌরসভার বিরোধীতা করছি না । আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে যেটা সিদ্ধান্ত হবে সেটা আমরা মেনে নেব । পাশাপাশি বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় শহর কার্যত ফাঁকা । আগে পুজোর মরশুমে শহরের ভিতর দিয়ে গাড়ি চালালে 10 কিলোমিটারের বেশি গতিতে গাড়ি চালানো যেত না অথচ এখন শহর এখন এমনই ফাঁকা যে 40 স্পিডে যে কেউ গাড়ি চালাতে পারছে । এটা থেকেই পরিষ্কার শহরে ব্যবসার কী হাল । ফলে প্রশ্ন একটাই বর্ধমান শহরে ব্যবসা আদৌ টিকে থাকবে তো ?"

তিনি আরও বলেন, "শুধু পরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য এই অবস্থা । কারণ একটা মানুষকে গ্রাম থেকে শহরে আসতে গেলে প্রায় 100 টাকা খরচ হয় । একজন সাধারণ মানুষের সেই অবস্থা নেই । এরপর পৌরসভা আবার হকারদের উপরে ট্যাক্স চাপাতে চলেছে । প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব আগে বর্ধমান শহরে বাস ঢোকার ব্যবস্থা করুন । তারপরে ট্যাক্স বসান । সবাই আলোচনা করে ট্যাক্স দেবে । নাহলে তো ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ট্যাক্স দিতে হবে ।"

বর্ধমান পৌরসভার চেয়ারম্যান পরেশ সরকার জানান, ছোট বড় ব্যবসাদার তো শহরে ব্যবসা করেন । তাই পৌরসভা ট্যাক্স দাবি করতেই পারেন । তাঁরা পৌরসভার রাস্তা, জল, ড্রেন ব্যবহার করেন । শুধু তাই নয় তাঁদের ব্যবসার জন্য যে বর্জ্য থাকে সেটা রাস্তাতেই ফেলে দেয় । সেটা পৌরসভা পরিষ্কার করে । তাই তাদের কর্তব্য পৌরসভাকে ট্যাক্স দেওয়া ।

আরও পড়ুন : বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় নির্দেশিকা দিলেও হস্টেল থেকে বহিরাগত হঠানো যাবে ? প্রশ্ন ছাত্র সংগঠনের

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.