ভাতার, 11 মে: প্রতিবাদী কনে ৷ তাও আবার বিয়ের মঞ্চে ৷ সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এমনই এক ভিডিয়ো ৷ সেখানেই দেখা যাচ্ছে বিয়েবাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান চলছে। সেই অনুষ্ঠান থেকেই বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে বঞ্চিতদের চাকরির দাবিতে স্লোগান তুলছেন কনে। 'আমাদের নিয়োগ চাই, আমাদের বঞ্চনা মানছি না মানবো না ৷' বিয়ের মঞ্চে এমনই স্লোগান শোনা গেল কনে অভয়ার গলায় ৷ সেই ভিডিয়ো এখন ভাইরাল আন্তর্জালেও ।
চলতি মাসের 6 তারিখে ভাতারের খেজুরের বাসিন্দা অভয়া রায়ের সঙ্গে বিয়ে হয় ভাতারেরই বাসিন্দা রিন্টু দে-র। বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়া, উত্তর 24 পরগনা, ঝাড়গ্রাম-সহ অন্যান্য জেলার অভয়ার বন্ধু-বান্ধবরা । তারা সকলেই অভয়ার সঙ্গে 2014 সালে টেট উত্তীর্ণ হয়েছেন। অথচ কেউই নিয়োগপত্র হাতে পাননি। তাঁদের অভিযোগ, অযোগ্যরা নিয়োগ পেয়েছেন। সাদা খাতা জমা দিয়েও চাকরি করছে, অথচ তারা কেন চাকরি পেল না । তাদের নিয়োগ দিতে হবে দ্রুত ৷
এদিন কনে অভয়া রায় বলেন, "মেয়েদের কাছে বিয়ে মানেই একটা আনন্দের মুহূর্ত থাকে। বিয়ে একটা ছেলে বা মেয়ের জীবনে বিশেষ মূহূর্ত। কিন্তু আমাদের বেকারদের যন্ত্রণাটা এতটাই বেশি হয়ে গিয়েছে, যে বিয়ের দিনেও সেই যন্ত্রণা ভুলে থাকতে পারিনি । 2014 সালে টেট পরীক্ষায় পাশ করেছি । ট্রেনিং করেছি । যেখানে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন 2020 সালে যারা টেট পাশ করেছেন তাদের সকলকেই নিয়োগ করা হবে। প্রথমে 16 হজার 500 জনকে ও পরে ধাপে সাড়ে 3 হাজার জন নিয়োগ করা হবে । আজ 9 বছর পেরিয়ে গেলেও বেকার তকমাটা আজও জীবন থেকে মুছে যায়নি।"
কনে অভয়া একরাশ জমাট বাঁধা আক্ষেপ নিয়ে আরও জানান, আমার তো তাও বিয়ে হয়ে গিয়েছে। অনেকে বিয়ের কথা ভাবতেই পারেনি। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে যে সময় কেস ছিল তার ওয়ে মার্কশিট প্রকাশ্যে এসেছে। তারা নিজেদের নাম লিখতে পারে না অথচ তারা খাতায় 56 পেয়েছে । তারা চাকরি করছে । অথচ যারা যোগ্য তারা চাকরি না পেয়ে রোদে, ঝড়ে জলে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করছে ।
আরও পড়ুন: তৃণমূলের বুথ সম্মেলনে চটুল নাচ ! ভাইরাল ভিডিয়ো ঘিরে বিতর্ক তুফানগঞ্জে
তাঁর একান্ত অনুরোধ এইভাবে যেন যোগ্যরা বঞ্চিত না হয়। মুখ্যমন্ত্রী যেন সহানুভূতির সঙ্গে বিষয়টি দেখেন । মুখ্যমন্ত্রী তো মানবিক । অযোগ্যদের চাকরি গেলে মুখ্যমন্ত্রীর চোখে জল এসে যায়। তাহলে যোগ্যরাও যাতে বঞ্চিত না হয়, সেটা যেন তিনি দেখেন ।