পূর্বস্থলী, 26 ডিসেম্বর: 2021 সালে কাটোয়ার জগদানন্দপুরে চৈতন্যদেবের 'দীক্ষাস্থল' নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। মঙ্গলবার জেপি নাড্ডার কলকাতা সফরের দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চৈতন্যদেবের উত্তরসূরি হিসেবে তুলে ধরলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী 1 নম্বর ব্লকের খাল-বিল চুনো মাছ পিঠে পুলি উৎসবে যোগ দিতে আসেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেখানে এসেই তিনি এমন মন্তব্য করেন ৷
তিনি বলেন, "চৈতন্যদেব সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলে গিয়েছেন। তিনি কোনওদিন বিভাজনের রাজনীতি করেননি। চৈতন্যদেবের যদি সার্থক কোনও উত্তরাধিকার যদি এই মুহূর্তে বাংলায় থেকে থাকে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।" যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। রাজনৈতিক মহলের মতে, সনাতন ধর্ম নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিভিন্ন মন্তব্যে এমনিতেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি।
এর আগে 2021 সালে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বলেছিলেন, তিনি কাটোয়ার যে রাধাগোবিন্দ মন্দিরে গিয়েছিলেন সেই মন্দিরে চৈতন্যদেব দীক্ষা নিয়েছিলেন। অথচ ইতিহাস বলছে চৈতন্যদেবের প্রয়াণের প্রায় তিনশো বছর পরে সেই মন্দির তৈরি করা হয়। যা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস কটাক্ষ করে বলেছিল, বহিরাগতরা বাংলার কৃষ্টি সংস্কৃতি জানে না।
- এদিন ঠিক কী বলেছেন ব্রাত্য বসু-
ব্রাত্য বসু বলেন, "প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখা, বাংলাকে বাঁচিয়ে রাখা, খাল-বিল-চুনো-পুঁটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য হৃদয়ের প্রয়োজন। চৈতন্যের বংশধর হতে হবে। যিনি সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলেছেন। তিনি একসঙ্গে চলার কথা বলেছেন। মমতা দিদি সেই সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলেন। তিনি বিভাজনের রাজনীতি, ভেদাভেদের রাজনীতি করেন না। তাই চৈতন্যদেবের যদি সার্থক কোনও উত্তরাধিকার বাংলায় থাকে তবে এই মুহূর্তে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।"
তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশের মতে, বিজেপি বারবার সনাতন ধর্ম নিয়ে একাধিক ইস্যু লোকসভা নির্বাচনের আগে জনসাধারণের কাছে তুলে ধরছে। যেমন কাটোয়ায় এসে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা চৈতন্যদেবকে নিয়ে ভুল মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বারবার করে বলা হয়েছে ধর্ম নিয়ে নয় বিজেপি কীভাবে বিভিন্নভাবে দুর্নীতি করে বাংলার মানুষকে ভাতে মারার চেষ্টা করছে সেই বিষয়গুলো তুলে ধরতে হবে। হঠাৎ করে কোনও নেতা-মন্ত্রী ধর্ম বিষয়ে মন্তব্য করলে বিজেপির পালে হাওয়া পেতে সুবিধা হবে। বিজেপি নেতারা বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। তাঁদের মতে শিক্ষামন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবে জনগণ তাঁর শিক্ষা-দীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন।
আরও পড়ুন: