জামালপুল, 18 ফেব্রুয়ারি : কৃষি ঋণ শোধ করতে পারেননি বাবা, তাই মেয়ের রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা আটকে দিল ব্যাঙ্ক ৷ এমনটাই অভিযোগ উঠল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে । বিষয়টি জানিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন সদ্য বিবাহিত তরুণী শিউলি মালিক । ঘটনা প্রকাশ্য আসার পর ব্যাঙ্কের সাফাই, পরিবারকে ঋণ শোধের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে, টাকা আটকে রাখা হয়নি ।
জামালপুরের কালাড়া গ্রামের বাসিন্দা দিলীপ মালিক । তিনি একশো দিনের কাজের পাশাপাশি নিয়মিত ভাগচাষের কাজও করতেন। ২০১৩ সালে স্থানীয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে কৃষি ঋণ নেন । এরপর এক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন দিলীপ বাবু। ওই দু্র্ঘটনার পর তাঁর একটি পায়ে স্টিলের প্লেট বসাতে হয়, স্বাভাবিক হাঁটা-চলা বন্ধ হয়ে যায়৷ এরপর আর চাষের কাজ করে উঠতে পারেননি তিনি ৷ একশো দিনের কাজ থেকে মাসিক 6 হাজার টাকা আয়ে কোনওরকমে সংসার চালান৷ এদিকে বছর দুইয়ের মধ্যে ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ করার কথা থাকলেও তা-ও পারেননি । অন্যদিকে কৃষি ঋণের ক্ষেত্রে ঋণ গ্রহিতা কৃষকের উপর বাড়তি চাপ সৃ্ষ্টি করা যায় না বলেই হয়তো স্থানীয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটিও এতদিন চুপ ছিল৷ কিন্তু সম্প্রতি দিলীপ মালিকের মেয়ে শিউলি মালিক নিজের বিয়ের জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রকল্প রূপশ্রীর জন্য আবেদন করেন ৷ যে আবেদন মঞ্জুর হয় ৷ স্থানীয় ব্যাঙ্কে শিউলির নামে টাকাও জমা পড়ে। অভিযোগ, অ্যাকাউন্ট থেকে সেই টাকা তুলতে গেলে ব্যাঙ্কের তরফে বলা হয় বাবার ঋণ শোধ হলে তবেই মেয়েকে রূপশ্রীর টাকা দেওয়া হবে ৷
অভিযোগকারিণী শিউলি মালিক বলেন, "বাবা কৃষি ঋণ নেওয়ার পরে দুর্ঘটনায় পড়েন । তারপর থেকে কাজকর্ম করতে না পারায় ঋণ শোধ করতে পারছেন না। এর মধ্যে গত বছর নভেম্বরে আমার বিয়ের জন্য রূপশ্রী প্রকল্পের টাকার জন্য আবেদন করি। সেই টাকা স্থানীয় ব্যাঙ্কের জমা হলেও ব্যাঙ্ক বলছে বাবার ঋণ শোধ না হলে টাকা দেবে না।" এরপরই প্রশাসনের দ্বারস্থ হন শিউলি মালিক ।
যদিও জামালপুরের ওই রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙ্কের সহকারী ম্যানেজার মহম্মদ শাহজাহান বক্তব্য, "ওই পরিবারকে কৃষি ঋণ শোধ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কোনওভাবেই রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা আটকে রাখা হয়নি । সেই টাকা দিয়ে দেওয়া হবে। "
এই বিষয়ে জামালপুরের বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার বলেন, "রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা কেউ আটকে রাখতে পারে না । বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। "