বর্ধমান, ১৪ ফেব্রুয়ারি : কয়েক লাখ টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠল এক পঞ্চায়েত কর্মীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুরের দু'টি পঞ্চায়েতের। তিন বছরে নয়ছয় হয়েছে কয়েক লাখ টাকা। অভিযোগ উঠেছে পঞ্চায়েত কর্মী সুকান্ত পাল ওরফে ফুলকুমারের বিরুদ্ধে। তাঁর বাড়ি জামালপুর থানার কাঁশরা গ্রামে। তাঁর নামে FIR-ও দায়ের হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন তিনি। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে জামালপুর থানার পুলিশ।
পঞ্চায়েতের ডাটা এন্ট্রি অপারেটার অর্থাৎ VLE পদে কাজ করেন ফুলকুমার। ৭-৮ বছর ধরে এই কাজ করছেন তিনি। জামালপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েতে সবথেকে বেশি সময় কাজ করেছেন। পরে বদলি হয়ে যান আঝাপুর পঞ্চায়েতে। বর্তমানে তিনি একই পদে দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন জামালপুরের বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতে। জামালপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েতে ২০১৭-১৮ বর্ষের অডিট চলার সময়ে দুর্নীতি ধরা পড়ে।
অডিট করতে আসা আধিকারিকরা দু'দফায় চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেন, ১০০ দিনের কাজ থেকে ও কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোসড) তৈরির প্রকল্পে ২৬ লাখ ২০ হাজার টাকা, ইন্দিরা আবাস যোজনার মজুরি বাবদ ১১ লাখ ৬১ হাজার টাকা অতিরিক্ত তোলা হয়েছে। ব্লক প্রশাসনিক কর্তারা বলেন, এই দু'টি প্রকল্পে দক্ষ শ্রমিকের জন্য আলাদা মজুরির ব্যবস্থা নেই। সেইজন্য ন্যূনতম অনুমোদন ও বিল-ভাউচারও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এরপরই জামালপুর ব্লক ও পঞ্চায়েত যৌথভাবে তদন্ত করতে শুরু করে। তখন ফের তাদের নজরে পড়ে ডাটা এন্ট্রি অপারেটার সুকান্ত পাল ১০০ দিনের কাজে গাছ লাগানো, নির্মল বাংলা কর্মসূচি থেকেও টাকা নয়ছয় করেছেন। গতকাল পর্যন্ত ব্লক প্রশাসনিক দপ্তরের কর্তাদের কাছে তিন বছরের যে হিসাব সামনে এসেছে সেই অনুযায়ী কয়েক লাখ টাকা নয়ছয় হয়েছে।
BDO সুব্রত মল্লিক বলেন, "প্রাথমিকভাবে জামালপুর ২ নম্বর ও আঝাপুর পঞ্চায়েত FIR করেছে। তদন্তে যে তথ্য উঠে আসছে, সেটাই পুলিশকে দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে জেলা ও রাজ্যের আধিকারিকদেরও সব জানানো হয়েছে।"
জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানান, পুলিশের কাছে FIR করা হয়েছে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তার বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ও তার পরিবারের সমস্ত অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেন বন্ধ করার জন্যে ব্যাঙ্ককে বলা হয়েছে।