বর্ধমান, 14 নভেম্বর: বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের মর্গ থেকে দেহ পাচারের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে দিন কয়েক আগে ৷ এই ঘটনায় এবার পুলিশের হাতে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য ৷ হাসপাতালের অ্যানাটমি বিভাগ থেকে ভিন রাজ্যে দেহ পাচার করা হত বলে খবর । সেই সব মৃতদেহ নেওয়ার জন্য বরাতও দেওয়া হত বলে পুলিশ জানতে পেরেছে । তবে কে বরাত দিত তার খোঁজে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে । পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি ধরা পড়লে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে ৷
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগ থেকে দেহ পাচারের অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁদের মধ্যে তিনজন মেডিক্যাল কলেজের কর্মী । তাঁরা হলেন গৌতম ডোম, নন্দলাল ডোম এবং অবিনাশ মল্লিক ৷ এঁদের মধ্যে অবিনাশ মল্লিকের বাড়ি দার্জিলিংয়ের মাটিগাড়া থানার শুশ্রূতনগরে। এছাড়া সুমন মিত্র নামে এক ব্যক্তি ও তাঁর বাবা শম্ভু মিত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে হুগলির আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজের এক কর্মীর নাম জড়িয়েছে এই ঘটনায় । ওই কর্মী অবিনাশ মল্লিকের আত্মীয় বলে জানা গিয়েছে । ঘটনার পর থেকে তাঁর খোঁজ মেলেনি । পুলিশ তাঁকে খুঁজছে ।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, মেডিক্যাল কলেজ থেকে মোটা টাকার বিনিময়ে অন্য রাজ্যে দেহগুলি পাচার করার পরিকল্পনা ছিল । তবে দেহ পাচারে একটা বড় চক্র কাজ করছে বলে অনুনান পুলিশের । তাই পাঁচজনের মধ্যে অবিনাশ মল্লিক, গৌতম ডোম ও নন্দলাল ডোমকে আটদিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে । বাকি দু'জন সুমন মিত্র ও তাঁর বাবা শম্ভু মিত্রকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে ।
পুলিশি হেফাজতে নিতেই অবিনাশের এক আত্মীয়ের খোঁজ মিলেছে । তিনি আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজের কর্মী । ইতিমধ্যেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের প্রধানকে নিয়ে একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে । অ্যানাটমি বিভাগে অজ্ঞাতপরিচয় দেহ রাখার ঘরের চাবি অবিনাশের কাছে থাকত ৷ তাই ঘটনার দিন ওই লাশ ঘর অবিনাশ খোলায় কারও কোন সন্দেহ হয়নি । কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা দেহ পাচারের সেই ছক বানচাল করে দেয় বলে জানা গিয়েছে ।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে একটি গাড়িতে করে তিনটে মৃতদেহ পাচার করার চেষ্টা হচ্ছিল । নিরাপত্তারক্ষীদের তৎপরতায় পুলিশের কাছে এই খবর যায়। পুলিশ এই ঘটনায় সাতজনকে আটক করে । তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে । তাঁদের থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, মূলত বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে যেগুলি চিহ্নিত করা হয়, সেই সব দেহ পাচারের চেষ্টা চলছিল । মূলত সকালের দিকে যেহেতু মর্গের সামনে বাইরের লোকজন থাকে না ফলে সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে চেয়েছিল পাচারকারীরা । কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীদের তৎপরতায় তারা ধরা পড়ে যায় ।
আরও পড়ুন: