মেদিনীপুর, 29 জুলাই: আজ মহরম ৷ দেশের পাশাপাশি মহরম পালিত হচ্ছে জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরেও ৷ শহর জুড়ে শনিবার বের হল মহরমের আখড়া । তাতে অংশগ্রহণ করে জেলার শতাধিক আখড়া কমিটি । বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে হয় এই আখড়া ৷ 26 জানুয়ারির মতো মহরমের শোভাযাত্রায় এ দিন দেখা গেল কামান, গোলা, তোপ এবং মিসাইল। তবে মহরমের আখড়ায় সবচেয়ে নজর কেড়েছে ছোটদের বিভিন্ন সাজ ।
এ দিন আখড়া থেকে হোসনাবাদ কমিটির সভাপতি মমতাজ মল্লিক বলেন," আমরা মূলত সম্প্রীতির বার্তা দিতেই এই ট্যাবলোয় অংশগ্রহণ করেছি ৷ আমাদের মোট 15টি ট্যাবলো রয়েছে । শুধু ভারতবর্ষ নয়, সেই সঙ্গেই জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের সম্প্রীতির বার্তা বহন করছি আমরা । মানুষে মানুষে ভেদাভেদ দূর রেখে বিশ্ব মানচিত্রে ভারত অন্যতম জায়গা করেছে ৷ সেটা দেখাতেই আমাদের এই ট্যাবলো।"
প্রসঙ্গত, মূলত মহরম মাসের প্রথম দিনে পালিত হয় ৷ কারণ এই পবিত্র মাসেই নবি মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেছিলেন । কিন্তু মাসের দশম দিন, যা আশুরা নামে পরিচিত, এই দিন কারবালায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন তাদের নবির নাতি হুসেন ইবনে আলির শাহাদাতের মৃত্যুর স্মরণে শোকপ্রকাশ করেন ।
মুহরম শব্দের অর্থ 'অনুমতি নেই' বা 'নিষিদ্ধ । মূলত এই মহরম উপলক্ষে অনেকেই নিজেদের শরীরে আঘাত করে আত্মত্যাগ তুলে ধরে । কেউ কেউ বা সারাদিন উপোস করে এই দিনটি পালন করে । আবার কেউ কেউ কালো পোশাক পরে এই শোকপ্রকাশ করে । এই দিন বিভিন্ন জেলার সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের মহরমের আখড়া বের হয় । এই আখড়ায় অংশগ্রহণ করে জেলার শতাধিক আখড়া কমিটি । দেওয়ানবাগ চক, হোসনাবাদ, সিপাই বাজার, গোলকূয়াচক-সহ ভিন্ন ভিন্ন ক্লাবের কমিটি যোগ দেন এই আখড়ার শোভাযাত্রায় ।
আরও পড়ুন: আশুরার রাত কাটিয়ে আজ ‘দশই মহরম’, শোকে বিহ্বল শিয়ারা
এই শোভাযাত্রা মূলত মেদিনীপুর শহরের বড়তলা চক থেকে গোলকুয়াচক থেকে কলেজ মাঠে প্রবেশ করে । এরপর তারা পুনরায় ফিরে যান যে যার গন্তব্যস্থানে । এ দিন মহরম উপলক্ষে ছিল পুলিশের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা । প্রতিটি কমিটির আগে ও পেছনে ছিল সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী । কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সেই দিকেও ছিল কড়া নজর । এছাড়াও এই মহরমের আগে জরুরি বৈঠক করেছিল পুলিশ পৌরসভা এবং প্রশাসনে আধিকারিকরা । এ দিন ড্রোন উড়িয়েও মহরমের আখড়ায় নজরদারি চালান পুলিশ প্রশাসন ।