চন্দ্রকোণা, 17 অগাস্ট : নদীতে নামলেই আঁচড়ে দিচ্ছে কেউ । টেনে নিয়ে যাচ্ছে বাচ্চাদের । কে টানছে ? বিবরণ দিতে গিয়ে স্থানীয়রা যা বলছে তা শুনলে গা শিউরে উঠবে । পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার মনোহরপুর গ্রামের দাসপাড়ার ঘটনা । এখানকার বাসিন্দারা দাবি করছে, অশরীরী কিছু রয়েছে নদীতে । একটি ছেলের জলে ডুবে মৃত্যু হওয়ার পর থেকেই নাকি এই ঘটনা ঘটছে । গত চার-পাঁচ দিন এটা বেড়ে গেছে । আতঙ্কে রাতে তো ঘর থেকে বের হচ্ছেই না তারা । দিনেও বের হতে ভয় পাচ্ছে । তবে, বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য জানাচ্ছেন, এ কোনও অশরীরী ঘটনা নয় । আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি । ঘটনাস্থান পর্যবেক্ষণ করে বলা যাবে আসলে কী ঘটেছে ।
চন্দ্রকোনা 1 নম্বর ব্লকের মনোহরপুর 1 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত । তার অন্তর্গত মনোহরপুর গ্রামের দাসপাড়ায় ছড়িয়েছে এই আতঙ্ক । দিন হোক বা রাত, গ্রামের পার্শ্ববর্তী শিলাবতী নদীর ঘাটে যেতে চাইছে না কেউ । এদিকে, আর্থিক সমস্যায় পাম্পের সাহায্যে জল ঘরে তুলে নিয়ে যাওয়াও সম্ভব নয় । ফলে, ভয়েই যেতে হচ্ছে নদীতে । বাচ্চারা খেলতে খেলতে নদীতে চলে গেলেই নাকি টেনে নিয়ে যাচ্ছে কেউ । কেউ স্নান করতে নামলেও তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ । গ্রামের কচিকাঁচা থেকে বয়স্ক, সকলেই ভয় পাচ্ছে ভূতের । যদিও গ্রামবাসী এবিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে কিছু জানায়নি ।
স্থানীয়দের মধ্যে মদন রুইদাস নামে একজন বলেন, "গত তিনদিন ধরে এই ধরনের আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে গ্রামে । দিনে এবং রাতে জল থেকে এক অদ্ভুত ধরনের সাদা রঙের জন্তুর মতো বেরিয়ে আসছে । ধরে নিয়ে যাচ্ছে বাচ্চাদের । কখনও কখনও পাও আঁচড়ে দিচ্ছে । যদিও অদ্ভুত ব্যাপার, তাকে দেখা যায়নি । তাই আমরা আতঙ্কে আছি ।" তাঁর আবার দাবি, বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন জানে । কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেয়নি । এর আগে হিজলির একটি ছেলে মারা গেছে । আমরা আতঙ্কে রয়েছি ।"
আরেক বাসিন্দা বলে, "এখানে কিছুদিন আগে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার পর থেকে এই ধরনের আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে । প্রতিদিন কাউকে না কাউকে আঁচড়াচ্ছে । টেনে নিয়ে যাচ্ছে । শুধু তার হাতটাই দেখা যায়, আর কিছুই দেখা যায় না । আমরা এখন আতঙ্কে রয়েছি ।"
এবিষয়ে মনোহরপুর 1 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কৃষ্ণা বেজ বলেন, "আগে আমরা ঘটনাটা শুনিনি । আপনাদের মুখ থেকেই শুনলাম । আমরা খতিয়ে দেখার পর যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেব ।"
অপরদিকে, ঘাটাল বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য আশরাফুল মল্লিক বলেন, "অলৌকিক বা অশরীরী কোনও ঘটনা ঘটেনি । তবে কিছু একটা ঘটেছে । এলাকায় না গিয়ে কিছুই বলতে পারব না ।"