ETV Bharat / state

তৃণমূল নেতার স্কুলের অনুষ্ঠানে র‍্যাপ ভার্সানে গাওয়া হল 'জন-গণ-মন', নিন্দার ঝড় - NATIONAL ANTHEM

তৃণমূলের জেলা সভাপতির স্কুলের অনুষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হল র‍্যাপ ভার্সানে ৷ এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে ৷

ETV BHARAT
র‍্যাপ ভার্সানে গাওয়া হল 'জন-গণ-মন' (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 10, 2025, 7:33 PM IST

মালদা, 10 জানুয়ারি: স্কুলের অনুষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা ! র‍্যাপ ভার্সানে গাওয়া হল জন-গণ-মন ৷ এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে মালদা জেলাজুড়ে ৷ শাসকদল তৃণমূলের জেলা সভাপতির স্কুলের অনুষ্ঠানে এমন ঘটনা ঘটায়, গলা চড়িয়েছে বিরোধীরাও ৷

বেসরকারি স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠান ৷ তাকে কেন্দ্র করে পাঁচদিনের টানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ৷ নাম দেওয়া হয়েছে ‘আমার মেলা’৷ স্কুলের মালিক স্বয়ং তৃণমূলের জেলা সভাপতি আর তাঁর ছেলে তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ৷ স্কুলের মেলার অন্তিম লগ্নে সেই আবদুর রহিম বকসি আর তাঁর ছেলে রিয়াজুল করিম বকসিকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে মানুষ ৷

তৃণমূল নেতার স্কুলের অনুষ্ঠানে র‍্যাপ ভার্সানে গাওয়া হল 'জন-গণ-মন' (নিজস্ব ভিডিয়ো)

বৃহস্পতিবার রাতে মেলার অনুষ্ঠানের মঞ্চে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করা হয়েছে ৷ জাতীয় সংগীতকে র‍্যাপ আঙ্গিকে গেয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন মোসাব্বার হোসেন নামে মোথাবাড়ির এক তরুণ গায়ক ৷ এই ঘটনার জন্য কেন মোসাব্বার-সহ দুই বকসির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে না, সেই প্রশ্ন তুলেছে জেলাবাসী ৷ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে গিয়েছেন রিয়াজুল ৷ তবে ঘাসফুলের জেলা সভাপতি তথা মালতীপুরের বিধায়ক আবদুর রহিম বকসি সাফাই দিয়েছেন, ঘটনার সময় তিনি সেখানে ছিলেন না ৷ কী ঘটেছে, তিনি খোঁজ নিয়ে দেখছেন ৷

আবদুর রহিম বকসি ও তাঁর ছেলের স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠান নিয়ে গত 4 জানুয়ারি থেকে রতুয়ায় ‘আমার মেলা’ নামে একটি মেলার আয়োজন করা হয় ৷ নিজেদের স্কুলের ব্যানারেই এই মেলার আয়োজন করেন তাঁরা ৷ গতকাল রাতে সেই মেলার মঞ্চেই ভারতের জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগ উঠেছে ৷ সেই গানের ভিডিয়ো ক্লিপ ইতিমধ্যে সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ৷ আর তাকে ঘিরেই জেলা জুড়ে উঠেছে প্রতিবাদের ঝড় ৷

ETV BHARAT
বেসরকারি স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিয়ে বিতর্ক (নিজস্ব চিত্র)

এলাকার বাসিন্দা দীপক চট্টোপাধ্যায় বলছেন, "এভাবে জাতীয় সঙ্গীতকে নিয়ে ছেলেখেলা করায় আমি আশ্চর্য ৷ এটা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ ৷ এটা এখনও বাংলাদেশ হয়ে যায়নি ৷ ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় সঙ্গীতকে নিয়ে আমরা যা ইচ্ছে তাই করতে পারি না, এই ঘটনায় আমি মর্মাহত ৷ আমি আরও মর্মাহত যখন দেখি, র‍্যাপ ভার্সানে জাতীয় সঙ্গীত যেখানে গাওয়া হচ্ছে, সেই আসরে উপস্থিত মানুষজন হাততালি দিচ্ছেন ৷ কোন দেশ এটা ? এমন ঘটে চললে রাষ্ট্র খুব তাড়াতাড়ি বিপন্ন হয়ে যাবে ৷ এই ঘটনায় প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ করা উচিত ৷ প্রশাসনের উচিত, গায়ক-সহ ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দ্রুত কড়া পদক্ষেপ করা ৷ এখানে শিক্ষার কী হাল, এই ঘটনায় তা সামনে এসেছে ৷"

এই ঘটনায় চাঁচল সিদ্ধেশ্বরী ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক সাগরনীল চট্টোপাধ্যায় বলছেন, "সব গান র‍্যাপ ভার্সানে গাওয়া যায় না ৷ কিন্তু গতকাল হাজারো মানুষের সামনে সেটাই করা হয়েছে ৷ এটা ভীষণ লজ্জার ৷ এতে দেশের জাতীয় সঙ্গীত বিপন্ন হয়েছে ৷ এভাবে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করার প্রতিবাদ জানাচ্ছি ৷ এই সঙ্গীত আমাদের বুকের ভিতর তোলপাড় ফেলে ৷ আমাদের নতুন কাজ করতে উৎসাহ জোগায় ৷ সবচেয়ে বড় বিষয়, যে স্কুলে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার পর দিনের কাজ শুরু হয়, সেখানেই এমন লজ্জার ঘটনা ঘটেছে ৷"

এলাকার বাসিন্দা তথা বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য অভিষেক সিংহানিয়ার বক্তব্য, "এই মেলার আয়োজক ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বকসি ৷ সেই মেলার মঞ্চে ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করা হয়েছে ৷ আমি ধিক্কার জানাচ্ছি ৷ শিক্ষার অভাব ছাড়া এমন কাজ করা যায় না ৷ ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া কিংবা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার কিছু নিয়ম রয়েছে ৷ গতকাল যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের সবার বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে ৷ জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা মানে গোটা দেশের অপমান ৷"

এনিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বকসির সাফাই, "যখন এই গান গাওয়া হয়েছে, তখন আমি সেখানে ছিলাম না ৷ মালদায় ছিলাম ৷ কখন এই গান গাওয়া হয়েছে, আমি জানি না ৷ যে গান গেয়েছে, সে যদি বিকৃতভাবে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷"

মালদা, 10 জানুয়ারি: স্কুলের অনুষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা ! র‍্যাপ ভার্সানে গাওয়া হল জন-গণ-মন ৷ এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে মালদা জেলাজুড়ে ৷ শাসকদল তৃণমূলের জেলা সভাপতির স্কুলের অনুষ্ঠানে এমন ঘটনা ঘটায়, গলা চড়িয়েছে বিরোধীরাও ৷

বেসরকারি স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠান ৷ তাকে কেন্দ্র করে পাঁচদিনের টানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ৷ নাম দেওয়া হয়েছে ‘আমার মেলা’৷ স্কুলের মালিক স্বয়ং তৃণমূলের জেলা সভাপতি আর তাঁর ছেলে তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ৷ স্কুলের মেলার অন্তিম লগ্নে সেই আবদুর রহিম বকসি আর তাঁর ছেলে রিয়াজুল করিম বকসিকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে মানুষ ৷

তৃণমূল নেতার স্কুলের অনুষ্ঠানে র‍্যাপ ভার্সানে গাওয়া হল 'জন-গণ-মন' (নিজস্ব ভিডিয়ো)

বৃহস্পতিবার রাতে মেলার অনুষ্ঠানের মঞ্চে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করা হয়েছে ৷ জাতীয় সংগীতকে র‍্যাপ আঙ্গিকে গেয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন মোসাব্বার হোসেন নামে মোথাবাড়ির এক তরুণ গায়ক ৷ এই ঘটনার জন্য কেন মোসাব্বার-সহ দুই বকসির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে না, সেই প্রশ্ন তুলেছে জেলাবাসী ৷ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে গিয়েছেন রিয়াজুল ৷ তবে ঘাসফুলের জেলা সভাপতি তথা মালতীপুরের বিধায়ক আবদুর রহিম বকসি সাফাই দিয়েছেন, ঘটনার সময় তিনি সেখানে ছিলেন না ৷ কী ঘটেছে, তিনি খোঁজ নিয়ে দেখছেন ৷

আবদুর রহিম বকসি ও তাঁর ছেলের স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠান নিয়ে গত 4 জানুয়ারি থেকে রতুয়ায় ‘আমার মেলা’ নামে একটি মেলার আয়োজন করা হয় ৷ নিজেদের স্কুলের ব্যানারেই এই মেলার আয়োজন করেন তাঁরা ৷ গতকাল রাতে সেই মেলার মঞ্চেই ভারতের জাতীয় সঙ্গীত অবমাননার অভিযোগ উঠেছে ৷ সেই গানের ভিডিয়ো ক্লিপ ইতিমধ্যে সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ৷ আর তাকে ঘিরেই জেলা জুড়ে উঠেছে প্রতিবাদের ঝড় ৷

ETV BHARAT
বেসরকারি স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিয়ে বিতর্ক (নিজস্ব চিত্র)

এলাকার বাসিন্দা দীপক চট্টোপাধ্যায় বলছেন, "এভাবে জাতীয় সঙ্গীতকে নিয়ে ছেলেখেলা করায় আমি আশ্চর্য ৷ এটা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ ৷ এটা এখনও বাংলাদেশ হয়ে যায়নি ৷ ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় সঙ্গীতকে নিয়ে আমরা যা ইচ্ছে তাই করতে পারি না, এই ঘটনায় আমি মর্মাহত ৷ আমি আরও মর্মাহত যখন দেখি, র‍্যাপ ভার্সানে জাতীয় সঙ্গীত যেখানে গাওয়া হচ্ছে, সেই আসরে উপস্থিত মানুষজন হাততালি দিচ্ছেন ৷ কোন দেশ এটা ? এমন ঘটে চললে রাষ্ট্র খুব তাড়াতাড়ি বিপন্ন হয়ে যাবে ৷ এই ঘটনায় প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ করা উচিত ৷ প্রশাসনের উচিত, গায়ক-সহ ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দ্রুত কড়া পদক্ষেপ করা ৷ এখানে শিক্ষার কী হাল, এই ঘটনায় তা সামনে এসেছে ৷"

এই ঘটনায় চাঁচল সিদ্ধেশ্বরী ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক সাগরনীল চট্টোপাধ্যায় বলছেন, "সব গান র‍্যাপ ভার্সানে গাওয়া যায় না ৷ কিন্তু গতকাল হাজারো মানুষের সামনে সেটাই করা হয়েছে ৷ এটা ভীষণ লজ্জার ৷ এতে দেশের জাতীয় সঙ্গীত বিপন্ন হয়েছে ৷ এভাবে জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করার প্রতিবাদ জানাচ্ছি ৷ এই সঙ্গীত আমাদের বুকের ভিতর তোলপাড় ফেলে ৷ আমাদের নতুন কাজ করতে উৎসাহ জোগায় ৷ সবচেয়ে বড় বিষয়, যে স্কুলে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার পর দিনের কাজ শুরু হয়, সেখানেই এমন লজ্জার ঘটনা ঘটেছে ৷"

এলাকার বাসিন্দা তথা বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য অভিষেক সিংহানিয়ার বক্তব্য, "এই মেলার আয়োজক ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বকসি ৷ সেই মেলার মঞ্চে ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করা হয়েছে ৷ আমি ধিক্কার জানাচ্ছি ৷ শিক্ষার অভাব ছাড়া এমন কাজ করা যায় না ৷ ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া কিংবা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার কিছু নিয়ম রয়েছে ৷ গতকাল যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের সবার বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে ৷ জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা মানে গোটা দেশের অপমান ৷"

এনিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বকসির সাফাই, "যখন এই গান গাওয়া হয়েছে, তখন আমি সেখানে ছিলাম না ৷ মালদায় ছিলাম ৷ কখন এই গান গাওয়া হয়েছে, আমি জানি না ৷ যে গান গেয়েছে, সে যদি বিকৃতভাবে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.