কলকাতা, 10 জানুয়ারি: প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য কলকাতা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তৈরি করা পুরো প্যানেলের উপর আপাতত স্থগিতাদেশ দিল হাইকোর্ট ৷ শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু । এই নিয়ে আগামী 21 জানুয়ারি রাজ্যকে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ।
নিয়ম অনুয়ায়ী (সিনিয়রিটি) চাকরিতে নিযুক্ত হওয়ার পর কতদিন চাকরি করছেন, সেই ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল তৈরি করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ । কিন্তু কলকাতা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের বিরুদ্ধে সেই নিয়ম না মানার অভিযোগ ওঠে ৷ অভিযোগ, অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল তৈরি না করেই নিয়োগ করা হয়েছে ৷ সেই নিয়ে মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে ৷
এই নিয়ে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম ও গোপা বিশ্বাসের বক্তব্য, "আবেদনকারী বনশ্রী মাইতি কলকাতার একটি স্কুলে কর্মরত । শিক্ষিকার অভিযোগ তিনি 2003 সালে মেদিনীপুরের একটি স্কুলে চাকরি পান । পরে 2007 সালে তিনি কলকাতার একটি স্কুলে বদলি হন । তিনি বর্তমানে যে স্কুলের সহ-শিক্ষিকা সেই স্কুলে সংঘমিত্রা সিনহা নামে এক শিক্ষিকাকে প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে পাঠানো হয়েছে । এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বনশ্রী মাইতি ।"
বনশ্রী মাইতির অভিযোগ, সিনিয়রিটির ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল তৈরি করা হয়েছে । কিন্তু সংঘমিত্রা সিনহা 2006 সালে চাকরিতে নিযুক্ত হয়েছিলেন । সম্প্রতি 21 জনের নামের যে তালিকা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ করেছে, সেখানে সংঘমিত্রা সিনহার নাম আগে কীভাবে এল ? তিনি তো পরে চাকরি পেয়েছিলেন ?
রাজ্যের আইনজীবী ভাস্করপ্রসাদ বৈশ্যের যুক্তি, 2007 সালের বদলিটাকে নতুন নিয়োগ হিসাবে ধরা হয়েছে । এই কথা শুনে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ৷ তিনি জানতে চান, "তার মানে আপনার বদলি হতে পারে । কিন্তু আপনি সিনিয়রিটি (বয়সজনিত সুবিধা) হারাবেন ?’’ রাজ্যের আইনজীবীর যুক্তিকে তিনি হাস্যকর বলেও উল্লেখ করেন ৷
বিচারপতি রাজ্যের আইনজীবীকে বলেন, ‘‘21 জানুয়ারি ফের শুনানি রাখা হচ্ছে, ইতিমধ্যে আপনি রিপোর্ট দিয়ে জানান পুরো বিষয়ে ঠিক কী হয়েছে ।’’