কেশপুর, 10 মার্চ : কেশপুরের মনোনয়ন জমা দিলেন তৃণমূল প্রার্থী শিউলি সাহা। তিনি বললেন, কেশপুর হবে বিজেপি কংগ্রেস ও সিপিএমের শেষ। উন্নয়নই শেষকথা। 221-এর বেশি সিটে জয়লাভ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হবেন।
একসময়ে লাল দুর্গ হিসাবে পরিচিত ছিল কেশপুর ৷ তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর রাতারাতি কেশপুরকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করে। আর সেই পরিবর্তনের ডাক দিয়ে একের পর এক নির্বাচনে জয়ী হয় তৃণমূল। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কেশপুর থেকে জিততে মনোনয়নপত্র দাখিল করল তৃণমূল প্রার্থী শিউলি সাহা। এদিন তিনি মনোনয়ন দাখিল করার পর সাংবাদিকদের জানালেন, "কেশপুর হবে সিপিএম-বিজেপি-কংগ্রেসের শেষপুর ৷ যেখানে উন্নয়নই শেষ কথা বলবে।"
প্রসঙ্গত মেদিনীপুর থেকে কুড়ি কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত এই কেশপুর। কেশপুরের নাম শুনলে একসময় মানুষ ভয়ে আঁতকে উঠত। লালদুর্গ হিসাবে পরিচিত কেশপুরে অশান্তি লেগেই থাকত । বোমা-গুলি-মারামারি ছিল নিত্য ঘটনা ৷ রক্তাক্ত কেশপুর দেখেছে জঙ্গলমহলবাসী । এরপর 2011 এর পর এই কেশপুর থেকে পরিবর্তনের ডাক দেন তৃণমূল নেত্রী এবং একের পর এক বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হতে থাকে তৃণমূল। এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি রাস্তাঘাট এবং জল নিকাশি ব্যবস্থার দিকে নজর দেন এলাকার বিধায়িকা। পরবর্তীকালে যদিও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে পুনরায় রক্তাক্ত হয়ে ওঠে কেশপুর। 2019 এর লোকসভা নির্বাচনে এলাকার ভোটের দিন অশান্তির বাতাবরণ ছড়িয়ে পড়ে।ঘাটাল থেকে প্রার্থী হন ভারতী ঘোষ ৷ ভোটের দিন পুরো ভারতবর্ষ তাকিয়ে থাকে তার দিকে ৷ কারণ ভারতী ঘোষ এই কেশপুরে গিয়েই আক্রান্ত হন এবং সেই ভারতী ঘোষকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কেশপুর।
এরপর দফায় দফায় ফের রক্তাক্ত হয়ে ওঠে কেশপুর। যদিও লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজেপির জয়জয়কারের পর ফের কেশপুরে জোড়া ফুলের বদলে ফুটতে শুরু করেছে পদ্মফুল। এলাকাটি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত হওয়ায় তৃণমূলের দিকে পাল্লা ভারী বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও তৃণমূল এই একটি সিটে বিপুল ভোটে জয়ী হবে বলে ধরে নিয়ে এবারের নির্বাচনী লড়াইয়ের ডাক দিয়েছে। তাই এবারে কেশপুর থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন শিউলি সাহা।
আরও পড়ুন : নন্দীগ্রামে ধাক্কাধাক্কিতে মমতার পায়ে চোট, ফিরছেন কলকাতায়
এদিন মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শিউলি সাহা বলেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের ছোঁয়া প্রতিটি ঘরে পৌঁছে গিয়েছে ৷ সেটা খাদ্যসাথী হোক বা কন্যাশ্রী-রূপশ্রী-যুবশ্রী প্রকল্প ৷ রাস্তাঘাট এবং এলাকার যাবতীয় উন্নয়ন হয়েছে দিদির হাত ধরেই । এখানে সিপিএম হার্মাদদের কেউ একটি ভোটও দেবে না। কারণ তারা যেভাবে বিগত দিনে এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছিল ও আতঙ্ক ছড়িয়েছিল তাতে মানুষ অতিষ্ট হয়ে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিল ৷ ।তাই তারা এবারে তৃণমূলকে ভোট দিয়ে হাত শক্ত করবে ।
বিজেপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে ভারতী ঘোষ গতবারের এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছিল ৷ যদিও এলাকার মানুষ তাকে বাধা দেয় এবং তিনি এমন নাটক করেন যেন তিনি আক্রান্ত হয়েছেন। এইভাবে তৃণমূলের ভোট কখনও নষ্ট করতে পারবে না কেউ। তাই এবারে বিপুল ভোটে জয়ী হবে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 221 আসন নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হবেন।