মেদিনীপুর (পশ্চিম মেদিনীপুর), 7 ফেব্রুয়ারি: পৌরসভা নির্বাচনে (Municipal Elections) তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা ৷ এমনকী, বিরোধী প্রার্থীদের ভয় দেখাতে পুলিশকেও ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছিল ৷ সেই ভোটের পর প্রায় এক বছর হতে চলল ৷ নির্বাচনে পুলিশকে ব্যবহার করে তৃণমূলের তরফে বিরোধীদের ভয় দেখানোর অভিযোগ আবারও সামনে এল ৷ এবার অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসেরই নেতা সৌমেন খান ৷ তিনি আবার পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর পৌরসভায় (Medinipur Municipality) তৃণমূল পরিচালিত বোর্ডের চেয়ারম্যান ৷
স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে৷ অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল ৷ এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরা উড়িয়ে দিয়েছেন সৌমেন খানের দাবি ৷ শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে এই মন্তব্যের জন্য সৌমেন খানের নামে অভিযোগও জানানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন ৷ আর শাসক দলের নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের ফায়দা নিতে আসরে নেমে পড়েছে বিজেপি (BJP) ৷ দলের নেতা অরূপ দাসের বক্তব্য, শাসকের সন্ত্রাস নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ যে সত্যি ছিল, তার প্রমাণ সৌমেন খানের বক্তব্যে পাওয়া গেল ৷
সৌমেন খান যাঁর কথা বলেছেন, তাঁর নাম অর্পিতা নায়েক ৷ তিনি মেদিনীপুর পৌরসভার 14 নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর ৷ তাঁর নাম তৃণমূলের প্রথম প্রার্থী তালিকায় ছিল ৷ কিন্তু পরে সেই নাম বাদ যায়৷ তখন তিনি নির্দল হিসেবেই ভোটে লড়েন ৷ তাঁর স্বামী বিশ্বেশ্বর নায়েক প্রাক্তন কাউন্সিলর ৷ মনোনয়ন জমা দিতে ও পরে স্ত্রীকে জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন ৷ প্রায় 400 ভোটে জেতেন অর্পিতা ৷
কিন্তু অর্পিতাকে হারাতে অনেক চেষ্টা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন সৌমেন খান ৷ মেদিনীপুরে একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে মঞ্চ থেকেই তিনি দাবি করেন, ‘‘এই নির্দল কাউন্সিলরকে হারানোর জন্য সেই সময় পুলিশ প্রশাসন এবং বেশ কিছু গুন্ডা-সহ বহু মানুষ মাঠে নেমেছিল । কিন্তু তারপরও ওয়ার্ডের মানুষের ভালবাসায় শেষ পর্যন্ত জয়ী হন এই নির্দল কাউন্সিলর । তাই ওয়ার্ডের মানুষকে বলব এই নির্দল কাউন্সিলরের পাশে থাকতে । যদিও এতদিন আমি সুযোগ পাইনি সত্যি কথা বলার ৷ আজ মঞ্চে সুযোগ পাওয়ায় সত্যি কথা স্বীকার করলাম ।’’
এই নিয়ে তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, ‘‘পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খানের সম্ভবত কোনও শারীরিক সমস্যা হয়েছে । তাছাড়া তিনি নতুন জায়গা থেকে এসে আমাদের দলে ঢুকেছেন । তাই তিনি আমাদের দলের ব্যাপারগুলো বুঝে উঠতে পারছেন না । তাই তিনি এসব ভুলভাল বলে বেড়াচ্ছে ন। কোনোভাবেই রিগিং বা ভয় দেখিয়ে অথবা পুলিশ প্রশাসন হুমকি দিয়ে আমরা ভোট করাইনি । এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলছেন আমাদের পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেনবাবু ।’’
অন্যদিকে এই ঘটনায় তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপি । বিজেপি জেলা মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, ‘‘আমরা বারবার অভিযোগ করে এসেছিলাম পৌরসভা ভোট লুট হয়েছে । শুধু আমাদের জেলা বা শহরে নয় গোটা রাজ্যজুড়ে তা চলেছে । প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পুলিশ এই ভোট করিয়েছে ভয় দেখিয়ে ও হুমকি দিয়ে ৷ আজ তার সার্টিফিকেট দিলেন তৃণমূলের পৌরসভার চেয়ারম্যান নিজেই ।’’
আরও পড়ুন: হাত পেতে টাকা নিচ্ছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ! ভিডিয়ো ফাঁসে বিপাকে তৃণমূল