ঘাটাল, 6 মার্চ: ভোটের বাজি জিততে মরিয়া সবপক্ষ ৷ রাজনীতির লড়াই হামেশাই ছাপিয়ে যাচ্ছে শালীনতাকে ৷ বিরোধীশিবিরকে আক্রমণ করতে গিয়ে মাত্রা ছাড়াচ্ছেন বিভিন্ন দলের নেতা, মন্ত্রী, কর্মীরা ৷ এবারের নির্বাচনে বাকিদের পিছনে ফেলে ফ্রন্টফুটে খেলছে তৃণমূল আর বিজেপি ৷ একে অপরকে ঘায়েল করার এতটুকুও সুযোগ ছাড়ছে না যুযুধান দুই পক্ষ ৷ সংঘর্ষের এমন আবহেই ব্য়তিক্রমী ছবি পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে ৷ পরস্পরকে আক্রমণ নয়, এখানে চোখ কাড়ল একেবারে বিপরীত মেরুর দুই রাজনৈতিক শিবিরের সুষ্ঠ সহাবস্থান ৷ পাশাপাশি দেওয়ালেই শান্তিপূর্ণভাবে চলল দেওয়াল লিখনের কাজ ৷ নিজের হাতেই দেওয়াল লিখন করলেন তৃণমূল প্রার্থী ৷ তখনও পর্যন্ত প্রার্থীর নাম ঘোষিত না হওয়ায় দেওয়াল লিখনের বাদবাকি কাজটুকু এগিয়ে রাখলেন বিজেপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা ৷
ভোট মরশুমে এবারের হিট স্লোগান ‘খেলা হবে’ ৷ তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলছেন, ‘খেলা হবে’ ৷ তাঁর দলের নেতাকর্মীরাও বলছেন, ‘খেলা হবে’ ৷ এমনকী, বিজেপির নেতাকর্মীদের মুখেও শোনা যাচ্ছে একই স্লোগান ৷ আর খেলা হবে-র ব্য়াখ্য়া দিতে গিয়ে নানা মুনির মুখে উঠে আসছে নানা মত ৷ শনিবার যেমন এই স্লোগান শোনা গেল ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী শঙ্কর দলুইয়ের গলায় ৷ এদিন ঘাটাল পুর এলাকার তিন নম্বর ওয়ার্ডে দেওয়াল লিখন করতে দেখা গেল তাঁকে ৷ ঠিক একই সময়ে পাশের দেওয়ালে প্রচারের কাজ সারছিলেন বিজেপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা ৷
আরও পড়ুন : ভোটের আগে রাজনৈতিক তরজায় জটু-রুদ্র
শঙ্করের ব্যাখ্য়া, খেলা হবে-র আসল অর্থ এটাই ৷ প্রত্য়েক মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শ প্রকাশ করার সুযোগ পাবেন ৷ তাতে অন্য কেউ বাধা দেবে না ৷ এমন সুষ্ঠ সহাবস্থানই পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্য বলে জানান শঙ্কর ৷ তাঁর মতে, যেভাবে এদিন বিজপি ও তৃণমূল একসঙ্গে পাশাপাশি দেওয়াল লিখন করেছে, আগামী দিনে এভাবেই অন্যান্য় রাজনৈতিক কর্মসূচিও শান্তিপূর্ণভাবেই পালিত হবে এই রাজ্যে ৷
প্রায় একই সুর শোনা গিয়েছে বিজেপি কর্মীদের গলাতেও ৷ খেলা হবে স্লোগানের প্রসঙ্গ টেনে তাঁরা বলেন, বাংলার মানুষ এমন খেলাই দেখতে চায় ৷ যেখানে হিংসা, হানাহানি, রক্তপাত নেই ৷ ভোটপ্রচারের এই কর্মসূচি তাঁদের কাছে উৎসবের মতো বলেই দাবি করেন ঘাটাল নগর মণ্ডলের বিজেপি কর্মীরা ৷
তৃণমূল-বিজেপির এই বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ নজর কেড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও ৷ যেভাবে পরস্পর বিরোধী দুই দলের নেতাকর্মীরা আনন্দ করে দেওয়াল লিখন করেছেন, তা দেখে খুশি এলাকাবাসী ৷ তাঁদের আশা, ভোট চলাকালীন এবং তার পরেও বজায় থাকবে সৌহার্দ্যের এই পরিবেশ ৷