মেদিনীপুর, 4 এপ্রিল : মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো মিষ্টি দোকান খোলা হয়েছে দুপুর 12 টা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত। কিন্তু লকডাউনের জেরে নেই ছানার সাপ্লাই । কর্মীরাও অনেকে এখন বাড়িতে বসে। তাই দোকানের ট্রেগুলিতে নেই রকমারি মিষ্টি । এদিকে আবার কোরোনা আতঙ্ক । সংক্রমণের ভয় । তাই আপাতত নামেই খোলা মিষ্টির দোকান । গ্রাহকের দেখা নেই । মেদিনীপুরের দোকানিদের কেউ কেউ বলছেন, এতে লাভের চেয়ে লোকসান বেশি । কেউ আবার দোকান খোলা রাখার সময় বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছেন ।
আজকে 11 দিনে পড়ল লকডাউন । 14 তারিখে তা উঠবে কি না তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে । এই পরিস্থিতিতে শুধু অত্যাবশকীয় পণ্যের দোকান খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছিল সরকার । কিন্তু তারপর মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, 4 ঘণ্টা করে মিষ্টির দোকান খোলা থাকবে । তারপর থেকেই রাজ্যের প্রায় সব জেলায় খোলা মিষ্টির দোকান । কিন্তু রকমারি মিষ্টি নেই । কারণ সেভাবে সরবরাহ নেই দুধ বা ছানার । তাই রীতিমতো মাছি তাড়াচ্ছে দোকানগুলো ।
এবিষয় মিষ্টি ব্যবসায়ী শশধর রায় বলেন, "এই চার ঘণ্টার সুবিধা দেওয়ায় আমরা মিষ্টির দোকান খুলেছি । কিন্তু মিষ্টি দোকান খোলার জন্য প্রয়োজন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত । কেননা যে পরিমাণ ছানা আমাদের কিনতে হয় সেই পরিমাণ ছানার মিষ্টি তৈরি করতে সময় অনেকটাই লাগে । তাছাড়া সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেই মিষ্টি বিক্রি করলে তবে দু'পয়সা আমরা দেখতে পাই এবং আমাদের শ্রমিকদের বেতন দিয়ে কিছুটা লাভের মুখ দেখতে পাই । এই চার ঘণ্টায় ঠিকমতো ছানার যোগান পাচ্ছি না। তার ফলে লাভের বদলে লোকসান হচ্ছে বেশি । তাছাড়া এই ভরদুপুরে দোকান খোলায় গ্রাহকরা কিছুতেই আসছে না দোকানে । রোদে গ্রাহকরা বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না । যার দরুণ যত পরিমাণ মিষ্টি করছি সেগুলো নষ্ট হচ্ছে। এতে আখেরে ক্ষতি আমাদের ।"
এবিষয়ে মনোজ রায় নামে আরেক মিষ্টি ব্যবসায়ী বলেন, "এই চার ঘণ্টায় লাভের পরিবর্তে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হচ্ছে । মানুষ এই সময়টায় দোকানে আসতে পারছে না । তাছাড়া ছানার সঠিক জোগান না থাকায় আমরা ছানার মিষ্টি বানাতে পারছি না । তাই আদতে ক্ষতি হচ্ছে আমাদের । এই সময়টা বাড়ালে ভালো হত ।"
যদিও ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে বলে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে মিষ্টি ব্যবসায়ীদের কিছুটা সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এই দোকান খোলার তবে সময় আরও বাড়বে কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে । আর মিষ্টির দোকান খোলা রাখার সময় বাড়ানো হলে মানুষ যে ভিড় করবে না বা সব নিয়ম মেনে লাইন দিয়ে মিষ্টি কিনবে সাম্প্রতিক কিছু ছবি দেখে সেটাও নিশ্চিত করা যাচ্ছে না । ফলে স্থানীয়দের একাংশ দাবি করছে, এই সময় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া কোনও দোকানই খোলা রাখা উচিত নয় ।