মেদিনীপুর, 30 এপ্রিল: আসছে রবীন্দ্রজয়ন্তী ৷ প্রতি বছরের মতো এবারও রাজ্যজুড়ে নানাবিধ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী পালিত হবে ৷ তাঁর গান, কবিতা পাঠের মধ্যে দিয়ে বিশ্বকবিকে স্মরণ করবে অনুরাগীরা ৷ কিন্তু এই ডিজিটাল যুগে কোথাও কি হারিয়ে গিয়েছেন কবিগুরু ? হারিয়েছে তাঁর বই পড়া, গান শোনার ইচ্ছে ? দায়িত্ব শুধু তাঁর মূর্তিতে মাল্যদান, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ৷ অনুষ্ঠান করেই বারবার দায় সেরেছে জঙ্গলমহল ৷
25 বৈশাখ সকালে প্রভাতফেরি, শোভাযাত্রা, বিশ্বকবির মূর্তিতে মাল্যদান এবং তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো- এর সঙ্গে কচিকাঁচা-সহ বড়দের অনুষ্ঠান ৷ কলকাতায় জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি, রবীন্দ্রসদন ও শান্তিনিকেতনে অনুষ্ঠানই বিখ্যাত ৷ এর পাশে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তাঁর জন্মদিবস পালিত হয় ৷ এর মধ্যে রয়েছে জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুর ৷
এরপর দিন কি আর মনে পড়ে কবিগুরুর কথা ? বই বিক্রেতা বই বিক্রেতা গৌতম সরকার জানালেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বই পড়ার মানুষের সংখ্যা আগের মতো নেই ৷ কমে গিয়েছে, তবে একেবারে শূন্য হয়ে যায়নি ৷ এর জন্য সামাজিক মাধ্যমকে দায়ী করলেন তিনি ৷ তাঁর পর্যবেক্ষণ, বর্তমান যুগে কচিকাঁচা থেকে কিশোর-কিশোরীরা বেশির ভাগ সময় মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকেন ৷ সেখানে সোশাল মিডিয়ায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা প্রকাশিত হয় ৷ কিন্তু তা অনেকাংশেই ভুল ৷ তাই প্রথম যারা সামাজিক মাধ্যম থেকে কবিগুরুর কবিতা বা অন্য কোনও সাহিত্যকর্ম পড়ছে, তারা ভুল পড়ছে ৷
এদিকে রবীন্দ্র অনুরাগী অরূপ পালের দাবি, ইন্টারনেটের যুগে এই রবীন্দ্র-সাহিত্য আরও ছড়িয়ে পড়া উচিত ৷ তবে তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পঠনপাঠনের ধারণা নিয়ে আক্ষেপ করেন ৷ বিশ্বকবি একসময় যে চিন্তাধারা নিয়ে মুক্ত, স্বাধীন শিক্ষা ব্যবস্থার কথা তুলে ধরেছিলেন ৷ এযুগে সেটা নেই ৷ অন্যদিকে রবীন্দ্রশিল্পী জয়ন্ত সাহা অবশ্য রবীন্দ্রনাথের প্রতি আগ্রহ কমার জন্য সমাজের দিকেই আঙুল তুলেছেন ৷ তাঁর অভিযোগ, এখন বাংলা মাধ্যম ও ইংরেজি মাধ্যম স্কুল রয়েছে ৷ ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে সেভাবে পড়ানো হয় না ৷ আর শুধুমাত্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাবা-মায়ের নাম জানালেই তাঁকে জানা সম্ভব নয় ৷ কচিকাঁচাদের কাছে তাঁকে সঠিক ভাবে জানানোর মানুষের অভাবকে তিনি দায়ী করছেন ৷
আরও পড়ুন: বিশ্বকবির শিক্ষা ভাবনার সঙ্গে মিল রয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতির, মত রাষ্ট্রপতির