কেশিয়াড়ি, 14 মার্চ: "কেন আন্দোলন করে স্কুল বন্ধ রেখেছিলেন ? এই প্রশ্নের আগে উত্তর দিন ৷ আর যদি ডিএ-এর জন্য স্কুলে আসেননি, তবে ডিএ পেলেই আসবেন স্কুলে ৷" এইরকম হুমকি দিয়ে শিক্ষকদের স্কুলে ঢুকতে বাধা দিলেন অভিভাবকরা । যদিও পরে প্রধান শিক্ষকের মধ্যস্থতায় আলোচনার আশ্বাস দিলে শিক্ষকদের স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হয় । সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ির বনদেউলী হাইস্কুলের ঘটনা ।
ডিএ ইস্যুতে মূলত ধর্মঘটে সামিল হয়ে আন্দোলন করার শাস্তি হিসাবে স্কুলের শিক্ষকদের এইরকমই নিদান দিলেন পড়ুয়াদের অভিভাবকরা (Paschim Medinipur News)। প্রসঙ্গত, চলতি মাসের 10 তারিখ থেকে মহার্ঘভাতার দাবিতে যৌথ মঞ্চের ডাকা ধর্মঘটে সামিল হয়েছিলেন বনদেউলী স্কুলের 9 জন শিক্ষক। বনদেউলী হাইস্কুলে বর্তমানে মোট 280 জন পড়ুয়া রয়েছে । এর মধ্যে ধর্মঘটের দিন 180 জন পড়ুয়া স্কুল এলেও শিক্ষক না আসায় সুষ্ঠুভাবে স্কুল হয়নি । সেই ঘটনায় ক্ষোভ জন্মায় গ্রামবাসীদের মধ্যেও । এরপরেই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতেই হাজির না-হওয়ার শিক্ষকরা সোমবার স্কুলে এলে তাদের ঘিরে ধরেন অভিভাবকেরা । তাদের খবর দেখাতে থাকেন একটার পর একটা । এমনকী শিক্ষকদের গেটে ঢুকতে বাধা দেন অভিভাবক-সহ এলাকার মানুষজন ।
এই ঘটনায় হতচকিত হয়ে পড়েন শিক্ষকেরা । প্রথমে তাদের কোনও কথাই শুনতে চায়নি এলাকাবাসী । অভিভাবকদের দাবি, যেদিন ডিএ পাবেন সেদিন স্কুলে আসবেন । নিদান দিয়ে স্কুলগেট ঘণ্টাখানেক ঘেরাও করে রাখেন অভিভাবকরা । শিক্ষকরা তাদের আন্দোলনের কথা অভিভাবকদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও তা বুঝতে কার্যত নারাজ । অভিভাবকের তরফের প্রদীপ কুমার সিট বলেন, "শিক্ষকদের দাবিকে আমরা সমর্থন করি ৷ অবশ্যই তাদের ন্যায্য পাওনা পাওয়ার অধিকার আছে ৷ তবে তার জন্য স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হবে তা নয় । এটাকে আমরা মানতে পারছি না। সেই দিন এত ছাত্রছাত্রী স্কুলে এল, অথচ শিক্ষকেরা এলেন না ৷ শিক্ষাদান করতে হলে আগে এর জবাব শিক্ষকদের দিতেই হবে । তবেই আমরা তাদের স্কুলে আসা মেনে নেব ।"
আরও পড়ুন: ডিএ নিয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না-নিলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি জুটার
এই প্রসঙ্গেই শিক্ষকদের তরফে সোমনাথ দে বলেন, "আমরা আমাদের ন্যায্য পাওনা পাওয়ার অধিকার নিয়ে লড়াই করছি । তবে অভিভাবকরা আমাদের ঘেরাও করে যে প্রশ্ন তুলেছে সেটাও ন্যায্য । প্রধান শিক্ষকের সাহায্যে গ্রামবাসীদের সঙ্গে মধ্যস্থতা করেই আমরা আমাদের সমস্যা মেটাব।"