চন্দ্রকোনা, ১৩ মার্চ : অভাবের সংসার। তাই একমাত্র সন্তানকে ছেড়ে দিয়ে এলেন অচেনা জায়গায়। পরে স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের তৎপরতার গতকাল ডেবরা থানার পান্না গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয় ওই নাবালককে। তুলে দেওয়া হয় ঘাটাল চাইল্ড লাইনের হাতে। ঘটনাটি চন্দ্রকোনার দরবস্তি বালা গ্রামের।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ডেবরা থানার পানিখোলা গ্রামের বাসিন্দা অঞ্জলি সিংয়ের দ্বিতীয় স্বামী বিকাশ সিং। অঞ্জলির প্রথম পক্ষের সন্তান সাত বছরের দেব সিং। পেশায় বিকাশ ও অঞ্জলি মজুর। সেইসূত্রেই কিছুদিন আগে চন্দ্রকোনার দরবস্তি বালা গ্রামে মজুরের কাজ করতে আসে ওই দম্পতি। সঙ্গে তাদের ছেলে দেবকেও নিয়ে আসে। ওই গ্রামেরই একটি বাড়িতে ভাড়া থাকে তারা। গতকাল থেকে ওই দম্পতির ছেলেকে দেখতে না পেয়ে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। ওই দম্পতির কাছে দেবের খোঁজ করতে থাকে। উত্তরে অসংগতি থাকায় চন্দ্রকোনা থানায় খবর দেয় স্থানীয়রা।
পুলিশ তদন্তে নেমে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে ওই দম্পতিকে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সোমবার সকালে ডেবরা থানার পান্না গ্রামে ছেলেকে ছেড়ে দিয়ে এসেছে ওই দম্পতি। এরপর ডেবরা থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ। ডেবরা থানার পুলিশ জানায় পান্না গ্রামে সোমবার থেকে এক নাবালককে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। স্থানীয়রা ওই নাবালককে আশ্রয় দেয়। এরপর চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ডেবরা থেকে গিয়ে ওই নাবালককে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এরপর ওই দম্পতি নিজেদের কাছে রাখতে না চাওয়ায় ঘাটাল চাইল্ড লাইনের হাতে ওই নাবালককে তুলে দেয় পুলিশ।
ছেলেকে অচেনা জায়গায় ছেড়ে আসার কারণ হিসেবে ওই দম্পতি বলে, "আমরা কখন কোন জায়গায় থাকি নিজেরাও জানি না। স্থায়ী বাসস্থান নেই। মজুরের কাজ করে কোনওরকমে পেট চলে দু'জনের। তাই ছেলেকে ওখানে ছেড়ে এসেছিলাম। চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ খবর পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। কিন্তু আমরা পুলিশকেই ছেলের জন্য কিছু ব্যবস্থা করতে বলেছি। পুলিশ হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। আমাদের সঙ্গে থাকলে না খেতে পেয়ে এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়াত।"
ঘাটাল চাইল্ড লাইনের টিম সদস্য অরুণ দোলুই বলেন, "পুলিশ ওই নাবালককে উদ্ধার করে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে। আমরা নিয়মানুযায়ী পদক্ষেপ নেব। আপাতত হোমে রাখা হবে। তবে, পুলিশের এই তৎপরতা প্রশংসনীয়।"